নগরীতে মোটরবাইক চোরদের তিন চক্র-সিসি ক্যামেরাও ভয় পায় না ওরা( দেখুন ভিডিও সহ)
ডেস্ক রিপোর্ট :: দেখলে মনে হবে কোনো ভদ্রলোক। কিন্তু বাস্তবে মোটরসাইকেল চোর চক্রের লিডার। পুলিশ যেভাবে রেকি (পরখ) করে, তারাও কোনো পার্কিং প্লেস থেকে মোটরসাইকেল চুরি করতে হলে আগে রেকি করে। এই ভদ্র লিডাররাই রেকি করে চলে যায়। পরে টার্গেট পার্কিং প্লেসে চুরি করতে আসে আরেকজন। কিন্তু যে সাইকেলটি চুরি করবে, তার পাশেই নিজের সাইকেলটি রাখে। পরে এসে কৌশলে দ্রুত লক ভেঙে মোটরবাইকটি নিয়ে যায় ওই ভদ্রবেশী চোর। পরে আরেকজন ভদ্রবেশী এসে চুরিকাজে ব্যবহৃত সাইকেলটি নিয়ে পার্কিং থেকে বের হয়ে যাবে। ওরা জানে, চুরির দৃশ্যটি সিসি ক্যামেরায় আছে। তবু ভয় পায় না ওরা। কারণ, তারা এ-ও জানে- ওই ফুটেজ মনিটরিং করার কোনো লোক নেই। ভিডিওটিও অস্পষ্ট। পুলিশ চোর শনাক্ত করতে পারবে না !
গত ১২ ফেব্রুয়ারি সিলেট সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী দেবব্রত দাসের মোটরসাইকেল (সিলেট-হ-১৩-৭০১০) চুরির ঘটনা এটি। সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে ধরা পড়ে চুরির দৃশ্য। চোর কীভাবে সাইকেলটি নিচ্ছে সবই ধরা পড়েছে ওই ফুটেজে। কিন্তু চোর শনাক্ত করতে পারছেন না পুলিশের এসআই অনুপ।
দেব্রবত জানান, তার মোটরসাইকেল চুরির ঘটনার পর জিডি করি। তার পর একটি মামলা করেছি। সঙ্গে সিসি ক্যামেরার ফুটজে দিয়েছি। কিন্তু চোর ধরার কোনো খবর নেই। মোটরসাইকেল পাওয়া তো দূরের কথা।
সিসিক সূত্র জানায়, সেখানে পার্কিং প্লেসে নিয়মিত মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে। সিসি ক্যামেরায়ও ধরা পড়ছে। কিন্তু নি¤œমানের ক্যামেরা হওয়ায় চোরের চেহারা চেনা যাচ্ছে না। বড় কথা হচ্ছে, ওই ক্যামেরা দেখার জন্য কোনো লোক নেই। এর ফলে সেখানে চুরি দিন দিন বাড়ছে।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানান, এ বিষয়ে ফুটেজ দিয়ে পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট কোতোয়ালি থানার এসআই অনুপ জানান, ফুটেজে চোরকে চেনা যাচ্ছে না। অন্য একটি চুরির মামলায় একজন ধরা পড়েছে। তার নাম তারেক। তার বাড়ি ছাতকের গোবিন্দগঞ্জে। গত রোববার তার রিমান্ডের আবেদন করেছি। তার কাছ থেকে তথ্য উদ্ধার করে সিলেটের বাকি দুটি গ্রুপ শনাক্ত করা ও চোরাই মোটরবাইক উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
ঢাকার ধোলাইখালের একটি সূত্র জানায়, সিলেটে এই মুহূর্তে তিনটি মোটরবাইক চোর চক্র আছে। এই চোরেরা সিলেটের বিভিন্ন পার্কিং প্লেস থেকে অহরহ মোটরসাইকেল চুরি করছে। চুরির পর তারা একটি মোটরসাইকেল বস্তায় ভরতে সময় নেয় মাত্র ১০ মিনিট! পরে সাইকেলটি ধোলাইখালে নিয়ে বেচে দেয়। এই চোর চক্রের একজন তারেক। সে ধরা পড়েছে। বাকি দুজন দিব্যি ঘুরছে। তারা হচ্ছেন, পাঠানটুলার দিলওয়ার ও দক্ষিণ সুরমার সাইদুল। এদের ধরার জন্যও পুলিশ ধোলাইখাল পর্যন্ত গিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, একসময় ঢাকার ধোলাইখালে সবচেয়ে বেশি চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি করতে সিলেট থেকে আসত বরইকান্দির ইমন ও উপশহরের বিশ্বজিৎ। বিশ্বজিৎ মারা গেছে। আর ইমনের খোঁজ পাচ্ছে না পুলিশ।
সিলেট মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-কমিশনার তৌহিদুল হক বলেন, আমরা ৩-৪ টি চুরির ফুটেজ নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, শিগগিরই মোটরসাইকেল চোর চক্র ধরতে পারব। এর মধ্যে সিসিকের দেবব্রতের মোটরসাইকেল চোরকেও ধরতে সোর্স নিয়োগ করা হয়েছে।