শ্রীমঙ্গলে গোপন ভোজ্য তেলের কারখানার সন্ধান!
একটি কারখানায় চলছে ৭ টি ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল প্রকিয়াজাতকরণ
জীবন পাল, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটি কারখানায় অবৈধ ভাবে চলছে ভোজ্য তেলের তৈরির কাজ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোজ্য তেলের এ কারখানার অনুসন্ধান পায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত। (২৮ ফেব্রুয়ারী) রবিবার দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চারঘন্টাব্যাপী ওই কারখানায় এ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মালামাল উদ্ধার করে। অভিযান পরিচালনা অবস্থায় ঐ কারখানায় থাকা কারখানার ৫ শ্রমিককে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আটক করা হয়।
আটককৃত শ্রমিকরা হলো -সিলেটের ওসমানীনগর থানার শংকরসেনা গ্রামের জমির মিয়া’র ছেলে মো: রুমন মিয়া( ১৬), ভোলা জেলার কুতবা এলাকার মো: আহম্মদ আলীর ছেলে মো: আওলাদ হোসেন, ওসমানীনগর থানার শংকর পাশা গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে মো: সুমন মিয়া, একই এলাকার আ: সোবহানের ছেলে কবির আহমদ, শ্রীমঙ্গল বিষামনি এলাকার মো: উরফান মিয়ার ছেলে মো: আশিকুর রহমান।
পরে সন্ধ্যারদিকে কারখানার মালিক শহরতলীর রামনগর এলাকার মৃত শুধাংশু দত্তর ছেলে আনন্দ দত্তকে আটক করা হয়। শ্রীমঙ্গল শহরতলীর উত্তর উত্তরসুর এলাকায় ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং সংলগ্ন অবৈধ ভেজাল ভোজ্য তেল তৈরির ঐ কারখানায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শহীদুল হক এর নেতৃত্ব র্যাব, পুলিশের সমন্বয়ে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। এখন পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাইনবোর্ডবিহীন ১২ কক্ষের এই কারখানায় রয়েছে ৪ টি ইউনিট। যেখানে রয়েছে ভোজ্য তেল তৈরির সকল যন্ত্রাংশ। যা দিয়ে তৈরি করে করা হচ্ছে ভোজ্য তেল তৈরির কাজ। প্রতিটি কক্ষে তেলের খালি বোতলে ঠাসা ছিলো। রয়েছে বোতলের গায়ের উপরের লেভেল। লেভেলগুলো যে এক ব্র্যান্ডের তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামের লেভেল পড়ে থাকতে দেখা গেছে কক্ষগুলোতে।
যার মধ্যে রয়েছে, নুরজান, জাসমিন, ফুলকলি, শিওর সুপার ওয়েল, শক্তি সুপার ওয়েল, উটমার্কা ও সূর্যমুখি ওয়েল।
তাছাড়া প্রতিটি কক্ষে খালি বোতল, লেভেল ও খোলা ড্রামের মধ্যে খোলা তেলে ঠাসা রয়েছে। যেগুলো সয়াবিন তেল প্রক্রিয়াজাত করণ থেকে বাজারজাত করণের উপকরন হিসেবে কাজে লেগে থাকে। তেল প্রক্রিয়াজাতরণ শেষে তেল গুলো যে শ্রীমঙ্গল উপজেলার মধ্যে বাজারজাতকরণ করা হয় তা কিন্তু নয়। শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাড়াও প্রস্তুতকৃত সয়াবিন তেল শ্রীমঙ্গলের বাইরেও যে বাজারজাতকরণ করা হয় তার প্রমান পাওয়া যায় অফিস কক্ষে থাকা প্রস্তুতকৃত পণ্যের অর্ডার ও ক্রেতাদের রশিদ থেকে।
১২টি কক্ষের একটি কক্ষে অফিস কক্ষ থাকায় সেখানে বেশ কয়েকটি রেজিষ্টার খাতা খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে দোকান সহ পণ্য অর্ডারকারীদের নাম লিপিবদ্ধ থাকতে দেখা যায়।
এই রিপোর্ট লিখা (সন্ধ্যা ৬টা)পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত ছিলো বলে জানিয়েছেন সহকারী কমিশনার(ভূমি)মো.নূরুল হুদা। তিনি জানান,জব্দকৃত সকল মালামাল শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে। পরে আটককৃতদের জেল জরিমানা করা হতে পারে।