কমলগঞ্জে যাত্রায় ব্যর্থ হয়ে জুয়া’র রমরমা আসর ॥ অপরাধ বৃদ্ধির আশঙ্কা
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নে রাতভর জুয়া’র রমরমা আসর চলছে। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বিগত বছরে যাত্রার আয়োজন করেও ব্যর্থ হয়ে ধান ক্ষেতের মাঝখানে পতিত জমিতে জুয়ার আসর শুরু করেছেন। রাতে সুবিধার জন্য প্যান্ডেল তৈরী করে সেখানে সৌর বিদ্যুৎ এরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসন বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগে অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত বছরে মুন্সিবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামে যাত্রার প্যান্ডেল তৈরী করলেও এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে প্রশাসন যাত্রার প্যান্ডেল ভেঙ্গে দেয়। ফলে যাত্রার আয়োজকরা মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ভূমিগ্রাম ও রামপুর গ্রামের মধ্যস্থানে খিরনী নদীর ব্রীজের দক্ষিণ পাশে ধানী জমির মাঝখানে দীর্ঘদিন ধরে রাতে জুয়ার আসর চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি এই চক্র থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে বৃহৎ আকারে জুয়া’র আসরের আয়োজন করেছে। জুয়া’র আসরে এখন এলাকার অধিকাংশ যুবসমাজ সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে। প্রভাবশালী ঐ মহল কুরবানীর ঈদের পরপরই জুয়া’র আসরের পরিসর বৃদ্ধি করতে টিন ও বাঁশ এবং তেরপালের বেড়া দিয়ে দু’টি ঘর তৈরী করেছে। রাতে আলোর সুবিধার্থে ঘরে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। একই সাথে এই ঘরে ফেনসিডিল, কোরেক্স সহ ভারতীয় মাদকের বেচাকেনাও চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আয়োজকদের একজন বলেন, থানা পুলিশকে প্রতি রাতে ওয়ান টেন বোর্ড ও ঝান্ডিমুন্ডা থেকে বড় অংকের টাকা দিতে হয়। এছাড়া স্থানীয়ভাবে নেতৃত্বদানকারীদেরও এক হাজার ও তিন হাজার হারে টাকা প্রদান করা হয়। বহিরাগত কারো উপস্থিতি বিষয়ে খোঁজখবর রাখতে সেখানে বিভিন্ন রাস্তায় ১৫ থেকে ২০ জন লোকের পাহারার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এভাবে প্রতি রাত ১০ টার পর থেকে ফজরের আযানের পূর্ব পর্যন্ত রমরমা জুয়া’র আসর চলে। এছাড়াও উপজেলার শমশেরনগর, মাধবপুর, পতনউষার, আদমপুর, ইসলামপুরসহ বিভিন্ন স্থানে জুয়ার ছোট ছোট আসর বসে বলে অভিযোগ রয়েছে। মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালিব তরফদার বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না।
অভিযোগ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, মুন্সিবাজারে ভূমিগ্রাম ও রামপুর গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে জুয়া’র আসর বিষয়ে তিনিও একটি অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নোমান মিয়াকে ডেকে নিয়ে এধরনের কার্যক্রম বন্ধ করানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরও কার্যক্রম বা ঘর তৈরি করা হলে তা ভেঙ্গে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, জুয়ার আসর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।