লম্পট ফুফার বিকৃত লালসার শিকার এক কিশোরীর কান্না !
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাউ মাউ করে কাঁদতে শুরু করেন এক কিশোরী। বয়স ১৫ থেকে ১৭ এর কোঠায়। উপস্থিত সবাই কিছুটা হতবাক! ক্রমশ কিশোরীকে ঘিরে বাড়ছে উৎসুক মানুষের জটলা। বিস্ময় চোখে রেখেই একজন স্থানীয় সাংবাদিক এগিয়ে এসে কিশোরীর জানতে কাছে চাইলেন ‘কান্নার এমন কারন’ ?
কিছুতেই কান্না থামছিলোনা, চোখে মুখে ভয় আর অসহায়ত্বের স্পষ্ট ছাপ কিশোরীর। কোর্ট চত্বরের স্থানীয় কয়েকজন উকিল-মুহুরী সহ স্থানীয় ক’জন সাংবাদিক অভয় দেখিয়ে সেই জটলা থেকে বারান্দার এককোনে নিয়ে গেলেন কিশোরীকে । একজন বয়োবৃদ্ধ আইনজিবী মাথায় সস্নেহে হাত রেখে জানতে চাইলেন ‘কি হয়েছে’ ?
ধীরে ধীরে কান্নাজড়িত কন্ঠেই (কুড়িগ্রামের স্থানীয় ভাষায় ) কিশোরী বলতে শুরু করলেন, ‘বছর খানেক আগের কথা। বাড়িতে একা পেয়ে ফুফা আব্দুল কাদের আমার ওপর সুযোগ নেয়। আমি নিরূপায়, অসহায়। বাবা মারা গেছে অনেক আগে। মা-ও চলে গেছে আমাকে একা করে। কাকে বলবো এ বিপদের কথা। নীরবে চোখের পানি ফেলা ছাড়া আর কিছু করতে পারিনি। এভাবেই ভয় দেখিয়ে গত আট মাস ধরে আমাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে আমার আপন ফুফা।’
এরপর একটু থেমে সবার কৌতুহল ভারা প্রশ্নের উত্তরে কিশোরী আবারো বলতে শুরু করলেন, ‘ আমি ভয়ে আতঙ্কে থাকতাম। কাউকে বলার সাহস পেতাম না। বাবা আর মার জন্য খুব কষ্ট হতো। তারা বেঁচে থাকলে ফুফা আমাকে নষ্ট করতে পারতো না। আপন ফুফা হয়ে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সেসময় সান্ত্বনা দিতে ফুফা সম্পত্তি আর টাকা পয়সার লোভ দেখায় আমাকে।’
আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ফুফা আমাকে নষ্ট করেছে। সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে। আমি তার কঠিন বিচার চাই। কিশোরী আরো জানায় বর্তমানে সে সাতমাসের অন্তঃসত্ত্বা।
সর্বশেষ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে নিয়ে আসে মাছাবান্দায় ফুফুর নিজ বাড়িতে। ফুফু চোখের আড়াল হলেই ভয় দেখিয়ে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তো। ফুফা বলতো, মুখ খুলিস না, তোকে অবশ্যই বিয়ে করবো। আর যদি একথা কাউকে বলিস তাহলে জ্যান্ত পুঁতে ফেলবো।
এ ঘটনায় অবশেষে মঙ্গলবার নির্যাতিতা কিশোরী বাদী হয়ে ফুফার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফুফা আব্দুল কাদেরকে আটক করে। বুধবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, লম্পট ওই ফুফা কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার মাছাবান্দা গ্রামের মৃত মজাহার আলীর ছেলে আব্দুল কাদের। তিনি তিন সন্তানের জনক। বিয়ের প্রলোভন আর ভয় দেখিয়ে কয়েক মাস ধরে বাবা মা হারা ভাতিজিকে ধর্ষণ করেছে এই পাষণ্ড । এতে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে অসহায় এতিম ঐ মেয়েটি । ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
এদিকে, ভাতিজির অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে আব্দুল কাদের। এক পর্যায়ে কিশোরীর খালা ও নানার বাড়ির লোকজন বিষয়টি জেনে তাকে পরীক্ষার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মেয়েটি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।