ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানি : সোয়া কোটি টাকা হারালেন অধ্যাপক
ডেস্ক রিপোর্টঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হয়ে এক অধ্যাপক পেনশনের সোয়া কোটি টাকা হারিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক সভায় ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিন্ডিকেট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের জুনে একসঙ্গে অনেকগুলো বই হাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন অধ্যাপক নুরুল ইসলাম। এ সময় নিজের বার্ধক্যের কথা বলে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের এক ছাত্রীকে বইগুলো তার কক্ষে পৌঁছে দিতে বলেন।
ওই ছাত্রী বইগুলো নিয়ে তার কক্ষে প্রবেশ করলে ওই শিক্ষক কক্ষের দরজা লাগিয়ে দিয়ে তার শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করেন। পরে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন।
গত বছরের ২৪ জুন অধ্যাপক নুরুল ইসলামের এলপিআরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩০ জুনের সিন্ডিকেট সভায় তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়।
এছাড়াও সভায় ঘটনার বিস্তারিত তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ওই বছরের ৩১ আগস্টের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। পরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনা সত্যতা পাওয়ার দাবি করে শিক্ষক নুরুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়। এই সুপারিশের ভিত্তিতে গত সোমবারের সিন্ডিকেট সভায় তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। এ সিদ্ধান্তের ফলে ওই শিক্ষক অবসর গ্রহণের পর আর্থিক সকল সুযোগ-সুবিধা হারাবেন। এতে তিনি প্রায় সোয়া কোটি টাকা হতে বঞ্চিত হলেন।
তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের এক ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ঘটনা তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাই। পরে কমিটি ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। সুপারিশ অনুযায়ী সিন্ডিকেটের সভা স্থায়ীভাবে ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করে।’
বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্তের ফলে ওই শিক্ষক বর্তমান বেতন স্কেল অনুযায়ী এক থেকে দেড় কোটি পেনশনের টাকা হারাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোসাম্মাৎ নীলিমা আকতার জানান, ‘ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়। সেই অনুযায়ী সিন্ডিকেট তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে ভৎর্সনা করা হয়।’