সিলেটে নিট’র উপ-পরিচালককে আড়াই ঘন্টা পর বাথরুম থেকে উদ্ধার
ডেস্ক রিপোর্টঃ ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (নিট) সিলেট বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বাথরুম থেকে নিট’র উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিক্ষার্থীদের রোষানলে পড়ে বাথরুমে আশ্রয় নেয়ার আড়াই ঘন্টা পর রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে তাকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। নিট সিলেটের বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি নগরীর পুরানলেনে অবস্থিত।
জানা যায়, নিট ২০১২ সাল থেকে সিলেটে জেনারেল প্র্যাকটিশনার, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষার্থীদের যেসব সার্টিফিকেট দেয়, তার কোনো প্রমাণ তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে নেই। এজন্য শিক্ষার্থীরা তাদের সার্টিফিকেট নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করলে তা বাতিল হতে থাকে। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আজ রবিবার বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা পুরানলেনস্থ নিট বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জড়ো হয়। তারা সেখানে উপস্থিত থাকা নিট’র উপ-পরিচালক দাবিদার আনোয়ার হোসেনের দিকে মারমুখী হলে তিনি বাথরুমে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে নিট’র উপ-পরিচালক দাবিদার আনোয়ার হোসেন জানান, শিক্ষার্থীরা সিলেট বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ম্যানেজার হাফিজ আল আসাদকে মারধর করে। ওই ঘটনার মীমাংসার জন্য তিনি সিলেট আসেন। আজ রবিবার সকালে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তাদের বিভিন্ন অভিযোগ শুনেন। শিক্ষার্থীরা তার পরিচয়ের প্রমাণ চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি। একপর্যায়ে বিকেলের দিকে শিক্ষার্থীরা তার দিকে মারমুখী হয়ে ওঠলে তিনি বাথরুমে আশ্রয় নেন।
নিট সিলেট বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষক শামসুর রহমান রাহেল জানান, তিনি সপ্তাহে তিনদিন এখানে ক্লাস নেন। উপ-পরিচালক দাবিদার আনোয়ার হোসেন কোনো প্রমাণপত্র দেখাতে না পারায় শিক্ষার্থীরা তাকে মানতে চায়নি। উনি স্বেচ্ছায় বাথরুমে আশ্রয় নেয়। পরে পুলিশ আসার পর তিনি বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসেন।
ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থী হুমায়ুন রশিদ জানান, এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ২০১২ সাল থেকে যারা সার্টিফিকেট পেয়েছে, তাদের সার্টিফিকেট নিটের ওয়েবসাইটে নেই। সার্টিফিকেটে কোনো রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নেই। মেডিক্যালের শিক্ষক দিয়ে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন বিষয়ে ক্লাস নেয়া হয়। এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কয়েকদিন ধরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ম্যানেজার হাফিজকে চাপ দিতে থাকে। এর প্রেক্ষিতে আজ ঢাকা থেকে আনোয়ার হোসেন আসেন। কিন্তু তিনিও নিটের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার এএসআই সুমন সরকার জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপ-পরিচালক দাবিদার আনোয়ার হোসেনকে বাথরুম থেকে বের করে তার পরিচয়পত্রের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি। একইসাথে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ব্যাপারে কোনো সুদুত্তর দিতে না পারায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।