সিলেটে পশুর হাটের টাকা লুট : আ. লীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ গত ঈদে নগরীর মাছিমপুর এলাকায় অবৈধ পশুর হাট বসিয়েছিলেন ১৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কালাম আহমদ। ওই হাট থেকে আয়কৃত টাকা ছাত্রলীগ নেতারা লুট করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন কালাম। এনিয়ে নগরীর রাজনৈতিক চলছে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা।
মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম তুষার, সাবেক সহ সভাপতি ময়নুল ইসলামের নেতৃত্বে অস্ত্রের মুখে হাটের তিন লক্ষাধিক টাকা লুট করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ কালামের।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, কালাম চাঁদাবাজ। অবৈধ পশুর হাট বসিয়ে লুটপাটকৃত টাকা জায়েজ করার জন্যই এমন মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়েছে। কালামের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ছাত্রলীগ নেতারা।
জানা যায়, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে নগরীর মেন্দিবাগস্থ নির্বাচন কমিশনের সার্ভার স্টেশনের পাশে গত ২২ সেপ্টেম্বর অবৈধ হাট বসান আওয়ামী লীগ নেতা কালাম আহমদ। ঈদের পূর্ব রাত পর্যন্ত এ হাটে বেছাকেনা চলে। ১৪, ২২ ও ২৪নং ওয়ার্ডের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাও এই অবৈধ হাট বসানোতে কালামের সহযােগী ছিলেন।
কালাম আহমদ অভিযোগ করেন, ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম তুষার, সাবেক সহ সভাপতি ময়নুল ইসলামের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী তার কাছে দুইলাখ টাকা চাদা দাবি করেন।
চাঁদা না দেওয়ায় ২৪ সেপ্টেম্বর হোটেল গার্ডেন ইন থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেতা তার কাছ থেকে তিন লক্ষাধিক টাকা নিয়ে যান বলে অভিযোগ করেন কালাম। টাকা লুট করে আনার ভিডিওচিত্র তার কাছে রয়েছে বলে জানান কালাম।
কালাম বলেন, অর্থের লুটের বিষয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় অনেক নেতার কাছে আমি বিচার প্রার্থী হয়েছি। তাদের মাধ্যমে সামান্য কিছু টাকা ফেরত পেয়েছি। বাকি টাকা ফেরত না পেয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
কালাম আহমদ এই প্রতিনিধিকে বলেন, তারা আমার টাকা লুট করে নিলো। টাকা তো ফেরত পাচ্ছিই না এখন উল্টো আমার বিরুদ্ধে তারা অপপ্রচার শুরু করেছে।
অবৈধ পশুর হাট বসানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারাদেশেই তো অবৈধ হাট বসেছিলো। আমিও একটা বসিয়েছিলাম। টাকা লুটের অভিযাগ অস্বীকার করে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ময়নুল ইসলাম এই প্রতিনিধিকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র রাজনীতি করছি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। রাজনৈতিকভাবে ও সামাজিকভাবে আমাকে হেয় করার জন্যই এমন মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, কালামের অতীত সম্পর্কে আপনারা খোঁজ খবর নেন। আমার পরিবার সম্পর্কেও খোঁজ খবর নেন। এমন অভিযোগ উঠার পর নিজের পরিবারের কাছেই আমি মুখ দেখাতে পারছি না। মঈনুল বলেন, হাট বসানোর আগে কালাম আমার বাসায় এসেছিলেন। আমাকে তার অবৈধ হাটে শরিক হতে বলেছিলেন। আমি রাজী না হওয়ায় এখন টাকা লুটের অভিযোগ তুলছেন।
টাকা লুটের সাথে নিজের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম তুষারও। তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন, এমন মিথ্যে অভিযোগ তোলার জন্য কালামের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তুষার বলেন, আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কোনো কালিমা নেই। অথচ কালাম চাঁদাবাজ ও ধান্দাবাজ টাইপের লোক। নিজের অবৈধ হাট জায়েজ করতেই সে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে।