তুর্কি নারীকে বিমান থেকে নামিয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র
ডেস্ক রিপোর্টঃ এবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের নিউ আর্ক বিমানবন্দরে একটি বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হল তুর্কি বংশোদ্ভূত একজন মুসলিম নারীকে। মুসলমান হওয়ার কারণে কামিলা রাশিদ নামের ঐ নারীকে বিমান থেকে নামানো হয়।
কামিলা রাশিদ নিউ আর্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে তুর্কির ইস্তানবুলের উদ্দেশে যাত্রা করার সময় বিমানবন্দরের স্বাভাবিক নিরাপত্তা তল্লাশি পার হওয়ার পরেও কাস্টম অফিসারার তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকে রাখেন।
কামিলাকে পরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ব্যবস্থা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের আরেকটি বিমানে উঠতে অনুমতি দেয়া হলেও বিমানটি উড্ডয়নের ঠিক পূর্বেই এফবিআই কর্মকর্তারা তাকে অন্যান্য যাত্রীদের সামনে প্লেন থেকে আবারো জিজ্ঞাসাবাদের অজুহাতে নামান। ৩০ বছর বয়েসি কামিলা রাশিদ গত বুধবার সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরাকে বলেন, বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মীদের থেকে নেয়া এই অগ্নিপরীক্ষা তাকে এতটাই অপমানিত এবং ভীতসন্ত্রস্ত করেছে যে বিমানে চড়ে দ্বিতীয় কোথাও ভ্রমন করার কথা তিনি চিন্তাও করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ‘আমাকে অপমান এবং বহিষ্কার করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।’ তিনি আরো বলেন, ‘তারা সম্ভবত এটা করেছেন কারণ আমি মুসলিম, কারণ আমি ইস্তাম্বুল যাচ্ছিলাম, কারণ তাদের যা খুশি তাই করার ক্ষমতা আছে, কারণ নিরাপত্তা মানে মানুষের অধিকার হরণ করা, কারণ বেশিরভাগ মানুষই জানেনা নিরাপত্তার অর্থ আসলে কি, কারণ বেশিরভাগ মানুষের বিশ্ব রাজনীতির সাধারণ জ্ঞানটাও নেই।’
গত নভেম্বরের ১৩ তারিখে প্যারিসে আইএসের জঙ্গি হামলার পর গোটা যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা জোরদার করা হয় এবং মুসলিমদের উপর কড়া নজরদারি শুরু হয়। কামিলাও এই নজরদারির শিকার।
কামিলা বলেন, ‘বিমানের ২০০ আরোহীর মধ্যে আমিই কেবল জলজ্যান্ত মুসলিম যাকে নামিয়ে দেয়া হয় এবং যার পাসপোর্ট এবং মুঠোফোন জব্দ করা হয়।’ কামিলা রাশিদ যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেছেন। তিনি একইসাথে একজন শিক্ষক, শিল্পী এবং দ্যা নিউ ইনকয়ারি ম্যাগাজিনের লেখক।
যুক্তরাষ্ট্রের ইসলামভীতি নিয়ে কামিলা বলেন, ‘আমার মনে হয় না প্যারিস হামলার পরে ইসলামভীতির পুনরুত্থান হয়েছে। এটা আগে থেকেই ছিল, এখন এটাকে শুধু কায়দা করে বৈধ করা হয়েছে। ৯/১১ হামলার পরেও যে রকম হয়েছিল, অনেক মানুষ মুসলিমদের উপর ঘৃণাবশত অনেক আঘাত করেছেন। প্যারিস হামলার পরেও ঠিক সেটাই হচ্ছে।’