হোটেল শ্রমিক রিয়াদের খুনী সোহেলকে গ্রেফতারের দাবি

মৌলভীবাজারে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি

165168_11ঢাকার ঘরোয়া হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের শ্রমিক রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদের হত্যাকারী আরিফুল ইসলাম সোহেলকে অবিলম্বে গ্রেফতার, হোটেল সেক্টরে শ্রম আইন বাস্তবায়ন ও বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে নি¤œতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণার দাবিতে বাংলাদেশ হোটেল শ্রমিক ফেডারেশন রেজিঃ নং ২০৩৭ এর পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী বরাবর ২৯ নভেম্বর সকাল ১১ টায় দুইটি পৃথক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। একই সাথে হোটেল শ্রমিক ফেডারেশনের আহবানে দেশব্যাপী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে একই দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। তার অংশ হিসেবে হোটেল শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ২৩০৫-এর উদ্যোগে ২৯ নভেম্বর বেলা ১১ টার সময় দলীয় কার্যালয়ে জমায়েত হয়ে মিছিল সহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হন। পরে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল আজিজ প্রধান ও সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহিন মিয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী বরাবর দুইটি পৃথক স্মারকলিপি পেশ করেন। জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক মীর মোঃ জসিমউদ্দিন স্বাক্ষরিত স্মারকলিপির অনুলিপি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আইজিপি, বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ সুপারসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। স্মারকলিপিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে উল্লেখ করা হয় গত ২৭ অক্টোবর দিবাগত রাত ১ টার সময় মতিঝিলের ঘরোয়া হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের মালিক আরিফুল ইসলাম সোহেল তারই প্রতিষ্ঠানের কর্মরত কিশোর শ্রমিক রিয়াদকে সারাদিন নির্যাতন করে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে খুন করে, যা সিসি টিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ কর্মকর্তারাও নিশ্চিত হয়েছেন। অথচ এক মাসের বেশি হয়ে গেলেও আজ পর্যন্তু খুনী সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়নি। এই ঘটনা শুধু হোটেল শ্রমিক নয় সমগ্র দেশের বিবেকবান মানুষকে নাড়া দিয়েছে। হোটেল শ্রমিকরা প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ মিছিল করে খুনীকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছেন। স্মারকলিপিতে হুশিয়ারী দিয়ে বলা হয় খুনী সোহেলকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা না হলে শ্রমিকরা কর্মবিরতির মতো কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে। স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয় শ্রম আইন-২০০৬, সংশোধিত শ্রম আইন-২০১৩ এবং শ্রম বিধি-২০১৫ জারী করে সরকার মূলত মালিকদের স্বার্থরক্ষা করেছে, তার পরও শ্রম আইনে যে সামন্যতম সুযোগটুকু আছে হোটেল মালিকরা তাও মানেন না। হোটেল শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিসবুক, ৮ ঘন্টা কাজসহ শ্রম আইনের কোন সুযোগ সুবিধাই প্রদান করা হয় না। নিহিত হোটেল শ্রমিক রিয়াদের মাসিক বেতন ছিল মাত্র ৩,৫০০ টাকা। সরকার ২০০৯ সালে হোটেল শ্রমিকদের জন্য নি¤œতম মজুরির গেজেট ঘোষণা করার ৬ বছর অতিক্রম হলেও আর কোন মজুরি বোর্ড করা হয়নি, অথচ এই সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। স্মারকলিপিতে রিয়াদের হত্যাকারী আরিফুল ইসলাম সোহেলসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, হোটেল শিল্পে শ্রম আইন বাস্তবায়ন, নিম্নতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকার ঘোষণা করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি করা হয়।