কমলগঞ্জের ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ উন্নয়নে বাঁধা : সিদ্ধান্ত ছাড়া বিজিবি বিএসএফ বৈঠক সমাপ্ত
বিশ্বজিৎ রায়,কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নে মখাবিল এলাকায় বিএসএফের বাঁধায় ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে। দুই মাস চেষ্টার পর টানা ৪ ঘন্টার বিজিবি-বিএসএফ ও দুই দেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীদের বৈঠক কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) কমলগঞ্জ উপজেলার ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী ন্যাশনাল টি কোম্পানীর মালিকানাধীন চাম্পারায় চা বাগানে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিজিবি-বিএসএফ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শ্রীমঙ্গলস্থ ৪৬ নং বিজিবি ব্যাটেলিয়ন কমান্ডারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের ত্রিপুরার কমলপুর থেকে ধলাই নদী ইসলামপুর ইউনিয়নের মখাবিল এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। খর¯্রােতা ধলাই নদের পানির আঘাতে প্রতি বছর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ক্রমশ বাঁধটি সরু হয়ে ৩টি গ্রামের ৫ হাজার মানুষ হুমুকির মুখে পড়েছে। বন্যা হলে এ ৩টি গ্রামের বসত বাড়ি ও ফসলি জমি তলিয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড মখাবিলে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহন করলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ ও ভারতীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (ওয়াটার রিসোর্স বোর্ড)-এর আপত্তির কারণে কাজটি বন্ধ রয়েছে। ৪৬ নং বিজিবি ব্যাটেলিয়ন কমান্ডার ল্যা: কর্ণেল নাসির উদ্দীন বলেন, বর্ষা শুরুর আগেই মখাবিলের প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করতে তিনি দুই দেশের যৌথ বৈঠকের জন্য গত ২ মাস ধরে চেষ্টা করছিলেন। ২ মাসের চেষ্টায় ৪ ফের্রুয়ারী বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় বিএসএফ ২৭ ব্যাটেলিয়ন অধিনায়ক গুর পাল সিং ও ত্রিপুরার ওয়াটার রিসোর্স বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী তপন কুমার লোতের নেতৃত্বে ভারতীয় একটি প্রতিনিধি দল কুরমা চেকপোষ্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। পরে চাম্পরায় চা বাগান ব্যবস্থাপক বাংলোয় উভয় দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃতৃ¦ দেন ৪৬ বিজিবি ব্যাটেলিয়ন কমান্ডার ল্যা: কর্ণেল নাসির উদ্দীন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাই। টানা ৪ ঘন্টার বৈঠকেও মখাবিল এলাকায় ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ উন্নয়ন কাজের আপত্তি প্রত্যাহার করেনি ভারতীয়রা।
ল্যা: কর্ণেল নাসির উদ্দীন আরও বলেন, ত্রিপুরার ওয়াটার রিসোর্স বোর্ড প্রধান প্রকৌশলী তপন কুমার লোত বাংলাদেশের রামগড় সীমান্তের ওপারের সাবরোম ও ফেনি সীমান্তের ওপারে বেলুনিয়া সীমান্তের নদী পথের দুটি অমিমাংশিত বিষয়টি নিয়ে এক সাথে না বসলে কমলগঞ্জের মখাবিলে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের আপত্তি প্রত্যাহার করা যাবে না বলে জানান। আগামীতে এক সাথে এই ৩ টি বিষয়ে বৈঠক করে সামাধান করতে হবে বলে ভারতীয়রা জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাই বলেন, রামগড় ও ফেনি সীমান্তের বিষয়টি উদ্ধৃতন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেই পরবর্তীতে বসতে হবে। এ জন্য বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কোন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ত্রিপুরার ওয়াটার রিসোর্স বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী তপন কুমার লোত সাংবাদিকদের বলেন, সমাধান করতে হলে এক সাতে ৩টি বিষয়েই সমাধান করতে হবে। এজন্য আগামীতে আবারও বড় আকারের বৈঠকের উদ্যোগ নিতে হবে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন ২৭ বিএসএফ সহকারী কমান্ডার পি কে শুকলা, ওয়াটার রিসোর্স বোর্ড কমলপুরের এসডিইও পবিত্র মজুমদার ও বাংলাদেশের পক্ষে পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র নাথ সরকার।