সিলেটে রাস্তার দখল নিতে হত্যার হুমকী : সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেটে রাস্তার দখল নিতে বিদেশ ফেরত যুবককে হুমকী দিচ্ছে প্রতিপক্ষ। আদালতের জারিকৃত স্থায়ী নিষেধাজ্ঞাকৃত ভূমি শতাধিক লোকজন নিয়ে দখলের চেষ্টা করছেন আমির আলী গংরা। ঘটনাটি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের বাদেদেউলি গ্রামে। ওই গ্রামের মরহুম রয়াব আলীর ছেলে আক্কল আলী সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন-চলাচলের রাস্তাটি আমির আলীর বাড়ি সংলগ্ন হওয়ায় সীমানা প্রাচীরের অভ্যন্তরে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে বাধা দিতে গিয়ে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার দেউলী মৌজার জেএল-১৯ এর ৭০৭ খতিয়ানের ৪৮৫৬ দাগের ১ শতক স্বগীয় উপেন্দ্র চন্দ্র চক্রবতী, ৬৯০ খতিয়ানের ৪৮৫৬ দাগে কৃষ্ণ বিহারী হালদার এবং ৭০৮ খতিয়ানের ৪৮৫৬ দাগে দুই শতক ভূমি স্বগীয় উমেশ চন্দ্র চক্রবর্তীর এবং মন্তাজ আলী রেকর্ডিও মালিক। শত বছর আগে মন্দিরে যাতায়াতের জন্য এই চার শতক ভূমি হালট শ্রেনী তথা জনসাধারণের রাস্তায় জন্য রেখে যান তারা। এরমধ্যে উমেশ চন্দ্র চক্রবর্তীর এক শতক ভূমি তাদের নিজেদের দাবিকৃত বলেন আক্কল আলী।
অন্যদিকে রাস্তার পাশ্ববর্তী ১৮ শতক ভূমির রেকর্ড স্থানীয় ইসরাইল আলীর স্ত্রী রেনু বিবির নামে। অথচ আব্দুল খালিক তার মা আমিরুন নেছার নামে এই ১৮ শতক ভূমি এবং রাস্তার চারশতক ভূয়া দলিলে সৃজনের মাধ্যমে আমির আলী ছেলে জাহেদ আলী ও জুবেদ আলী কাছে বিক্রি করেন। হালট বা পুরোনো রাস্তার ভূমি বিক্রির বিধান না থাকলেও ভূয়া দলিল সৃজনের মাধ্যমে রের্কড মূলে ওই চার শতক ভূমির ক্রয় সূত্রে মালিক দাবি করছেন আমির আলী। অথচ জীবদ্দশায় ভূমির মৌরশি চার মালিক তাদের রাস্তা কখনো বিক্রি করেননি এবং ভূমিটি হালট রকমের হওয়ায় তা বিক্রয়যোগ্যও নয়।
আক্কল আলীর দাবি চার শতকের ভূমির রাস্তার পেরিয়ে রয়েছে তার দুই কেদার ভূমি। জমির ওপর যেতে হয় উন্মোক্ত রাস্তাটি পেরিয়ে। এছাড়া মন্দিরে যেতে হলেও ব্যবহার করতে হয় এই রাস্তা। নালিশা এই ভূমিতে আদালত কর্তৃক ১৪৪ ধারা জারি করানোর পর আক্কল আলীর বিরুদ্ধে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলে আদালতে একটি দরখাস্ত মামলা (নং-৭৯/১৫) দায়ের করেন আমির আলী। অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন হওয়ায় মামলাটি আদালত থেকে খারিজ করা হয়েছে। শুধু নিজের নয়, এলাকার মানুষের সুবিধার্থে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত রাস্তাটি নিয়ে আদালতের স্বরণাপন্ন হয়ে অন্তবর্তীকালী স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করালে আমির আলী গংরা তাকে চাঁদাবাজি মামলায় ঢোকানো ছাড়াও প্রাণে হত্যার হুমকী দেন। এমনকি রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েও আমির আলী গংরা তাকে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর জায়গা দিয়ে চলাচল করতে না পারার জন্য বখাটে লোকজনকে ভাড়া করে এক ধরণের পাহারা বসিয়েছেন আমির আলী।
অপরদিকে আমির আলীর সাথে একাট্টা হয়ে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় ঘিলাছড়া মহিলা মাদরাসার অধ্যক্ষ ও ইউনিয়ন হেফাজতে ইসলামেরসহ সভাপতি আব্দুল খালিক। একই এলাকার গোলাম রব্বানীর ছেলে শাহীন আহমদ। তারা সরকার দলীয় নেতাদের সাথে আঁতাত করে পুলিশ দিয়ে তা হয়রানীর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোপূর্বে শাহীনও তার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরে টিলাকাটার একটি মামলা করেন। অথচ হেফাজতি নেতার সহযোগীতায় জোরপূর্বক ওই টিলা তিনি নিজেই কাটিয়েছেন। আর মামলা হয় তার বিরুদ্ধে? একইভাবে স্থানীয় ক্ষমতাসীন নেতারা আব্দুল খালিকের পক্ষ নিয়ে আক্কল আলীকে পুলিশকে দিয়ে হয়রানী করাচ্ছেন। এমনকি আদালতে দায়ের করা ১৪৪ ধারার প্রতিবেদনও উল্টো করিয়েছেন। অথচ সরেজমিন তদন্তে গিয়ে পুলিশ সত্যতা পাওয়ার বিবিধ ২০/২০১৫ এবং প্রসেস নং ৮২৫ এর প্রতিবেদন তার বিরুদ্ধে আদালতে দাখিল করতে বাধ্য হয়েছে দাবি আক্কল আলীর। যে কারণে তিনি অসহায় এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতা চেয়েছেন তিনি।