লোকসংগীত আধুনিকীকরণের বিরুদ্ধে নন লাভলী দেব

received_1047602845302009স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের সংগীতাঙ্গনে লাভলী দেব অত্যন্ত জনপ্রিয় শিল্পী। লোকসংগীতে তিনি তারকাতুল্য। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি একটি বা দুটি গান গেলে দর্শক-শ্রোতাদের মন ভরে না। ‘ওয়ান মোর’ বলে শ্রোতাদের অনুরোধে তাকে আরও কয়েকটি গান গাইতে হয়।
গুণিশিল্পী লাভলী দেবের পৈতৃক নিবাস হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে। তাঁর পিতা শৈলেন্দ্র চন্দ্র রায় ছিলেন চা-বাগান কর্মকর্তা। তিনি কীর্তন গেতেন। সংগীতের প্রতি বাবার অনুরাগের ফলে লাভলী দেবও গানের প্রতি ঝুঁকে পড়েন। বাবার কাছে গান শিখতেন। সংগীতের প্রতি মেয়ের আগ্রহ দেখে বাবা তাকে নিয়ে যান হবিগঞ্জে সংগীত শিক্ষার প্রতিষ্ঠান ‘সুরবিতান’-এ। সেখানে ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে গান শেখেন লাভলী দেব। সব ধরনের গানেরই তালিম নেন।
১৯৮২-৮৩ সালে লোকসংগীতে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার লাভ করেন লাভলী দেব। এই পুরস্কারপ্রাপ্তি তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। লোকসংগীত শিল্পী হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
এক প্রশ্নের জবাবে লাভলী দেব বলেন, বিচ্ছেদমূলক গান গাইতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। লালনগীতি, বাউলগান, ভাটিয়ালি এবং ভাওয়াইয়া গানও তিনি গেয়ে থাকেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে লালনগীতির তালিকাভুক্ত শিল্পী।
অনেক সংগীতজ্ঞের কাছে গান শিখেছেন বলে জানালেন লাভলী। এঁদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলেন, ফুল মোহাম্মদ খান, রামকানাই দাশ, বিদিত লাল দাস ও আলী আকবর খান। বললেন, যেখানেই সংগীতের কোনো ওস্তাদের কথা জানতে পারেন, তাঁর কাছে ছুটে যান। গান শেখেন।
দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সংগঠন লাভলী দেবকে পুরস্কৃত করেছে। ২০০২ ও ২০০৩ সালে কলকাতায় নির্মলেন্দু চৌধুরী লোক উৎসবে তিনি গান পরিবেশন করেন। তাঁর গান শ্রোতারা সম্মোহিতের মতো শোনেন। দুবারই তিনি পুরস্কার পেয়েছেন।
অপর প্রশ্নের জবাবে লাভলী বলেন, তিনি ব্যান্ড গানের ও লোক সংগীতকে আধুনিকীকরণের বিরুদ্ধে নন। তবে, মূল গানকে বিকৃত করে নয়; পরিশীলিত করে পরিবেশন করা উচিত। লাভলী দেব বললেন, বিয়ের পর স্বামী দীপক দেবের অপার উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় এ পর্যন্ত এসেছেন। একই সঙ্গে মা স্মৃতিকণা রায় এবং শাশুড়ি পারুল বালা দেবের উৎসাহ-অনুপ্রেরণার কথাও উল্লেখ করেন। লাভলী দেব দুই মেয়ের গর্বিত জননী। প্রথম কন্যা দীপিকা দে দীপা, শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে ¯œাতকোত্তর করছে। তার স্বামী ধ্রুব পুরকায়স্থ পেশায় চিকিৎসক। দ্বিতীয় কন্যা দেব মিতা মেট্রাপলিটন ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ’র শিক্ষার্থী। তার স্বামী সিদ্ধার্থ পুরকায়স্থ চার্টার্ড অ্যাকউন্টেন্ট।