লাখো ভক্তের পদচারনায় মূখর ফুলতলী’র বাড়ি
যার অন্তরে রাসূলপ্রেমের আগুন আছে অন্য কোনো আগুন তাকে পোড়াতে পারে না
-আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী
ডেস্ক রিপোর্টঃ গতকাল শুক্রবার (১৬.০১.১৬)জকিগঞ্জে ফুলতলী ছাহেব বাড়িতে অনুষ্ঠিত হলো ওলীয়ে কামিল শামসুল উলামা হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর ৮ম ইন্তেকাল বার্ষিকী উপলক্ষে ঈসালে সাওয়াব মাহফিল। এ উপলক্ষে ছিল বিশাল আয়োজন, জুমআর পূর্বেই লোকে লোকারণ্য হয় বালাই হাওর। লাখো মুসল্লি নিয়ে বালাই হাওরে অনুষ্ঠিত হয় জুমআর নামায। যেদিকে চোখ যায় শুধু মুসল্লিদের সারি। নামায শেষে মাহফিলের মঞ্চে তাশরীফ আনেন হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর সুযোগ্য উত্তরসূরি উস্তাযুল উলামা ওয়াল মুহাদ্দিসীন, মুরশিদে বরহক হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী। খতমে খাজেগান ও দুআর পর মুরিদীন-মুহিব্বীনের উদ্দেশ্যে পেশ করেন অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী বয়ান। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা মানুষ, সৃষ্টিগতভাবে অত্যন্ত দুর্বল। এর তুলনায় আমাদের উপর শয়তানের প্রভাব অত্যন্ত শক্তিশালী। সে আমাদের আমলকে বিনষ্ট করার জন্য আমলের মধ্যে রিয়া বা লোক দেখানোর মনোভাব সৃষ্টি করে ফেলে। এ থেকে আমাদের বাঁচতে হবে। দীন-দুঃখী মানুষের পাশে মাটির আসনে বসে তাদের খিদমত করতে হবে। সকল কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করতে হবে। অন্তরে হুব্বে রাসূল পয়দা করতে হবে। যার অন্তরে রাসূলপ্রেমের আগুন আছে দুনিয়ার কোনো আগুন তাকে পোড়াতে পারে না। হযরত আবূ মুসলিম খাওলানী (র.)-এর প্রমাণ। তিনি বলেন, একদল লোক জিহাদের নামে মুসলমান হত্যা করে। এটা আসলো কোত্থেকে? এটা তো বাতিলপন্থী খারিজীদের ধারা। তিনি বলেন, যে সব মানুষ তাবিঈন, আইম্মায়ে কেরাম, আউলিয়ায়ে কেরামকে গালি-গালাজ করে, তাদে প্রতি বিষবাক্য প্রয়োগ করে এদের থেকে দূরে থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে যেন আমরা বিভ্রান্তির শিকার না হই। কিছু লোক তরীকা-তাসাউফের দাবী করে কিন্তু নামায পড়ে না। অথচ সকল ওলী নামাযের জন্য তাকীদ দিয়েছেন। চিশতিয়া, কাদরিয়া, নকশবন্দিয়া, মুজাদ্দিদিয়াসহ বিভিন্ন হক তরীকা আছে। এসব তরীকার যিকরের নিজস্ব রীতি-পদ্ধতি আছে। সিলসিলামতো যিকর করবেন। একে দুনিয়াবী স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবেন না। কেননা এরূপ করলে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। বাদ যুহর সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসাইন বলেন, আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) একজন মহান বুযুর্গ। তিনি ইলমে কিরাত, ইলমে হাদীস ও ইলমে তাসাওউফে পারদর্শী ছিলেন। সুন্নতে নববীর পরিপূর্ণ অনুসারী ছিলেন। তাকে দেখলে একজন সূফী মনে হতো, অবনতমস্তকে শ্রদ্ধা জানাতে মন চাইতো। তাঁর মতো ওলীআল্লারা না থাকলে আমরা ইসলাম সম্পর্কে জানতাম না, বুঝতাম না। তিনি বলেন, কষ্ট হলেও ইসলামের খিদমতে আমাদের কাজ করতে হবে। প্রিয় নবী (সা.) ও আউলিয়ায়ে কিরামের পথে চলতে হবে। তাদের অনুসরণ করতে হবে। আমাদের প্রিয় রাসূল (সা.) অনেক কষ্ট করেছেন, পেটে পাথর বেধেছেন। আমরাতো এ পর্যায়ে যাইনি, চেষ্টাও করিনি। তিনি বলেন, কুরআন আল্লাহ প্রদত্ত সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব। কিন্তু আমরা কুরআন পড়ি না, বুঝার চেষ্টা করি না। কুরআনের অনুসরণ করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা থাকত না। ইসলামের সকল বিধান অত্যন্ত সুন্দর। আমরা নামায পড়ি। এখানে উঁচু-নীচুর কোনো পার্থক্য নেই। পাশে জায়গা খালি থাকলে চাকরকেও কাছে এনে দাঁড় করাই। এটি ইসলামের শিক্ষা। এসব সম্পর্কে জানতে হলে আউলিয়ায়ে কিরামের কাছে আসতে হয়, এসব মাহফিলে আসতে হয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় এতীমখানার হাজারো এতীমকে নিয়ে হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মাহফিলের কার্যক্রম। এরপর অুষ্ঠিত হয় খতমে কুরআন ও দালাইলুল খায়রাত শরীফের খতম। বাংলাদেশ আন্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী’র যৌথ পরিচালনায় মাহফিলে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসাইন, ইছামতি কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল শায়খুল হাদীস আল্লামা হবিবুর রহমান, উজানডিহির পীর ছাহেব মাওলানা সায়্যিদ মোস্তাক আহমদ আল মাদানী, ফুলতলী কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল আল্লামা নজমুদ্দীন চৌধুরী, দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান, মাওলানা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, মুফতী মাওলানা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, সোবহানীঘাট কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী, সাবেক এমপি আলহাজ শফিকুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব মাওলানা এ.কে.এম মনোওর আলী, ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কাফীলুদ্দীন ছালেহী, মুফতী মাওলানা আবূ নছর জিহাদী, জালালপুর জালালিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা জ.উ.ম আব্দুল মুনঈম, ইকড়ছই সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ছমির উদ্দীন, সৎপুর কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিছ মাওলানা ছালিক আহমদ, বুরাইয়া কামিল মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, ঢাকা মহাখালী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিছ মাওলানা মাহবুবুর রহমান, জকিগন্জ সিনিয়র মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মোশাহিদ আহমদ কামালী, দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিছ মাওলানা বদরুজ্জামান রিয়াদ, তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি ফখরুল ইসলাম ও ঢাকা জেলা লতিফিয়া কারী সোসাইটির সভাপতি মাওলানা আবু সাদেক মুহাঃ ইকবাল খন্দকার।
মাহফিলে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের উজানডিহির পীর ছাহেব মাওলানা সায়্যিদ জুনাইদ আহমদ আল মাদানী, আমরোটের পীর ছাহেব হযরত মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, মাওলানা আব্দুশ শাকুর চৌধুরী ফুলতলী, জালালিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা শুয়াইবুর রহমান, নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী, ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের জেনারেল সেক্রেটারী হাফিয মাওলানা ফখরুদ্দীন চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের সহকারী এটর্নি জেনারেল আব্দুর রকিব মন্টু, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ড. সৈয়দ শাহ এমরান, সৎপুর কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা শফিকুর রহমান, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম সিদ্দিকী, ইছামতি কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাশুক আহমদ, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রহীম, রাখালগন্জ সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা হবিবুর রহমান, জকিগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, ঢাকা মহাখালী কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম খান আল মারূফ, সৎপুর কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা আবূ জাফর মুহাম্মদ নুমান, মাথিউউরা সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবদুল আলিম, ভারতের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আজিজুর রহমান তালুকদার, মাওলানা মাহবূবুর রহমান, স্পেন আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা আসাদুজ্জামান রাজ্জাক, ইউকে আল ইসলাহ নেতা আলহাজ্ব ইসমাইল মিয়া, সিলেট জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মকন মিয়া, মাওলানা কাজী আলাউদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা শামসুল ইসলাম, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মাওলানা কুতবুল আলম, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাওলানা নজমুল হুদা খান, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, স্কুল অব এক্সেলেন্স-এর ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী, মাওলানা মুজিবুর রহমান ভাদেশ্বরী, তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা হাসান চৌধুরী গিলমান, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আলমগীর হোসেন, মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, হাফিয নজীর আহমদ হেলাল, মাওলানা বেলাল আহমদ, ভাদেশ্বর আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শুয়াইবুর রহমান, এলাহাবাদ আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহির হুসাইন, মাদারবাজার হাফিজিয়া আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. সৈয়দ শহীদ আহমদ বোগদাদী, ফেঞ্চুগন্্জ মুহাম্মদিয়া সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ফরিদ উদ্দীন আতহার, বিশ্বনাথ আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নুমান আহমদ, মাওলানা আব্দুস সোবহান জিহাদী, মাওলানা আব্দুল বারী জিহাদী, আলহাজ্ব তোরণ মিয়া, ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ হাফিয আশিকুর রহমান, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিয আলাউর রহমান টিপু, কুলাউড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা ফজলুল হক খান শাহেদ, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা ইমাদ উদ্দিন নাসিরী, আল ইসলাহ নেতা মাওলানা আবু তাহির খালিদ, মাওলানা ফরিদ আহমদ হবিগঞ্জী, আলহাজ শাহজাহান মিয়া, মাওলানা আলী আসগর খান, মাওলানা হেলালুদ্দীন সিরাজী, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন, ড. মুর্শেদ আলম ছালেহী, মাওলানা আজিজুর রহমান প্রমুখ।