মাধবপুরে বদু মিয়ার খামারে চাষ হচ্ছে থাইল্যান্ডের সুইট ব্ল্যাক, এশিয়ান-২ ও হলুদ তরমুজ
হামিদুর রহমান মাধবপুর প্রতিনিধি॥ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামে চাষ হচ্ছে থাইল্যান্ডের সুইট ব্ল্যাক, এশিয়ান-২ ও হলুদ জাতের তরমুজ। বিদেশী এই তরমুজগুলোর বাংলাদেমী নামও আছে। বাংলাদেশে সুইট ব্ল্যাক তরমুজ জেসমিন নামে, এশিয়ান-২ তরমুজ বাংলালিংক নামে ও হলুদ তরমুজ নামে পরিচিত। ইতিমধ্যে হবিগঞ্জের কয়েকটি উপজেলায় জেসমিন ও বাংলালিংক তরমুজের পরিক্ষামূলক চাষ হয়েছে। তবে মাধবপুরে বানিজ্যিক ভাবে এই ১ম চাষ হচ্ছে বিদেশী তরমুজ এবং বিশেষ করে হলুদ জাতের তরমুজটিও জেলায় ১ম চাষ হচ্ছে।
তুলনামূলক ভাবে বাংলাদেশী তরমুজের চেয়ে বিদেশী তরমুজের দাম বেশি পাওয়া যায় বলে গোপিনাথপুরের কৃষক বদু মিয়া ও আবুল খায়ের তাদের প্রায় ৩ একর জমিতে থাইল্যান্ডি তরমুজ চাষ করছেন।
কৃষক সূত্রে জানা যায়, এই তরমুজ চাষ করতে প্রতি শতকে ১ হাজার টাকা খরচ হয়। তরমুজ চাষী বদু মিয়া জানান, তিনি ৩ বছর যাবত থাইল্যান্ডের সুইট ব্ল্যাক, এশিয়ান-২ তরমুজ চাষ করছেন তবে এই বছর ১ম হলুদ তরমুজ সহ বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে তরমুজ চাষ করছেন। কৃষক বদু মিয়া বলেন, অনেক বছর যাবত আমি দেশীয় তরমুজ চাষ করেছি কিন্তু বিগত ৩ বছর যাবত আমি পরিক্ষামূলক ভাবে এই বিদেশী তরমুজ চাষ করছি। আমি দেখলাম যে পরিক্ষামূলক ভাবে চাষ করে যে ফলন পেয়েছি তা বিক্রি করে অনেক লাভবান হয়েছি। তাই এ বছর আমি বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে এই বিদেশী তরমুজ চাষ করেছি। তাছাড়া দেশি তরমুজের তুলনায় এই তরমুজের ফলন সংগ্রহ করতে অনেক কম সময় লাগে এবং বেশি দামে বিক্রি করা যায়। এই বিদেশী তরমুজ চাষ করতে কোনো সিজনের প্রয়োজন হয় না সারা বছর চাষ করা যায় ।
কৃষক বদু মিয়া ও আবুল খায়ের জানান, আগষ্টের শুরুতেই এই তরমুজের বীজ বপন করেছি এবং অক্টোবরের শেষের দিকে ফসল তুলে ফেলবো। ৩ একর জমিতে এই তরমুজ চাষ করতে তাদের খরচ হয়েছে ২লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। তরমুজের ১ম চালান বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়ে তারা ২ লক্ষ টাকা লাভ পেয়েছেন। কিছু দিন আগে ২য় চালান বিক্রি করেও প্রায় ১লক্ষ ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন।
বিদেশী এই তরমুজগুলো বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ৯০ টাকা কেজি। প্রতিটি তরমুজের ওজন সর্বোচ্চ ৩ কেজি হয়। কৃষক সূত্রে জানা যায় এই তরমুজগুলো তারা ঢাকা কাউরানবাজার, যাত্রাবাড়ি, বাদামতলী, সিলেট বন্দর ও স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করেন।
চৌমুহনী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অর্ধেন্দু দেব অসীত বলেন, হাইব্রিড এই তরমুজ সারা বছর চাষ করা যায় এবং ৮০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা য়ায়। যেখানে দেশী তরমুজের ফলন সংগ্রহ করতে ১২০ দিন সময় লাগে । এই তরমুজ এক চাষে ২ বার ফলন সংগ্রহ করা যায়। এই থাইল্যান্ডি তরমুজের দাম দেশী তরমুজের চেয়ে অনেক বেশি তাই কম সময়ে বেশি লাভ করতে পারেন চাষীরা।