সিলেটে নগর ট্রাফিকের কে এই মোড়ল
ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেটে নগর ট্রাফিক পুলিশের মোড়লের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ গাড়ি চালকগণ। ভারীযান থেকে শুরু করে ব্যাটারী চালিত রিক্সা চালকরাও রেহাই পাচ্ছে না এই অসাধু মোড়লের হাত থেকে। একাধিক সুত্র জানিয়েছে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুঁলিশের চাদাঁবাজি নিয়ন্ত্রন করেন মোড়ল । অসাধু এই মোড়ল ট্রাফিক র্সাজেন্ট ও কনস্টেবলদের চাঁদাবাজিতে উৎসাহিত করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিক প্রাইভেট গাড়ির মালিক ও ড্রাইভারদের অভিযোগ, নগরীর সবকটি পয়েন্টে এবং পরিবহনের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। তিনি নাকি কাউকে ভয় করেন না, তিনি নগর ট্রাফিকের এক মূর্তমান আতংক । তবে কে এই মোড়ল এ নিয়ে সিলেট জুড়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জণ।
কে এই মোড়ল : নগর ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট নুরুল হুদা মোড়ল। যতদূর জানাযায় তিনি হবিগঞ্জের টেকের হাট গ্রামের বাসিন্দা। মোড়লের চাঁদাবাজিতে এখন অতিষ্ঠ গাড়ি চালকগণ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে , দক্ষিন সুরমার হুমায়ূন রশীদ চত্বর ট্রাফিক পুলিশের চাদাঁবাজির মূল কেন্দ্র । সার্জেন্ট নুরুল ও হাবিলদাররা দক্ষিন সুরমার হুমায়ূন রশীদ চত্বর , সুবহানীঘাট পয়েন্ট , সাইফুর রহমান চত্বর ,পারাইরচর , আম্বরখানা , চৌহাট্টা পয়েন্ট , টিলাগড় ,রিকাবীবাজার , হাউজিং স্ট্রেট ,তেমুখী বাইপাস,বন্দর পয়েন্ট সহ অন্তত ২০টি পয়েন্টে কর্তব্যরত অবস্থায় একাধিক যানবাহন থেকে অবৈধ ফায়দা আদায় করে থাকেন। একইভাবে পুরো নগরীতে প্রতিদিন শত শত গাড়ির কাছ থেকে অবৈধ ফায়দা হাসিল করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সার্জেন্ট নুরুল আম্বরখানা পয়েন্টে থাকলেই ডিউটির চিন্তা না করে ফায়দা লুটতে ব্যাস্ত থাকেন । গ্রাম গঞ্জ থেকে আসা সিএনজি ,লেগুনা, ট্রাক গাড়ির ড্রাইভারদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা থেকে ১০০০টাকা আদায়ে করেন। গোয়াইনঘাটের সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক বাশির মিয়া জানান,গত ১৮ ডিসেম্বর সকাল ১০ঘটিকার সময় আমার নিজের মালিকানা গাড়ি নিয়ে আম্বরখানা পয়েন্টে আসা মাত্র সার্জেন্ট নুরুল গাড়িটির গতি রোধ করেনএবং কাগজ পত্র দেখাতে বলেন। আমি কাগজের ফটোকপি দেখালে মামলা ও গাড়ি আটকের ভয় দেখান। পরে অনেক দেন দরবার করে মুক্তি পাই। এরকম ট্রাফিক পুলিঁশের চাঁদাবাজিতে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। তাদের কথামত উৎকোচ না দিলে কারণে অকারণে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। শহরতলীর খাদিম দলইপাড়া গ্রামের অটোরিক্সা (সিএনজি) চালক রাহেল আহমদ জানান, গত ০৭/১২/১৫ইং সন্ধা ৭ ঘটিকার সময় ভাড়ায় চালিত অটোরিক্সা(সিএনজি) যার নং-সিলেট-থ-১৩-১১৩৬ গাড়িটি নিয়ে সিটি পয়েন্টে যাত্রী নামানোর সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট শ্রী অশোক কুমার বিশ্বাস আমার গাড়িটির গতিরোধ করেন। আমার গাড়িটি আটক করতে উদত্ত হলে আমি আমার অপরাধ জানতে চাই। কিছু না বলেই আমার মাথায় ও মুখে কিল ঘুষি মারিয়া লিলা-ফুলা জখম করেন। পরে একহাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। উনার কথা মতো ঘুষ না দেওয়ায় গাড়ির কাগজ জোরপূর্বক নিয়ে ১৪০ , ১৫৭ ধারা উল্লেখ করে মটরযান অধ্যাদেশে আমাকে একটি মামলাও দেন। মামলায় অভিযুক্তের স্থানে তিনি নিজেই স্বাক্ষর করেন। তখন আমার গাড়িতে দুজন মহিলা যাত্রীও ছিলেন। পরদিন ০৮/১২/২০১৫ইং তারিখে আমি আঘাত প্রাপ্ত মাথায় ব্যাথার যন্ত্রনায় ছটফট করলে স্বজনরা আমাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। তাই সু বিচার পাওয়ার আশায় এস.এম.পি পুলিশ কমিশনার বরাবরে গত ০৯/১২/১৫ ইং তারিখে লিখিত অভিযোগ করেছি। যাতে আমার মতো আর কোন ড্রাইবার এসব ট্রাফিক পুলিশের হয়রানীর স্বীকার না হয়।
ট্রাক চালক সিদ্দিক আহমদ জানান, ট্রাফিক পুলিশের চাদাঁবাজী ইদানিং বৃদ্ধি পেয়েছে । সারা দিন শহরের বাহিরে ট্রাক রেখে সন্ধার পর নগরীতে প্রবেশের সাথে সাথে ট্রাফিক পুলিশকে প্রতিটি পয়েন্টে পয়েন্টে উৎকোচ দিতে হয়। নতুবা খালি গাড়ি হলে ‘রিকুইজিশন’ আর মালবাহী হলে ‘অভার লোড’ বলে মামলার ভয় দেখিয়ে উৎকোচ দিতে বাধ্য করা হয়। অভিযোগে জানা গেছে , ট্রাফিকের অঘোষিত ‘ক্যাশিয়ার’ এর দায়িত্ব পালন করছেন কনেস্টেবল বিশ্বজিৎ। তিনি নগরীর প্রতিটি অবৈধ লেগুনা স্ট্যান্ড,এ্যম্বোলেন্স স্ট্যান্ড,কার ও লাইটেস স্ট্যান্ড, সিএনজি স্ট্যান্ড ও অটোরিকশা স্ট্যান্ড ছাড়াও রিকশা গ্যারেজ থেকে মাসোয়ারা আদায় করছেন। এছাড়া প্রাইভেট কার বা মাইক্রো রিকুইজেশনের উপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এরপরেও প্রতিদিনই রিকুইজেশন করা হচ্ছে প্রাইভেট গাড়ি। নগরীতে অসংখ্য রিক্সা একই নাম্বার প্লেইটে একাধিক রিক্সা থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে কোন অভিযান হয়নি। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি ( ট্রাফিক) মুসফিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।