লাউয়াছড়া উদ্যানকে পার্ক বানিয়ে ফেলা হয়েছে : সিলেটে রিজওয়ানা হাসান
ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, লাউয়াছড়া উদ্যানকে এখন পার্ক করে ফেলা হয়েছে। এখন লাউয়াছড়ায় ঢুকলে মনে হয় রমনা পার্কে ঢুকেছি। বনের গাম্ভীর্য ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। অবাদে গাছ কাটা হচ্ছে। এর প্রভাব যেমন বন্য প্রাণীর উপর পড়ছে তেমনি সংস্কৃতির উপরও পড়ছে।
সোমবার বিকেলে সিলেট মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সুলেমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজোয়ানা। রাতাগুল জলারবন ও সিলেট অঞ্চলের অন্যান্য জলারবন নিয়ে সুশীল সমাজের উদ্যোগ বিষয়ে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ পরিকবেশ আন্দোলন (বাপা) ও পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে।
এতে রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের যে বন আইন আছে তা বন সুরক্ষার জন্য, বন থেকে রাজস্ব আরোহনের জন্য।এই আইন সংশোধন করেত হেব। এছাড়া বৃক্ষ সংরক্ষনের জন্য আমাদের কোনো আইন নেই।
রিজওয়ানা বলেন, সিলেটের বনের অবস্থা খারাপ। তবে এতোটা খারাপ নয় যে, তা সুরক্ষা করা যাবে না। এখনই উদ্যোগী হলে সিলেটের বন সুরক্ষা সম্ভব।
তিনি বলেন, রাতাগুল নিয়ে আমরা তো কাজ করছিই এরপাশাপাশি এখন সিলেটের তিনটি বন লাউয়াছড়া, সাতছড়ি ও রেমাকালেঙ্গা নিয়ে কাজ শুরু করছি। এগুলো সুরক্ষার আমরা জনমত সৃষ্টির পাশাপাশি আদালতের শরনাপন্ন হবো।
রিজওয়ানা বলেন, সিলেটের অবৈধ স্টোন ক্রাশার মেশিনগুলোর বিরুদ্ধে আমরা মামলা করলে আদালত তা বন্ধের নির্দেশ দেন। এমনকি একটি স্টোন ক্রাশার জোন স্থাপনেরও নির্দেশ দেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। স্টোন ক্রাশার মেশিনের কারণে পরিবেশের ক্ষতি তো হচ্ছেই ধুলা ও শব্দে শিশুরা পর্যন্ত মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে।
বন রক্ষায় অতীতে বন বিভাগ অনেক প্রকল্প নিয়েছে উল্লেখ করে বেলা প্রধান বলেন, প্রকল্পগুলো যদি সফলই হতো তাহলে বনের পরিমান কমছে কেনো? তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময় দেশে বনবিভাগের পরিমান ছিলো মোট জমির ১৭ শতাংশ, অথচ এখন আছে মাত্র ৭ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য রাখেন বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম। কিম বলেন, আজ আমরা সিলেটের তথা বাংলােদেশের পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সিলেট বিভাগের বনাঞ্চল নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ও করণীয়সমূহ তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। বেলা ও বাপা সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমকে সাথে নিয়ে সিলেটের বন, বণ্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র রক্ষায় কাজ করতে উদ্যোগী হচ্ছে যার সফলতা নির্ভর করবে সিলেটের সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের অংশগ্রহণের মাধ্যমে। সিলেটের বন ও বণ্যপ্রাণী রক্ষায় বেলা ও বাপা ৬ মাসের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্ঠা রাশেদা কে চৌধুরী, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ উদ্দিন, পাখি বিশেষজ্ঞ রোনাল্ড হালদার, শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি সায়েন্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. নারায়ন সাহা, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন ও বাপা’র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল।