‘মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে এগুতে হলে সঠিক ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ-সঠিক পরিসংখ্যান দরকার’
ডেস্ক রিপোর্টঃ নিউ এইজের সম্পাদক নূরুল কবীর বলেছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুধু এ দেশের মানুষের জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক ঘটনা নয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় একটা রাজনৈতিক ঘটনার ফল।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় একটা রাজনৈতিক ঘটনা একারণেই যে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই একমাত্র রাষ্ট্র যে রাষ্ট্রের মানুষ একটা জাতি-রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সশস্ত্র যুদ্ধ করেছে এবং যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অসংখ্য মানুষের প্রাণের বিনিময়ে, আত্মত্যাগের বিনিময়ে একটি স্বাধীন ভূখন্ড অর্জিত হয়েছে।
একমাত্র দেশ বলার কারণ, দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলো শেষ পর্যন্ত আলাপ-আলোচনা, সমঝোতা করে এক রকমের স্বাধীনতা পেয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনন্য। এছাড়াও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আরো একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো দেশের কৃষকরা সশস্ত্র ভাবে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো। দেশে যতো সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা রণাঙ্গনে ছিলেন, যারা যুদ্ধ করেছেন, শহীদ হয়েছেন, গাজী হয়েছেন তাদের ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ সরাসরি গ্রামের কৃষকরা ছিলেন। ফলে এমন একটা ঘটনা শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয় পৃথিবীর অনেক দেশের ইতিহাসে এমন হয়নি।
জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় চ্যানেল আই-এ অনুষ্ঠিত তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠানে নূরুল কবীর এসব মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী।
নূরুল কবীর বলেছেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে স্বাধীনতার ৪৪ বছর অতিক্রম করার পরেও শাসক শ্রেণীর ক্ষমতায় আসা বিভিন্ন সরকার এখনও পর্যন্ত শহীদ, গাজী মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক, নির্ভুল সংখ্যা নির্ণয় এবং নামের তালিকা প্রকাশের সৎসাহস দেখাতে পারেনি। বরং প্রতিবার একেক সরকার এসে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা পরিবর্তন করেন, সংখ্যা পরিবর্তন করেন এবং সংজ্ঞা পরিবর্তন করেন।
তিনি আরও বলেছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে এগুতে হলে সঠিক ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ দরকার, কোন কোন সমাজের কোন কোন শ্রেণী কি ধরনের অবদান রেখেছে তার সঠিক তথ্য দরকার, কত মানুষ শহীদ হয়েছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান দরকার, কত মানুষ গাজী হয়েছেন তারও সঠিক পরিসংখ্যান দরকার। এটা না করে কোন দলেরই বালখিল্যতা করার সুযোগ নেই।