হাত বাড়ালেই মাদক: ঝালকাটিতে প্রশাসনের যোগসাজসে মাদকের ভয়াবহ
মোঃ আল-আমিন, ঝালিকাঠি : ঝালকাঠি পৌর এলাকর বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে মাদক স্পট। সময়ের ব্যবধানে বাড়ছে এসব স্পটের বিস্তৃতি। মাদক স্পট বন্ধে আপ্রাণ চেষ্টা করেও স্পটের সংখ্যা কমাতে পারছে না প্রশাসন। মাদক নির্মূলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকলেও রহস্যজনক কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা থেকে যাচ্ছে প্রশাসনের ধরাছোঁয়ার বাইরে। পৌর এলাকার ৬ ও ৭ নং ওর্য়াডের চিহ্নিত মাদক স্পটগুলো চলছে জমজমাট। অনুসন্ধানে জানাগেছে, বেনাপোল থেকে সবজির গাড়িতে, মাছের পোনা সরবরাহের গাড়িতে, মালবাহী ট্রলারে এবং জাহাজে বহনকৃত মালের নীচে করে আসছে মাদক। এছাড়াও ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম-স্বরুপকাঠির সীমান্ত এলাকা থেকে এবং গাভারামচন্দ্রপুরের কাঁচাবালিয়া এলাকায় বানাড়িপারা থেকে মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটছে। ভয়াবহ মাদকের মধ্যে বেশি আসছে ফেন্সিডিল ও ইয়াবা। পাশাপাশি রয়েছে হেরোইন ও গাঁজা। শহরের ৭নং ওয়ার্ড কেফাইত নগর, ফুলতলা, আবাসন, গাবখান ব্রিজ এর ডাল, মহোৎপুর স্কুলের পিছন, বাদাম তলার খেয়াঘাট সংলগ্ন (কারিকর পাড়া) রাম নগর, কৃত্তিপাশার মোড়ে বিনা বাধায় চলছে আমদানি করা মাদকের ব্যবসা। ব্যবসা সমূহ রাজনীতি দলের বড় কোন নেতা পরিচালনা না করলেও ছোট পর্যায়ের পদ-পদবীধারী নেতারা এ মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করে মোবাইলে চলে এসব মাদক ব্যবসা। মাদক ব্যবসার জন্য মালবাহী ট্রলার, শিশুদের স্কুল ব্যাগের মাধ্যমে ও ভ্যানের বডিতে সাজিয়ে বিভিন্ন স্থানের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছানো হচ্ছে। বেশি লাভজনক হওয়ায় এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে শিশু, মহিলা ও যুবসমাজ। অসৎ সঙ্গ, শখের বশে ও সহজ প্রাপ্তি হওয়ায় সেবনে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী ও যুবসমাজ। বর্তমানে ওইসব এলাকায় স্কুল-কলেজ পড়–য়া মাদকসেবীর সংখ্যাও অনেক রয়েছে বলে জানা গেছে। মাদক স্পটের বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। বভিন্ন এলাকার কয়েকজন অভিভাবক আক্ষেপ করে বলেন, দিনের পর দিন ফেন্সিডিল, হেরোইন ও ইয়াবার ব্যবসা বেড়েই চলেছে। অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, মাদক ব্যবসায়ীরা সাথে বহন না করে কোন নির্জন স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখে মোবাইলে চুক্তির মাধ্যমে লেনদেন করে। লেনদেন ঠিকমত পরিশোধ হলে জানিয়ে দেয়া হয় তার স্থান। ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে ব্যবসায়ী, মানবাধিকার কর্মী, সংবাদ কর্মী, রাজনীতিক নেতাসহ বিভিন্ন নামে ব্যবসা পরিচালনা করেন। অপরদিকে উঠতি বয়সী মাদকাসক্তরা পূর্বে এক ধরনের গাম নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করলেও তারা বর্তমানে হাতের কাছে প্যাথেডিন পাওয়ায় তা দিয়ে নেশা করছে। এতে করে দিন দিন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে যুবসমাজ এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধ করতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে শান্তিপ্রিয় সচেতন জনগণ। ঝালকাঠি জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোঃ মোজাম্মেল হক জানান, মাদক ব্যবসায়ী যেই হোক কোন রকম ছাড় দেয়া হবে না। হাতে-নাতে যাকেই ধরতে পারি তাকেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হচ্ছে। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।