‘হাসিনা-রকিব মার্কা’ নির্বাচন মানি না: খালেদা জিয়া
ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ওই সমাবেশের উদ্বোধন করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার রকিবউদ্দীন আহমদের নাম উল্লেখ করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘হাসিনা-রকিব মার্কা নির্বাচন যে বাংলাদেশে চলবে না, সেটা তারা আর একবার প্রমাণ করে দিলেন। প্রমাণ করে দিলেন যে তাদের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না, হবে না।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া এ কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘তাই বলে কি বাংলাদেশে নির্বাচন হবে না? অবশ্যই হবে। সময়মতো অবশ্যই হবে। আমি বিশ্বাস করি, যারা এত মানুষ হত্যা করেছে, গুম, খুন ও পঙ্গু করেছে, এত মায়ের, ভাইয়ের, বোনের চোখের পানি কখনো বৃথা যায়নি, যাবে না। ভবিষ্যতেও নির্বাচন হবে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সে নির্বাচনে দেশের মানুষ তাদের পছন্দের ঠিক জায়গায় ভোট দেবে।’
বিএনপির নেত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শুধু সন্ত্রাসী, স্বৈরাচারী নয়, এরা ডাইনী, বাঘিনী। রক্তের প্রতি তার নেশা হয়ে গেছে। দেশের এখন এমন অবস্থা, গণতন্ত্রতো নেই-ই, স্বৈরতন্ত্রও নয়, রাজতন্ত্র চলছে। এক ব্যক্তির ইচ্ছাই সব। তাকে সালামি দিয়ে সালাম দিয়ে সব করতে হবে।’
সরকারকে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই পৌরসভা নির্বাচনে ভোটচুরি, ডাকাতি, ছিনতাই—এত কিছু করেও যত সিটই নিয়ে যান না কেন, আনন্দ পাওয়ার কিছু নেই, মনোতুষ্টির কারণ নেই। কারণ মনে মনে ভালো করেই জানেন, এর পেছনে কারা আপনাদের সাহায্য করেছে, সিল মেরেছে।’ তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পর্যন্ত তারা নষ্ট করেছে। প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করেছে। চাকরি যাবে, এই করবে, সেই করবে বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের বিজয়ী করতে হয়েছে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রিসাইডিং-পোলিং কর্মকর্তাদের দিকে ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তারা অসহায়-অপারগ। আমি তাদের দোষ দেব না। শুধু বলব, আপনারা এ দেশের মানুষ, দেশেই থাকবেন। সরকার আসবে, সরকার যাবে। কিন্তু আপনাদের চাকরি থাকবে, চাকরির বয়স যত দিন থাকবে। তাই আপনাদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, দেশের জনগণ এ ফল মানে না, অন্য কোনো দলও মানছে না। কেবল যারা চুরি করে জিতে এসেছে, তারাই বেশি করে ঢোল পিটাচ্ছে, নানা রকম উচ্চস্বরে কথা বলছে। অনেক বাধা বিপত্তি ও বিপদ সত্ত্বেও সাংবাদিকেরা যেসব চিত্র মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন, তাতে পরিষ্কার যে নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হয়েছে।
সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এখন যারা জোর করে ক্ষমতায় আছেন, তারা কিন্তু নির্বাচিত নয়, স্বঘোষিত। ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। এ রকম নির্বাচন তো এর আগে দেখিনি। এটা একটা নতুন ধারা শুরু করেছে তারা। এবারও আমাদের ফেনীতে সবগুলো নিয়ে গেছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ফেনীতে কি এতই আকাল পড়েছে বিএনপির নেতা-কর্মীর যে তারা নমিনেশন সাবমিট করতে পারে না?’
ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।