শেখ হাসিনার সরকার হচ্ছে ভোট ডাকাতের সরকার
গণতন্ত্র হত্যা দিবস ও পৌরসভায় কারচুপির প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিক্ষোভে নাজিম উদ্দিন আলম

নিউইয়র্ক থেকে এনা: ৫ জানুয়ারিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস আখ্যায়িত এবং ৩০ ডিসেম্বরের পৌরসভা নির্বাচনে ভোট কারচুপির প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠন গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় (নিউইয়র্ক সময়) জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার সিটি প্লাজায় এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাটের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, বিএনপি নেতা নিয়াজ আহমেদ জুয়েল, মাহমুদ চৌধুরী, ফারুক চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সভাপতি ও জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক শাহীন, যুব দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতিন, যুক্তরাষ্ট্র যুব দলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জনি, খলকু আহমেদ, জাতীয়তাবাদী ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিলাল চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, শাসমুল ইসলাম মজনু, সেলিম রেজা, বদরুল হক আজাদ, আনোয়ার হোসেন লেবু, ডা. শামীম আহমেদ, আমানত হোসেন আমান, এবাদ চৌধুরী, রুহুল আমিন নাসির, মাকসুদ চৌধুরী, ফরিদুল মাওলা, মোহাম্মদ কামাল, নূরুল আলম, জাহাঙ্গীর সরোয়ার্দী, তরিকুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, অরন্য দেব স¤্রাট, রেজাউল আজাদ ভুাইয়া, এম এ বাসিত, সৈয়দা মাহমুদা শিরিন, শেখ হায়দার আলী, আবুল বাসার, মজিবুর রহমান, আব্দুল খালেক আকন্দ, ইমরান শাহ রন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাজিম উদ্দিন আলম বলেন, আওয়ামী সরকার বার বার প্রমাণ করেছেন তারা ভোট ডাকাতের সরকার। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। যে কারণে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, আওয়ামী লীগ বলে তারা ব্যাপক উন্নয়ন করেছে, তারা যদি এতই উন্নয়ন করে থাকে তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে অসুবিধা কোথায়? তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপির প্রমাণ করেছে বিএনপি ভুল করেনি, বিএনপি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলো। কারণ এই সরকার হচ্ছে ভোট চোর, ভোট ডাকাত সরকার। তিনি অতীত ইতিহাস টেনে বলেন, শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিবও বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলো কিন্তু পারেনি। এবারো শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারবো না। এই স্বৈরাচার ও ভোট ডাকাত সরকারের পতনের লক্ষ্যে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে।
আব্দুল লতিফ স¤্রাট বলেন, এবারের সংগ্রাম স্বৈরচার ও ভোট ডাকাত শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম বেগম খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় আনার সংগ্রাম। তিনি ভ্যাটের একটি স্লোগান দেহ পাবি, মন পাবি ভ্যাট পাবি না, আর আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে ভোট হবে কিন্তু বিরোধী দল আসন পাবি না। তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির স্টেট কমিটি গঠন নিয়ে বলেন, যে সব সংস্কারবাদী দেশে দলের ক্ষতি করেছে, এখন তারা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীরা বেঁচে থাকতে তাদের ঐ স্বপ্ন কোন দিন পূরণ হবে না। কমিটির নামে তাকে চাঁদাবাজি করতে দেয়া হবে না।
জিল্লুর রহমান জিল্লু প্রচন্ড ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা সরকার হচ্ছে ভোট ডাকাতের সরকার। এই সরকারের অধীনে কোন দিন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই এই স্বৈরাচারি সরকারের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। আর যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে যে সব সংস্কারবাদী নেতা বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন এবং স্টেট কমিটি গঠনের চেষ্টা করছেন তাদের প্রতিটি স্থানে প্রতিহত করা হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, যুক্তরাষ্ট্রে কারো চাঁদাবাজি চলবে না।
ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন এবং ৩০ ডিসেম্বরের পৌরসভা নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই এই অবৈধ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে।
গিয়াস আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনার সরকার হচ্ছে অবৈধ সরকার। এই অবৈধ সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই।
অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে বাকশাল কায়েম করতে গিয়ে শেখ মুজিববে জীবন দিতে হয়েছে, আশা করি শেখ হাসিনারও পতন হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশের শুরুতে কেন্দ্রীয় নেতার পাশে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে তা নিরসন হয়। এ ছাড়াও বিক্ষোভ সমাবেশে খুলনা সিটির সাবেক মেয়র তৈয়মুর রহমান ও বাংলাদেশে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করে আব্দুল লতিফ স¤্রাট। অন্যদিকে বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়।