সিলেটে পরস্ত্রী নিয়ে হোটেলে ফুর্তি : ফেঁসে গেলেন নামধারী সাংবাদিক
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেটে পরস্ত্রী নিয়ে হোটেলে ফুর্তি করতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন এক নামধারী সাংবাদিক। গনপিটুনী দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হলেও রেহাই পান নি তিনি। থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছে এবং পুলিশ -সাংবাদিক তাদের আনন্দ-ফুর্তির সকল তথ্য-প্রমান সংগ্রহ করেছে। পুলিশের গ্রেফতারী এড়াতে আত্মগোপনে চলে গেছে ওই পরকীয়া জুটি । গত ১০সেপ্টেম্বর সিলেট নগরীর দরগাগেইটস্থ আবাসিক হোটেল ময়রুন নেছায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নগরজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত নামধারী সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন অভি (২৮) মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার ইসলাম নগরের মৃত হাসিম-এর পুত্র। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে নগরীর মেন্দিবাগে শশুরের বাসায় বসবাস করছিলেন তিনি। তিনি নিজেকে বেসরকারী চ্যানেল এশিয়া টিভি’র সাংবাদিক বলে প্রচার করে থাকেন। অভিযোগে প্রকাশ, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার রাজনপুরের জাকির হোসেন দীপু পেশাগত কারনে দীর্ঘদিন ধরে স্ব^পরিবারে সিলেট নগরীর সুবহানীঘাটে বসবাস করছেন। বছর দেড়েক আগে তিনি নগরীর ওসমানী মেডিকেল কলেলানীর শাপলা ১০৪-এর আতাউর রহমানের মেয়ে তানিয়া আক্তারকে (২০) সামাজিকভাবে বিয়ে করেন। নাইওরীর কথা বলে কিছুদিন ধরে নিজ পিত্রালয়ে অবস্থান করছিলেন জাকিরের স্ত্রী তানিয়া । স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছুটা মনোমালিন্য থাকায় তানিয়া ফিরছিলেন না স্বামীঘরে। আর এ সুযোগে সাংবাদিক নামধারী জয়নাল নিজের বিয়ে ও দুই সন্তানের তথ্য গোপন রেখে তানিয়াকে বিয়ের প্রলোভন দেখায় ও তার সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে। স্বামী পরিবারের লোকজন তাকে আনতে গেলেও আজ ও কাল যাবে বলে টালবাহানা করে কালক্ষেপন করতে থাকে তানিয়া ও তার পিতৃপরিবার। এরই ফাঁকে গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপরে লম্পট জয়নাল তার পরকীয়া প্রেমিকা তানিয়াকে নিয়ে আনন্দ-ফুর্তি করতে নগরীর দরগাগেইটস্থ আবাসিক হোটেল ময়রুন নেছায় উঠে। নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা দুজন ফটো উঠিয়ে হোটেল রেজিষ্ট্রারে স্বাক্ষর করেন এবং ওই হোটেলের ১০৮নং কক্ষে অবস্থান নিয়ে আনন্দ-ফুর্তিতে মেতে উঠেন। কিন্তু খোদার ঢোল ফেরেশতায় বাজায় বলে কথা আছে। এক পর্যায়ে জয়নাল ও তার পরকীয়া তানিয়া খাবার খাওয়ার জন্য হোটেল থেকে নিচে নামেন। এ সময় এলাকা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম আব্দুজ জহির সুফিয়ানের জানাযায় যাচ্ছিলেন তানিয়ার স্বামী জাকির হোসেন দীপু। জয়নালের সাথে তানিয়াকে দেখে দীপু তাদের আটকাতে চাইলে লোকজন জড়ো হয় এবং তানিয়া দীপুর বৈধ স্ত্রী প্রমানিত হয়। এসময় জনতা জয়নালকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে তারা হোটেল ত্যাগ করে চলে যায়। এসময় স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ও কর্তব্যরত পুলিশ হোটেলে যান। খোজ নিয়ে জানতে পারেন জয়নাল ও তানিয়া পরস্পরে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই হোটেলের ১০৮ নং কক্ষে অবস্থান করছিলেন। হোটেলের ক্যামেরায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তাদের ছবি ও রেজিষ্টার খাতায় নাম স্বাক্ষর এবং জয়নালের মোবাইল নম্বর (০১৭১২-৯০৪২৯১) দেয় তারা। ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে তানিয়া ও তার পিতৃপরিবার জানতে পারে যে জয়নাল প্রতারকে ও লম্পট। সে বিয়ে করেছে এবং স্ত্রীসহ দুই সন্তান নিয়ে সিলেট নগরীর মেন্দিবাগে শশুরের বাসায়ই থাকছে। ঘটনার পর জয়নালের সহযোগীরা বিষয়টির সম্মানজনক আপোস নিষ্পত্তির নামে কালক্ষেপন করতে থাকে। এক পর্যায়ে তা শেষ না হওয়ায় স্বামী জাকির হোসেন দীপু ২১ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানায় জয়নাল ও তানিয়াকে অবিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ করেন প্রাথমিকভাবে তা সাধারন ডায়েরী করা হয় । তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এ এসআই কমর উদ্দিন অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে জানান, তদন্তে প্রাথমিক তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেলে জয়নালকে আসামী ও তানিয়াকে ভিকটিম করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নিয়মিত মামলা নেয়া হবে। এদিকে স্বামী কর্তৃক থানায় অভিযোগ দায়েরের সংবাদ পেয়েই লম্পট জয়নাল ও পরকীয়া তানিয়া আত্মগোপনে চলে গেছে। তখন থেকে জয়নালের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তানিয়ার সাথে মোবইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তার পিতা আতাউর ররহমানের সাথে ফোনে (০১৭৬৪-৯৩০৪০৩) যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে মোটেও অবগত নন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তার মেয়ে তানিয়া কোথায়, সে ব্যাপারেও তিনি তথ্য দিতে অপরগতা প্রকাশ করেন।