ছয়টি রুটের মধ্যে চলছে মাত্র ২ টিতে বন্ধ হওয়ার পথে টাউনবাস

IMGP4558নাবিদ হাসান :: সিলেট শহর ও শহরতলির যাত্রীদের  সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০০৭ সালে চালু করা হয় টাউনবাস সার্ভিস। শুরুতে শহরবাসী ও শহরতলির মানুষজনের মন জয় করলেও বর্তমানে টাউনবাস কাক্সিক্ষত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ এই বাস সার্ভিসের মান বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছে না। উল্টো দিন থেকে দিন টাউনবাস সার্ভিসের মান হ্রাসের পাশাপাশি বাসের সংখ্যাও কমছে। বিভিন্ন রুটে টাউনবাসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এসব রুটে যাত্রীদের তুলনায় বাসের সংখ্যা কম। কয়েকটি রুটে টাউনবাসের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সার্ভিস শুরুর সময় যত বাস ছিল, সেই সংখ্যা বর্তমানে প্রায় অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। যাত্রীরা টাউনবাস সার্ভিসের মান ও সংখ্যা আরোও বাড়ানোর জোর দাবি জানিয়েছেন।
আট বছর আগে ৩৫টি বাস নিয়ে যাত্রা শুরু করে সিলেট টাউনবাস সার্ভিস। পরবর্তী সময়ে টাউন বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করার কথা থাকলেও তা আর করা হয়নি তবে বাসের সংখ্যা কমেছে । ৩৫ টি বাসের সংখ্যা এসে ঠেকেছে ১৪টিতে। যাত্রার শুরুতে ৬টি রুটে চলাচল করলেও বর্তমানে মাত্র দুটি রুটে চলাচল করছে টাউনবাস সার্ভিস। তাছাড়া মহিলা ও প্রতিবন্ধীদের জন্যে আলাদা সিটের ব্যবস্থা থাকলেও তারা তা ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছেন না। বাসে বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা থাকলেও তা অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে টাউনবাসে যাত্রীসেবার মান দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। অন্যান্য লোকাল বাসের তুলনায় দিন দিন নিম্নমুখী হচ্ছে টাউনবাস সার্ভিসের মান। আর এসব কারণেই কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বর্তমানে মাত্র ১৪টি বাস রয়েছে। যা নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে হেতিমগঞ্জ ও হাজীগঞ্জে চলাচল করছে। অথচ যাত্রার শুরতে  টুকের বাজার, মোগলাবাজার, হেতিমগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, বটেশ্বর এলাকায় একযোগে চালু হয়েছিল। টাউনবাস সার্ভিস দ্রুতই জণসাধারণের প্রিয় বাহনে পরিণত হয়ে ওঠে। বর্তমানে বাসের স্বল্পতার কারণে  কোর্ট পয়েন্টে বাসের জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদেরকে। এতে নানা দুর্ভোগ ও হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীরা। টাউনবাস সার্ভিস চালু হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি স্বল্প বেতনভোগী কর্মচারী, মধ্যবিত্ত, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের লোকজন মনে করে ছিলেন, কম ভাড়ায় তারা টাউন বাসে যাতায়াত করবেন। কিন্তু তাদের ধারণা পাল্টে গেছে। অন্যান্য যানবাহনের মতো টাউনবাসেও বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।
টাউনবাস সেবার মান কমে যাওয়ার কারণ অতিরিক্ত সিএনজি অটোরিকশা, লেগুনা টেম্পো থাকায় যাত্রীরা বাসের অপেক্ষায় বসে থাকেন না। তাই পর্যাপ্ত যাত্রী পায় না টাউনবাস সার্ভিস। এজন্য প্রায় প্রতিদিনই লোকসানের কবলে পড়তে হচ্ছে এ বাস সার্ভিসটির কর্তৃপক্ষের। আগামীতে নতুন বাস নামানো হবে না বলে মালিক পক্ষ জানিয়েছে। এ অবস্থায় জরাজীর্ণ যে কয়েকটি বাস চলাচল করছে, সেগুলো বন্ধ হয়ে গেলে নগরীতে টাউনবাস সার্ভিস পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।
সিলেট টাউনবাস মালিক কমিটির সভাপতি জিয়াউল কবির (পলাশ) সবুজ সিলেটকে বলেন, বাস সেবার মান কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণ বাস নেই। মাত্র ১৪টি বাস রয়েছে। যা দিয়ে পুরো শহরে সার্ভিস দেওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া অর্থের অভাবে ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাবে আমাদেও ইচ্ছা থাকা  সত্ত্বেও নতুন বাস নামাতে পারছি না।