সিসিকের কাজে অনিয়ম,সোজা রাস্তার বাঁকা ড্রেন-কোটি টাকার ইট উধাও!
ডেস্ক রিপোর্ট :: দৈর্ঘ্যে ২৫ ফুট রাস্তা। রাস্তাটির সংস্কার ও ড্রেন নির্মাণকাজ চলছে। স্ক্যাচ ম্যাপে রাস্তাটি সোজা সামনে গেছে। অথচ এই সোজা রাস্তার বাঁকা ড্রেনের খাল কাটা হয়েছে! উদ্দেশ্য, রাস্তার ওপর চলে আসা একজনের দোকানের বারান্দা বাঁচানো। এতে সরু হয়েছে জনসাধারণের চলার পথ। একই সঙ্গে এই রাস্তার ড্রেন খুঁড়ে পাওয়া প্রায় এক কোটি ইট উধাও হয়েছে। তিনজন প্রকৌশলী ঘুষ গ্রহণে এই অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এই অনিয়ম হয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) আওতাধীন নবাবরোড-কলাপাড়া রাস্তার ড্রেনেজ সংস্কার প্রকল্পের কাজে।
সরেজমিনে জানা দেখা গেছে, নবাবরোড-কলাপাড়া ৮ কিলোমিটার রাস্তার প্রকল্পের কাজ চলছে। রাস্তার দুপাশে ড্রেন খুঁড়ে ইট বের করা হচ্ছে। ইটগুলো জড়ো করে রাখা হয়েছিল ড্রেনের পাশে। কিন্তু দুটি মিনি ট্রাকে উঠিয়ে ইট সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যদিও বলা হচ্ছে সিসিকের ভবনে যাচ্ছে ইট। কিন্তু বাস্তবে সেখানে কোনো ইট যাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এই কাজের ঠিকাদারির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন এক কাউন্সিলর । স্থানীয়রা জানান, তার বাড়িতেই ইট চলে গেছে।
জানতে চাইলে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিকন্দর আলী জানান, তিনি ইট সরাননি। কে বা কারা ইট নিয়ে গেছে, তিনি জানেন না।
কলাপাড়া উজ্জ্বল কেইনের সামনে এসে রাস্তাটি সরু হয়ে গেছে। ড্রেন গেছে বেঁকে। এখানে ওই দোকানটি বাঁচানোর জন্যই সিসিকের এই রাস্তা সরু করা হচ্ছে। স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দোকানটি ঠিকাদার সোহেল আহমদের। তার দোকান বাঁচাতেই এই ড্রেন বাঁকা করে রাস্তা ছোট করা হয়েছে।
ওই দোকানের সামনে গিয়ে দেখা গেল, বাস্তবে রাস্তাটি ২৫ ফুট প্রশস্ত। এখানে ৩ ফুট রাস্তা কমিয়ে আনা হয়েছে। এভাবে ওই দোকানের সামনে ৭০ ফুট রাস্তার ড্রেনে বেঁকে ছোট হয়ে গেছে।
সিসিক সূত্র জানায়, এসডিসিএসপি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নবাবরোড-কলাপাড়া সড়কের সংস্কারের কাজ চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা জানান, সোহেল ঠিকাদার হওয়ায় ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে এই অনিয়ম করিয়েছেন। এলাকার পক্ষ থেকে সিসিক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। একটি টিম এসে পরিদর্শন করেছেন। দোকান ভাঙার জন্য ওই বারান্দার দেয়ালে একটি লাল চিহ্ন এঁকেও গেছেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এখনো ওই দেয়ালটি ভাঙা হচ্ছে না। দুজন প্রকৌশলী এই অনিয়মে জড়িত। তারা হলেন, সিসিকের প্রকৌশলী রাকু ও আলী আকবর। তাদের সঙ্গে সাব ঠিকাদাররাও জড়িত আছেন।
জানতে চাইলে সিসিকের প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, রাস্তাটি প্রথমে বাঁকা হলে এলাকার লোকজন আপত্তি তুলেন। পরে সিসিকের একটি টিম সেখানে পরিদর্শন করে দোকানের বারান্দা ভাঙার জন্য লাল দাগ দিয়ে এসেছে।
এ বিষয়ে জানতে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী এনামুল হাবিব ও প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।