দক্ষিন সুরমায় ফেঁসে যাচ্ছেন দু’ইউপি সদস্য!
ডেস্ক রিপোর্টঃ ভূয়া উত্তরাধিকারী সনদ প্রদানের ঘটনায় ফেঁসে যেতে পারেন দু’ ইউপি সদস্য। তাঁরা হচ্ছেন দক্ষিন সুরমার ৪নং কুচাই ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ আ/এ ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য মঈন উদ্দিন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডো সদস্য রওশনারা বেগম। এ ঘটনায় তোলপাড় চলছে। সূত্র জানায়, ওই দু’সদস্য ভূমিখেকো একটি চক্রের সাথে আঁতাত করে ভূয়া উত্তরাধিকারী বানিয়ে একটি সনদ প্রদান করেন। ওই সনদ পত্রে তদন্তকারী হিসাবে রয়েছে মঈন উদ্দিন ও রওশন আরার নাম। তাদের তদন্ত মতে কুচাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালামের স্বাক্ষরে করে ভূমি খেকো চক্রের হাতে সনদপত্রটি তুলে দেওয়া হয়। প্রদত্ত সনদ পত্রে তাহমিনা বেগম মান্নাকে পশ্চিমভাগ গ্রামের মৃত আব্দুল মুকিতের কন্যা হিসাবে দেখানো হয়েছে। অথচ প্রকৃত পক্ষে তাহমিনা বেগম মান্না আব্দুল মুকিতের পালিত কন্যা। কিন্তু আব্দুল মুকিতের ভূ-সম্পত্তি আত্মসার্তের লক্ষ্য তাহমিনা বেগম মান্নার সাথে গোপন আর্থিক আঁতাত করে দু’ইউপি সদস্য এ সনদ প্রদানে ভূমিকা রাখে। তবে এ সনদ পত্রে সুকৌশলের পরিষদের ¯œারক বা প্রদানের তারিখও উল্লেখ করা হয়নি। পরবর্তীতে ওই সনদপত্র দিয়ে তাহমিনা বেগম মান্না গত ০৯.১২.১৫ইং ১৭.১২.১৫ইং ও ০৬.০১.১৬ ইং পৃথক ৩টি যথাক্রমে ১৩৩৯, ১৪২০ ও ১৭৪২ নামজারী মোকদ্দমা দাখিল করে। বিষয়টি একপর্যায়ে প্রকাশ হয়ে গেলে প্রকৃত উত্তরাধিকারী হিসাবে মোছা: সফিকুন নেছা খাতুন গত ০৩ জানুয়ারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদালত, দক্ষিণ সুরমা, সিলেটের নিকট একটি অভিযোগ দাখিল করেন। তিনি ওই অভিযোগে বলেন, মরহুম আব্দুল মুকিত একমাত্র স্ত্রী শিরি বেগম উত্তরাধিকারী বিদ্যমান রেখে মৃত্যবরণ করেছেন। এছাড়া এস.এ রেকর্ডীয় মালিকা হিসাবে আত্তর আলীর উত্তরাধিকারী আপত্তিকারীনি মোছা: সফিকুন নেছা খাতুন ও নি:সন্তান মরহুম আব্দুল মুকিতের স্ত্রী শিরি বেগম। কিন্তু নামজারী মোকদ্দমার বাদিনী তাহমিনা বেগম মান্না মরহুম আব্দুল মুকিতের ্ঔসরজাত কন্যা সন্তান না হওয়া সত্বেও নিজেকে যোগাযোগি মুলে সম্পূন্ন ভূয়া তথ্য উপস্থাপন করে উত্তরাধিকারী সনদ প্রদান করে জমি রেকর্ডের অপচেষ্টা করছেন। বাদিনীর আবেদনের পেক্ষিতে সহকারী কমিশানর (ভূমি ) বিষয়টি তদন্তে করতে যেয়ে আবেদনের সত্যতা দেখতে পান। এরপরই প্রকৃত সনদ উদ্ঘাটনের জন্য নিদের্শ প্রদান করলে, সফিকুন নেছা খাতুনের পক্ষে গত বুধবার চেয়ারম্যান কার্যালয় থেকে ২৮৯/১৫ইং স্মারকে ০৭.১২.১৫ইং একটি সনদপত্র সংগ্রহ করে তা কমিশনার বরাবরে জমা করেন। উক্ত সদসপত্রে পোষ্য কন্যা হিসাবে তাহমিনা বেগম মান্নাকে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া তদন্তকারী হিসাবে শুধু মাত্র ওয়ার্ড সদস্য মঈন উদ্দিনের নাম লেখা হয়েছে। সনদের ভিন্নতায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, পৃথক পৃথক এ দু’টি সনদ খানার রহস্য কি ? একাধিক সূত্র ও ভোক্তভোগী সফিকুন নেছা জানিয়েছেন, ইউপি সদস্য মঈন উদ্দিন ও রওশন আরা সত্য গোপন করে ভূমি খেকো চক্রের সাথে আঁতাত করে এ সনদ প্রদান করে প্রকৃত মালিকদের সহায় সম্পত্তি থেকে বঞ্চিতের চেষ্টা করে নিজেদের পকেট ভারী করেছেন। তিনি বলেন, ভূয়া সনদ প্রদান কারী এই দু’ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি । এদিকে, নামজারী মোকদ্দমার বাদিনী তাহমিনা বেগম মান্না বলেন, ভুমি অফিসে দাখিলকৃত উত্তরাধিকারী সনদ তাকে প্রদান করেছেন ওয়ার্ড সদস্য মঈন উদ্দিন ও রওশনা আরা। আমাদের সুবিধা মোতাবেকই তারা এ সনদ প্রদানে সহযোগীতা করেছেন। এব্যাপারে কুচাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে আমার ইউনিয়নের প্যাডে এ ভূয়া সনদ গোপনে নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারের সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী দু’ইউপি সদস্য ভাল বলতে পারবেন। তিনি বলেন প্রতিবাদকারীরা এদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করলে তিনি সহযোগিতা করবেন। তবে তাহমিনা বেগম মান্নাকে পোষ্য কন্যা উল্লেখ করে তার দেওয়া সনদটি-ই প্রকৃতপক্ষে সঠিক। সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদালত, দক্ষিণসুরমা বীজেন ব্যানার্জি এ ব্যাপারে বলেন, তাহমিনা বেগম মান্না একটি ভূয়া উত্তরাধিকারী সনদ সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগী মুলে গ্রহন পূর্বক দাখিল করে নামজারী করার অপচেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রতিবাদকারীর সচেতনার কারনে সঠিক উত্তরাধিকারী সনদ আমার আদালতে দাখিল হয়। এতে করে সঠিক সনদের সত্যতা আমি দেখতে পাই। ভূয়া সনদ প্রদানের ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্তটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।