ফুলতলী অনুসারীদের বিরুদ্ধে কওমিপন্থীদের সংবাদ সম্মেলন
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি: শন্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিতসহ নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাহাছ’র ব্যবস্থা করা হলে ফুলতলীপন্থী ‘সুন্নি বেদাতিদের’ মুখোশ উন্মোচন ও তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে কওমি আলেমরা প্রস্তুত রয়েছেন- বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমনটি দাবি করেছেন কওমিপন্থী আলেমরা।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্বনাথ নতুন বাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা মুফতি রশীদ আহমদ স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাওলানা আব্দুর রহমান।
জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার বাগিচা বাজারে কওমিপন্থী ‘আল-বালাগ’ তাফসির কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই মাহফিলে নরসিংদী থেকে আসা আনোয়ার হোসেন চিশতী নামের এক মাওলানা মিলাদ ও ক্বিয়াম নিয়ে বয়ান পেশ করেন। স্থানীয় ফুলতলীপন্থীদের অভিযোগ বয়ানে তিনি হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে কটূক্তি করেছেন।
এ নিয়ে ফুলতলী ও কওমিপন্থীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে বিশ্বনাথের সালিশি ব্যক্তিগণ বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন। সোমবার কওমি আলেম-উলামাগণ এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সোমবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাওলানা আব্দুর রহমান আরও বলেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাগিচা বাজারে ‘আল-বালাগ তাফসিরুল কোরআন পরিষদ’র উদ্যোগে প্রদত্ত বক্তব্যকে বিকৃত করে মাহফিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা চলানো হয়। চাপের মুখে ‘আল-বালাগ তাফসির কমিটির সভাপতি আব্দুস সালিক ছালিক মিয়াকে দিয়ে ওই মাহফিলে ১৯ ফেব্রুয়ারি বাগিচা বাজারে বাহাছ অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দেওয়ানো হয়। পরে তাফসির মাহফিলের আয়োজকদের পক্ষ থেকে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের কাছে বাহাছ’র অনুমতি চাওয়া হলে পুলিশ প্রশাসন বাহাছ’র অনুমতি দেননি।
পরবর্তিতে সুন্নিদের পক্ষ থেকে বাহাছ’র দাওয়াত সম্বলিত লিফলেট দেখে স্থানীয় কওমি আলেমরা ‘ঈমান ও আক্বিদা বিনষ্টকারী ওই নামধারী সুন্নিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভার আহবান করা হয়। কওমি উলামাদের পক্ষে মাওলানা মুফতি রশীদ আহমদ ও মাওলানা আনহার উদ্দিন ১৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বাগিচা বাজার সংলগ্ন মাঠে এ প্রতিবাদ সভার ডাক দেন।
১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ময়নাগঞ্জ বাজারে প্রতিবাদ সভা সফলের লক্ষে ধর্মপ্রাণ এলাকাবাসীকে নিয়ে পরামর্শ সভা করা হয়। পরামর্শ সভা চলাকালে সকাল ১১টার দিকে সিলেট জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী, বিশ্বনাথ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আলহাজ্ব পংকি খান, সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার, থানার ওসি আব্দুল হাই উপস্থিত হন। এসময় তারা বলেন, শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আপনারা বাগিচা বাজারে যাবেন না।
সেখানে কোন বাহাছ নাই। তাদেরকে (ফুলতলীপন্থী) শুধু মিলাদ মাহফিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের আশ্বাসে উলামায়ে কেরামগণ সেখানে আর যাননি।
কিন্তু পরদিন ২০ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় ‘‘বিশ্বনাথ বাগিচা বাজারে মিলাদ ও ক্বিয়াম নিয়ে ‘বাহাছ’, শেষ পর্যন্ত দেখা মিলেনি ওয়াহাবিদের’’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা নুরুল ইসলাম মউজপুরী, মাওলানা রশীদ আহমদ, মাওলানা ফয়জুর রহমান, মাওলানা নুরুল হক, মাওলানা খবীর উদ্দিন, মাওলানা আনহার উদ্দিন, মাওলানা শহীদুল ইসলাম, মাওলানা আতিকুর রহমান, মাওলানা এম আশরাফুল হক, মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা হাফিজ উদ্দিন, মাওলানা আবু রাউফি চৌধুরী, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মুফতি জয়নাল আবেদিন, মাওলানা মনসুর আহমদ, মাওলানা মোশাহিদ, মাওলানা রাসেল আহমদ, ‘আল-বালাগ তাফসিরুল কোরআন পরিষদ’র সভাপতি আব্দুস ছালিকসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।