বিমান সেনাসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭ :ভারতে বিমানঘাঁটিতে ফের গুলি, বিস্ফোরণ
ডেস্ক রিপোর্টঃ ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে বিমানবাহিনীর পাঠানকোট ঘাঁটিতে আবার গুলির শব্দ শোনা গেছে। একই সঙ্গে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়।
এনডিটিভির খবরে জানানো হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চিরুনি অভিযান শুরু হওয়ার পর এই শব্দ শোনা যায়। সেখানে আরও সন্ত্রাসী লুকিয়ে আছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আজ শনিবার ভোরে ওই ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলা হয়।
নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা গোলাগুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাতজনে পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে চারজন সন্ত্রাসী ও তিনজন বিমান সেনা।
পাকিস্তানের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়েশ-ই-মোহাম্মদ এই হামলা চালিয়েছে বলে ভারত সন্দেহ করছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে জানানো হয়, পাঞ্জাব পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এইচএস ধীলন বলেছেন, আজ সকাল আটটার দিকে বিমানঘাঁটিতে গোলাগুলি শেষ হয়েছে। তবে চিরুনি অভিযান চলছে। তাঁর এই বক্তব্যের পরেই আবার ঘাঁটিতে গুলির শব্দ শোনা যায়। সূত্র বলছে, সেখানে আবার গোলাগুলি শুরু হয়েছে ও গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটেছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ হামলার পর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, পাঞ্জাবের সন্ত্রাসী হামলা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাকিস্তান সফরকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলল। তিনি বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) বুঝতে হবে যে সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। এ ধরনের হামলা ভারত-পাকিস্তানের আলোচনা বা সমঝোতাকে ক্ষুণ্ন করল।
এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ভোর চারটার দিকে সেনাবাহিনীর পোশাকে সন্ত্রাসীরা বিমানঘাঁটির কাছে একটি ভবন থেকে এই হামলা চালায়। চাক্কি নদীর কাছে অবস্থিত সেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর কয়েক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলি চলে। সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত বিমানঘাঁটি থেকে ভারী অস্ত্রের গুলির শব্দ পাওয়া যায়।
বার্তা সংস্থা পিটিআইকে পাঞ্জাবের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সন্ত্রাসীরা সামরিক পোশাকে পুলিশের একটি গাড়িতে করে বিমানঘাঁটিতে ঢোকে। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, গাড়িটি গুরুদাসপুরের পুলিশ সুপারের। গতকাল শুক্রবার পাঠানকোট থেকে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা কয়েকজন সন্ত্রাসী পুলিশ সুপারকে আঘাত করে তাঁর গাড়ি ও ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ওই ফোন দিয়ে পাকিস্তানে সন্ত্রাসীরা যোগাযোগ করেছে বলে গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে। গতকাল এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্কাবস্থায় ছিল। এরই মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটল।
বন্দুক হাতে ভারতের বিমানবাহিনীর এক সেনা। ছবি: রয়টার্সসেনাবাহিনীর বিশেষ দুটি দল, জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও বিমানবাহিনী এই অভিযানে অংশ নেয়। পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে। ওই এলাকায় চিরুনি অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পাঠানকোট-জম্মু মহাসড়কে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিমানবাহিনীর স্টেশন এলাকায় যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা সূত্র বলছে, সেনাবাহিনীকে মহাসড়কে অবস্থান নিতে বলা হয়েছে, যাতে কোনো জঙ্গি জম্মু ও কাশ্মীরে ঢুকতে না পারে।
পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে ছয় মাস আগে আরও একটি সন্ত্রাসী হামলা হয়। এতে তিনজন নাগরিক নিহত হয়। ১২ ঘণ্টা ধরে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলির পর তিন হামলাকারী সন্ত্রাসী নিহত হয়।