সাঈদীর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় ট্রাইব্যুনালে
ডেস্ক রিপোর্টঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেছে। সেখান থেকে রায়ের কপি যাবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাছে। রায় অবগত করা হবে আইন মন্ত্রণালয়কেও।
রবিবার দুপুরে রায়ের কপি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে পৌঁছে দেওয়া হয় বিচারিক আদালত ট্রাইব্যুনালে। আপিল বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মেহেদি হাসানের কাছ থেকে সেগুলো গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের ব্যক্তিগত সহকারী জহুরুল ইসলাম।
ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয় জানিয়েছে, রবিবারই ট্রাইব্যুনাল থেকে সাজা পরোয়ানার আদেশ তৈরি করে রায়ের অনুলিপি পাঠানো হবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাছে। রায় অবগত করা হবে আইন মন্ত্রণালয়কেও। গত বৃহস্পতিবার সকালে ৬১৪ পৃষ্ঠার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে।
এর আগে রায়ে স্বাক্ষর করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনসহ আপিল মামলার রায় প্রদানকারী পাঁচ বিচারপতি। অন্য ৪ বিচারপতি হচ্ছেন- বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সংক্ষিপ্তাকারে সাঈদীর আপিল মামলার চূড়ান্ত এ রায় দেয় আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর মৃত্যুদণ্ডাদেশের সাজা কমিয়ে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
সে সময়কার প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এ রায় দেন। বিচারপতিদের মধ্যে মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা সব অভিযোগ থেকে সাঈদীকে খালাস দেন। আর বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী আসামির মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে রায় দেন। তবে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি এস কে সিনহা ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর মতামতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় আসে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৮ মার্চ সাঈদী ও সরকারপক্ষ পৃথক দু’টি আপিল দাখিল করে। ট্রাইব্যুনালের রায়ে সাজা ঘোষিত না হওয়া ৬টি অভিযোগে শাস্তির আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আর সাঈদীর ফাঁসির আদেশ থেকে খালাস চেয়ে আসামিপক্ষ আপিল করেন।
২০১৩ সালের ১৬ এপ্রিল আপিল মামলাটির শুনানি শেষ হওয়ায় রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে আপিল বিভাগ। এর পাঁচ মাসের মাথায় সংক্ষিপ্ত রায় দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলো তারও পনের মাসের বেশি সময় পর।