ফাইনালের টিকিট পেতে ৩৬ ঘণ্টা আগেই লাইনে
ডেস্ক রিপোর্ট :: আগামী রোববার এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। আর এ ফাইনাল দেখার জন্য দু’দিন আগে থেকেই টিকিট নামক সোনার হরিণ পেতে যুদ্ধে নেমেছে বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তরা।
ঢাকার ইউসিবি ব্যাংকের মোট পাঁচটি শাখা থেকে টিকিট দেয়া হলেও মিরপুর শাখা থাকে সরাসরি ক্যাশ টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে পারবেন দর্শকরা। আগামীকাল (শনিবার) সকাল দশটা থেকে ছাড়া হবে ফাইনালের টিকিট; কিন্তু এ টিকিট সংগ্রহের জন্য দুই দিন আগে থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন ভক্তরা।
ব্যাংক খোলার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা আগেই মিরপুর ১০ নম্বরে অবস্থিত ইউসিবি ব্যাংকের এ শাখায় জড়ো হতে থাকেন ক্রিকেটভক্তরা। ব্যাংকের গেট থেকে টিকিট প্রত্যাশীদের লাইন গড়িয়ে গেছে মাদ্রাসা গলি পর্যন্ত। খবরের কাগজ বিছিয়ে গল্প-আড্ডা আর তাস খেলে সময় পার করছেন তারা।
রাজধানীর কমলাপুর থেকে টিকিটের জন্য এসেছেন তারেক। জানালেন আগের ম্যাচে কালোবাজারিদের কাছ থেকে চড়া দামে টিকিট কিনেছেন। তাই আজ সকালে এখানে এসে লাইন দিয়েছেন টিকিটের প্রত্যাশায়। ঢাকার শান্তিবাগ থেকে এসেছেন পলক। টিকিট কিনতে এতো আগে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফাইনালে আবার কবে বাংলাদেশ উঠবে। তাই এবারেরটা সামনে পেয়ে না দেখতে পারলে খুব কষ্ট পাবো। তাই এটা কোনো মতেই মিস করতে চাই না। আমি সকাল ছয়টা থেকে আসছি। অনেকেই চারটা থেকেও আসছে।
শুধু ঢাকাই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন অনেকেই। কুষ্টিয়া থেকে এসেছেন বিবিএর ছাত্র এম এ তরুণ। এতো আগেই কেন এসেছেন জানতে চাইলে তিনি জাগোনিউজকে বলেন, ‘জানি এ ধরনের কিছু একটা হবে। আর বাংলাদেশকে আমরা খুবই ভালবাসি। ষোলো কোটি মানুষের প্রত্যাশা থাকবে কাল বাংলাদেশ জিতবে। তাই আমরা চলে এসেছি। আমরা যদি মাঠে গিয়ে উৎসাহ না দেই, তাহলে ম্যাচ জিতবো কি করে? এটা অনশনের মত, যে কোন মূল্যে টিকিট চাই।
কিশোরগঞ্জ থেকে এসেছেন একই এলাকার পাঁচজন। আকাশ, মেহেদী, সাকিন, নবীন ও শ্রাবণ- এরা সবাই ছাত্র। একই প্রশ্নে আকাশ বলেন, ‘আমরা সবাই কিশোরগঞ্জ থেকে আসছি। এরা সবাই আমার এলাকার ছোট ভাই। আজকে সকাল ৪টায় এখানে আমি আসছি। এসেই দেখি দুই হাজার জনের মত লোক সামনে। তখন আসলে কোথায় থাকতাম। তারপরও টিকিট পাবো কি না জানিনা। সকাল হলে বোঝা যাবে কি অবস্থা।’
রাতে কি করবেন জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘রাতে আমরা সবাই এখানেই থাকবো, খেয়ে না খেয়ে এখানেই থাকবো। তবু আমাদের টিকিট চাই। যেহেতু ভারত-বাংলাদেশ। আবার পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে। এ ম্যাচের মত আনন্দ কোথায় পাবো। আর তার জন্য একটু কষ্ট তো করতেই হবে।’
টিকিটের আকাশচুম্বী চাহিদার কারণে এখানে ইউসিবি ব্যাংকের সামনে শুক্রবার মোতায়েন করা হয়েছে ২৫জন পুলিশ সদস্য। অনেকেই লাইনে বিশৃঙ্খলভাবে ঢোকার চেষ্টা করলে দর্শকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে মৃদু লাঠিচার্জও করতে হয় তাদের।