ধর্মপাশায় দুই শিক্ষিকাকে পেটালেন আ.লীগ নেতার ভাই
রাজু ভুঁইয়া, ধর্মপাশা :: সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতার ভাই তাই শিক্ষিকাকে পেঠালেন। দুই শিক্ষিকাকে পিঠিয়ে তিনি গুরুতর জখম করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনীন্দ্র চন্দ্র তালুকদারের ছোট ভাই সর্বানন্দ তালুকদার এলাকায় বিরাট প্রভাবশালী বলে পরিচিত। সর্বানন্দ স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি তাঁর দলবল নিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা দিপালী রাণী দাসকে পাঠদান বন্ধ করে বিদ্যালয় থেকে চলে যেতে বলেন। সভাপতির কথায় কান না দিয়ে পাঠদান চালু রাখায় ক্ষ্যাপে যান সভাপতি সর্বানন্দ তালুকদার।
সভাপতির নির্দেশে তাঁর (সভাপতি) সাথে থাকা বিমল, কমল, সন্তোষ, লিটন, রেন্টুসহ সবাই শিক্ষিকার ওপর চড়াও হয়। শুরু হয় এলেপাতাড়ি কিল, ঘুষি, পেটে লাথি। পাশের কক্ষেই পাঠদানে ব্যস্ত ছিলেন সহকারী শিক্ষিকা মনি রাণী তালুকদার। দিপালীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তিনি। সভাপতির লোকজন তাঁকেও বেধরক মারধর করে। এ সময় মনি রাণী তালুকাদারের দুই হাতে ও পিঠে কলম দিয়ে আঘাত করা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে। এ সময় সভাপতির লোকজন শিক্ষিকা হাজিরা খাতা নিয়ে যায় এবং শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা ছিড়ে ফেলে।
আহত দুইজন শিক্ষিকা ওইদিন দুপুর আড়াইটায় ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাময়িক চিকিৎসা নিয়েছেন। বিকেল চারটায় এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রধান শিক্ষিকা দিপালী রাণী দাস।
এব্যাপারে দিপালী রাণী দাস বলেন, বিদ্যালয়ের বিস্কুট বিতরণ, বিদ্যালয় উন্নয়ন কাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সভাপতির সাথে মতবিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয়ে পাঠদান চলাকালে সভাপতি আমাকে বিদ্যালয়ে থেকে চলে যেতে বলেন। আমি চলে না যাওয়ায় সভাপতি ও তাঁর লোকজন আমাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে।
সহকারি শিক্ষিকা মনি রাণী তালুকদার বলেন, প্রধান শিক্ষকের ওপর যখন আক্রমণ হয় তখন আমি ফেরাতে যাই। এ সময় সভাপতি ও তাঁর লোকজন আমাকেও মারধর করে। কলম দিয়ে আমার পিঠে ও দুই হাতে আঘাত করা হয়।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সর্বানন্দ তালুকদার তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বা আমার লোকজন কাউকে মারধর করিনি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রোকেয়া আক্তার খাতুন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ্যা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হযরত আলী বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।