চানপুর চা বাগানের শ্রমিক আন্দোলনের ভিডিও চিত্র প্রদর্শণী

বিশ্বজিৎ রায়, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট চা বাগানের ফাঁড়ি বেগমগঞ্জ চা বাগানের চা শ্রমিকদের জন্য বরাদ্ধকৃত কৃষি জমিতে স্পেশাল ইকোনমিক জোন করার প্রতিবাদে গড়ে উঠা টানা শ্রমিক আন্দোলনের ভিডিও চিত্র চা বাগানগুলোতে প্রদর্শণী শুরু হয়েছে। সবগুলো চা বাগান শ্রমিকদের আন্দোলিত করতে গত শনিবার (১৬ জানুয়ারী) রাত সাতটায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগান নাচঘরে ঢিডিও প্রজেক্টরের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রদর্শণী শুরু হয়।
প্রদর্শণীর উদ্যোক্তা চান পুর চা বাগান শ্রমিক আন্দোলনের অন্যতম এক নেতা ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় পড়–য়া চা শ্রমিক সন্তান মোহন রবিদাস জানান, প্রতিটি চা বাগানে শ্রমিকদের নামে কিছু কৃষি জমি বরাদ্ধ দেওয়া হয়। যে সকল চা শ্রমিক কৃষি জমি ভোগ করেন তা চা বাগানের কোন রেশন সুবিধা ভোগ করেন না। এ জমি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন করে থাকেন। সরকারী উদ্যোগে চানপুর চা বাগানের ফাঁড়ি বেগমগঞ্জ চা বাগানের ৫১১ হেক্টর কৃষি জমিতে স্পেশাল একোনমিক জোন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে করে কৃষি জমি হারানো ছাড়াও চা বাগানের পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘিœত হবে। এর প্রতিবাদে প্রায় ৯ মাস আগ থেকে চানপুর চা বাগানের শ্রমিকরা প্রতিবাদী হয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারক লিপি প্রেরণ করেন। গত বছল ২ আগষ্ট ঢাকার রাজ পথে চা শ্রমকি সন্তানরাও মানববন্ধন করেছে। এতেই স্পেশাল ইকোনমিক জোন করার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়নি।
এর প্রতিবাদে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর থেকে বেগমগঞ্জ চা বাগানের শ্রমিকরা টানা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে। বিষয়টি গণ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে, নানা পেশার মানুষ, সংস্থা ও সুশীল সমাজ বেগমগঞ্জ চা বাগানের শ্রমিক আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে চা বাগানের কৃষি জমিতে স্পেশাল ইকোনমিত জোন করা বাদ দিয়ে প্রয়োজনে সরকারী খাস জমিতে করারও দাবী জানান। এ আন্দোলন আরও বেগবান করতে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন চা বাগানে, উপজেলা সদরেও জেলা সদরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। সবগুলো চা বাগানে শ্রমিকদের এ আন্দোলনের প্রতি ঐক্যবদ্ধ করতে শনিবার রাত থেকে চা বাগানগুলোতে এ আন্দোলনের ভিডিও চিত্র প্রদর্শণী শুরু করা হয়। শনিবার রাতে শমশেরনগর চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রামের ইকোনমিক জোন করার প্রতিবাদের আন্দোলনের ভয়াল ভিডিও চিত্র প্রদর্শণ করা হয়।
মোহন রবিদাস আরও জানান, ভারতের নন্দীগ্রামের মত বাংলাদেশের চা শ্রমিকদের এ আন্দোলন। সম্প্রতি একটি বিশেষ মহল আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের নানাভাবে হয়রানির চেষ্টাও করছে। াতান মনে করেন ভিডিও প্রদর্শণীর মাধ্যমে সবগুলো চা বাগান শ্রমিকরাও আন্দোরিত হবে। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বলেন, আশ পাশ এলাকায় প্রচুর পরিমাণে খাস জমি আছে। সরকার চাইলে সে খাস জমিতে স্পেশাল ইকোনমিক জোন করতে পারে। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।