হাবিব হত্যার ১ মাস: ‘রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে’ গ্রেফতার হচ্ছে না খুনিরা
ডেস্ক রিপোর্টঃ ১৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ বিরোধে খুন হয়েছিলেন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র কাজী হাবিব। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগেরই ১১ নেতাকর্মীকে আসামী করে মামলা করা হয়েছিলো। হাবিব হত্যার সিসিটিভি ফুটেজও পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তবু একমাস পেরিয়ে গেলেও এই হত্যা মামলার একজন আসামীকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে হাবিব হত্যাকারীরা আদৌ গ্রেফতার হবে কী না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ‘রাজনৈতিক প্রশ্রয়ের’ কারণে কাজী হাবিবের খুনিরা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুহেল আহমদ বলেন, আমরা আসামীদের ধরতে সবজায়গায় অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাদের খুঁজে পাচ্ছি না।
ওসি এমন কথা বললেও আসামীরা নগরীতে প্রকাশ্যেই ঘোরাফেরা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি সম্প্রতি নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে ঘটা করে বিয়ে করেন এই হত্যা মামলার আসামী নাহিদ। তার বিয়ের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতাও যোগ দেন।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একাধিক ছাত্রলীগ কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাজনৈতিক প্রশ্রয়ের কারণেই হাবিবের খুনিরা গ্রেফতার হচ্ছে না। সিলেট আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা এই খুনিদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবারও হাবিব হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল করেছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।
হাবিব খুন হওয়ার পরদিন সিলেটে গণমাধ্যমের কাছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন বলেছিলেন, হাবিব ছাত্রলীগ কর্মী। তাঁর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি দুপুরে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী কাজি হাবিবুর রহমান হাবিবের উপর হামলা করে নিজ দলের নেতাকর্মীরা। গ্রুপ বদলের কারণেই ক্যাম্পাসের সামনে তার উপর হামলা করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ওই দিনই নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাবিবের মৃত্যু হয়।
পরদিন দুপুরে নিহত হাবিবের ভাই কাজি জাকির হোসেন বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ১১জনকে আসামি করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগ নেতা হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ইলিয়াছ আহমদ পুনম, ইমরান খান, সুবায়ের আহমদ সুহেল, ময়নুল ইসলাম রুমেল, তুহিন আহমদ, নাহিদ, আওয়াল আহমদ সোহান, আশিক, সায়মন ও নয়ন।
এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও ১৫ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করে।