নবীগঞ্জে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে ৫ মেয়র প্রার্থীর র্নিঘুম প্রচারনা
পিছিয়ে নেই কাউন্সিলরাও, কদর বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের
উত্তম কুমার পাল হিমেল ,নবীগঞ্জ থেকেঃ (সংশোধিত) উত্তম কুমার পাল হিমেল ,নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)থেকেঃ নবীগঞ্জ পৌরসভা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারন কাউন্সিলর পদে ৪২ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকার ভোটারদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। আর এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে বেশী কদর বেড়েছে কেটে খাওয়া ও সাধারন মানুষের । কিন্তু ভোট চলে গেলে কেউ আর এসব মানুষের খবর রাখেন না। নবীগহ্জ পৌরসভা নির্বাচনেও এর ব্যাতিক্রম ঘটেনি। কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে নিয়মিত প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। রিক্সাচালক থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষের বাড়ী বাড়ী গিয়ে তাদের খোজ খবর নিচ্ছেন আর ভোট প্রার্থনা করছেন। কেউ কেউ পৌর শহরের উন্নয়নের পাশাপাশি এসব নিন্ম আয়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের ও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে কোন কোন প্রার্থী গরীব মেহনতি দিনমজুর মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের মন ভুলাতে অসুখ-বিসুখ, আপদে বিপদে,বিয়ে ও সামজিক বিভিন্ন অনুষ্টানে টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সাধারন ভোটাররা এসব কমকান্ডকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন না । তাদের ভাষ্যমতে, আমাদের আদর-কদর আর ভালবাসা শুধুই নির্বাচনের একমাস। ভোট চলে গেরে আমাদের খোজ-খবর আর কেই রাখে না। নবীগঞ্জ পৌরসভায় ৩ বারের নির্বাচিত বর্তমান মেয়র ও আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী ( নৌকা ) , নবীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও নবীগঞ্জ পৌর বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী ( ধানের শীষ ) জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মাহমুদ চৌধুরী( লাঙ্গল) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছে যুক্তরাজ্য প্রবাসী গীতিকার, কবি ও সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর আলম রানা (জগ ) ও লন্ডন প্রবাসী জুবায়ের আহমদ চৌধুরী(মোবাইল) ।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে নবীগঞ্জে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বাজারের সকল অলিগলি বিভিন্ন প্রার্থীর পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে । প্রতীক বরাদ্ধ হওয়ার পর থেকেই ভোটারদের বাসা বাড়িতে গিয়ে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিভিন্ন স্থানে ও অনুষ্ঠান স্থলে গিয়ে সাধারণ ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় ও উঠান বৈঠক করছেন। সাধারণ ভোটারা এখন পৌরসভার গুরুত্বপূর্ন কান্ডারী মেয়র প্রার্থী ছাড়াও সাধারন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ করছেন বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরা ও চায়ের ষ্টলে। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে।
নির্বাচনের দিক্ষন যতই দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ভোটারদের মাঝে নির্বাচনী হিসাব নিকাশ ও চিন্তা ভাবনা নিয়ে ততই ব্যাপক চুলছেড়া বিশ্লেষন শুরু হয়েছে। প্রার্থীদের অতীত ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। এ আলোচনায় বাদ নেই রাজনৈতিক বিশ্লেষক, পেশাজীবি লোকজনও। এদিকে মেয়র পদে আওয়ামীলীগের মনোনীত ৩ বারের নির্বাচিত বর্তমান মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সদস্য অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী। সদা হাস্যজ্জ্বল সৎ এবং অত্যন্ত কিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে ইতিমধ্যে পৌর নাগরিকদের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি একজন স্বনামধন্য কলেজ শিক্ষক হিসেবেও পরিচিত। পুর্বের তিনটি নির্বাচনের মাঝে ২ টিতে তিনি আওয়ামীলীগের সমর্থন নিয়ে বৈতরনী পাড় হলেও এ বছর দলের প্রধান জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। তাই তিনি এখন দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে নৌকা মার্কায় তাকে বিজয়ী করা গুরুদায়িত্ব হয়ে দাড়িঁয়েছে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের। অপরদিকে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী। ৬নং ওয়ার্ডে টানা তিনবার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এবং তিন বারই পৌরসভার প্যানেল মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই দীর্ঘ সময়ে পৌর পরিষদের থাকার সুবাধে এবং বিএনপির রাজনৈতি করার কারনে তিনি এলাকায় সুপরিচিত। বিগত ২ টি নির্বাচনে নবীগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী হিসাবে এড. আব্দুস শহীদ গোলাপ এককভাবে বর্তমান মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরীর সাথে প্রতিদ্বন্ধীতা করলেও দলীয় নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে কাজ না করায় সামান্য ভোটে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীর কাছে হেরে যান । এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন বিএনপি রাজণীতি করলেও নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কোন ভাল পদের আসতে না পেরে দলীয়ভাবে কোনঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। পরবর্তীতে নির্বাচনের কিছুদিন পরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরন করেন। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী লন্ডন প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম রানা গীতিকার, কবি ও সাহিত্যিক হিসেবে তার অনেক খ্যাতি রয়েছে। তিনি উচ্চ শিক্ষিত ও বর্তমানে বাসদ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত । লন্ডন যাওয়ার পুর্বে আর্তসামাজিক উন্নয়নে এলাকায় নিবেদিত ছিলেন। অপরদিকে উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মোঃ মাহমুদ চৌধুরী জাতীয় পার্টির দলীয় প্রতিকে নির্বাচন করছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রবাসী জুবায়ের আহমদ চৌধুরী নির্বাচন করছেন।
আর মাত্র ২/৩ কদিন বাকী এবার পুরো দমে জমে উঠেছে নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের আমেজ। মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে। সকল প্রার্থীরাই উৎসব মুখর পরিবেশে পুরোদমে চালাচ্ছেন গণসংযোগ। ভোটারদের বাসা বাড়িতে গিয়ে গনসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিদিনই। তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। তারা দিনে রাতে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দোয়া ও আর্শীবাদ নিচ্ছেন সকল শ্রেণী পেশার মানুষের। প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকা ও অনুষ্টান স্থলে গিয়ে সাধারন ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় ও উঠান বৈঠক করছেন। এদিকে ভোটারদের মাঝে আগাম নির্বাচনী হিসাব নিকাশ ও চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে। প্রার্থীদের অতীত ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা ও চুলছেড়া বিশেষণ। এ আলোচনায় বাদ নেই রাজনৈতিক বিশেষক, পেশাজীবি লোকজনও। প্রতীক বরাদ্দের পর পরই প্রার্থীরা প্রচারনায় মাঠে নেমেছেন। শুরু হয়েছে লিফলেট বিতরন, পোষ্টারিং, মাইকিং। ইতিমধ্যে নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ভোটারদের মন জয় করতে ও ভোট আদায় করতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরীর (ধানের শীষ) বিরুদ্ধে ভোটারদের মাঝে নগদ টাকা বিতরনের অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম রানা ( জগ) । এ নিয়ে ও নবীগঞ্জ পৌরসভার সচেতন ভোটারদের মাঝে অজানা আতংক বিরাজ করছে।
অভিজ্ঞ মহলের ধারনা বিগত দিনের পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকান্ড বিশ্লেষন, সি গেড থেকে এ গেড উন্নীত করন, সৎ যোগ্য , শিক্ষার কথা বিবচেনা ও অন্যান্য সকল উন্নয়নের দিক বিবেচনা করেই সাধারন ভোটারা ভোট প্রযোগ করবেন। আগামী ৩০ শে ডিসেম্বর পৌরসভার নির্বাচনে কে হাসবেন শেষ বিজয়ের হাসি এই প্রতিক্ষায় রয়েছেন পৌরসভার ১৬ হাজার ১ শত ৯৫ জন সচেতন ভোটার।