পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে চীনের নির্ঘাত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ অর্থনীতি ও সামরিক শক্তিসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে চীন। এমন ক্ষেত্রে যুদ্ধ লাগার আশঙ্কা আছে বলেও মনে করেন একদল আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ। পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে চীনের যুদ্ধ লাগলে তা হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এই যুদ্ধ কি অবশ্যম্ভাবী?
টানা ৭০ বছর ধরে এশিয়ায় অনেক স্থানে ঘাঁটি নিয়ে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। সম্পর্ক ভালো থাকার সময় চীনও এর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। বর্তমানে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান চীনের কারণেই হুমকিতে। চীনের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সামরিক অবস্থানে আঘাত হানতে সক্ষম। কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ চীন সাগরের দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে চীন। দেশটি বিতর্কিত সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সেখানে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে। এসব ঘাঁটির ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে অন্য কোনো দেশের সামরিক যান আসা নিষিদ্ধ করেছে চীন। এটি নৌযান চালনার স্বাধীনতার জন্য হুমকি।
দ্রুত বাড়ছে চীনের শক্তি ও অর্থনীতি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে জার্মানির অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ শতাংশ আর সামরিক খাতে ব্যয় ছিল ৬৪ শতাংশ। এদিকে গত ১০ বছরে চীনের অর্থনীতি চার গুণ বড় হয়েছে এবং সামরিক খাতে ব্যয় বেড়েছে তিন গুণ।
যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ গ্রাহাম অ্যালিসনের মতে, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অতি দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে চীন। ইতিহাসে কোনো দেশের ক্ষেত্রে এমনটি দেখা যায়নি। তাঁর মতে, শক্তির ভারসাম্যের ক্ষেত্রে দ্রুত কোনো দেশ বা জাতি শক্তিশালী হয়ে উঠলে সেখানে যুদ্ধ লাগার শঙ্কা থাকে। গত ৫০০ বছরের ইতিহাসে এমন ১৬টি ক্ষেত্রের ১২টিতেই যুদ্ধ হয়েছে। বর্তমান এই সংকট কীভাবে দূর হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও চীন একেবারে দুর্বল নয়। এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য। অপরদিকে চীনের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাপান ও ভারত কিন্তু এমন সদস্য নয়। আর অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও চীন অন্যতম ঋণদাতা দেশের একটি। তবে বন্ধুরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে চীনকে পিছিয়েই বলা চলে। রাশিয়া, উত্তর-কোরিয়াসহ সারা বিশ্বে হাতেগোনা কয়েকটি দেশ চীনের বন্ধু।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের পদক্ষেপের কারণে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এমন দেশগুলোকে শক্তিশালী করার কৌশল নিতে হবে পশ্চিমাবিশ্বকে। ভারত, জাপানসহ কয়েকটি দেশ এর মধ্যে আছে। এশিয়ায় চীনে প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রগুলোকে সরাসরি সামরিক সহয়তার চেয়ে কৌশলগত ও প্রযুক্তিগত সহায়তা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা। এটি চীনের হুমকি কিছুটা হলেও দূর করবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।