সিলেট ডিভিশনে রেলের শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ
ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের সিলেট ডিভিশনে শতাধিক রেলব্রিজ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আর এসব ব্রিজের উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন একের পর এক ট্রেন চলাচল করছে। ফলে প্রতিদিন এ লাইনের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ি ছড়া ও নদীর উপর নির্মিত ব্রিজে নানা ত্রুটি দেখা দেয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। আর এতে হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। রেলপথের পাহাড়ি ছড়া ও নদীর উপর প্রায় ৬০-৭০ বছর পূর্বে নির্মিত এসব ব্রিজ দীর্ঘদিন যাবত রি-বিল্ডিং (পুনঃনির্মাণ) না করাই এই ঝুঁকির কারণ বলে রেলওয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, সিলেট-আখাউড়া সেকশনে রেললাইনে তিন ফিট থেকে ৩০০ ফিট দীর্ঘ ব্রিজও রয়েছে। এ সেকশনের ১৭৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে এসব ছোট-বড় ব্রিজের সংখ্যা আড়াইশরও বেশি। এখন থেকে ৬০-৭০ বছর আগে নির্মিত এসব ব্রিজ একবারও পুনঃনির্মিত হয়নি। ফলে পাহাড়ি ছড়া ও নদীতে বালু উত্তোলন ও ঢলের কারণে মাটি দেবে গিয়ে এখন অনেক ব্রিজই অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আর এ কারণে এই রেল রুটের ব্রিজে এখন ঘন ঘন ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা দেয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রবিবার এই সেকশনের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় ১৫৭ নম্বর রেল ব্রিজে ত্রুটি দেখা দেয়ায় দুপুর ৪টা থেকে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এসময় চট্টগ্রাম থেকে সিলেটমুখী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস শ্রীমঙ্গল স্টেশনে, সিলেট থেকে ঢাকাগামী পারাবাত এক্সপ্রেস ভানুগাছ স্টেশনে এবং ঢাকা থেকে সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশনে আটকা পড়ে। জোড়াতালি দিয়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর পুনরায় সিলেটের সাথে সারাদেশের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ফাঁটল দেখা দেয়া ওই ব্রিজ দিয়ে চলাচলের সময় ট্রেনের গতি ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
শ্রীমঙ্গলের স্টেশন মাস্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন এই প্রতিনিধিকে বলেন, ফাঁটল দেখা দেয়া ব্রিজে পাহারাদার দেওয়া হয়েছে। পাহারাদারের কাছে একটি বই রয়েছে। ব্রিজ পারাপারের আগে উভয় দিকের ট্রেন থামবে এবং রক্ষিত বইয়ে স্বাক্ষক করে সর্বোচ্চ পাঁচ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন ব্রিজ পারা হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সিলেট ডিভিশনের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান সিলেট-আখাউড়া সেকশনে রেলের শতাধিক ছোটবড় ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কথা স্বীকার করে এই প্রতিনিধিকে বলেন, আমরা প্রায় সময় এসব ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ পুনঃনির্মাণের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছি। কিন্তু অপ্রতুল বরাদ্দের কারণে সবগুলো একসাথে পুনঃনির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।