সিলেট সম্মিলিত নাট্য পরিষদের ৩১ বছর পূর্তি র্যালী
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সমাজ পরিবর্তনের-মানসিকতা গঠনের একটি আন্দোলনের নাম হচ্ছে নাটক। আর নাটক মানেই জীবনের প্রতিচ্ছবি। এই নাট্য আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে ৩১ বছর আগে, ১৯৮৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সিলেটের নাট্যতীর্থ প্রান্তিক চত্ত্বরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সিলেটের সকল নাট্য সংগঠনের অভিভাবক সংগঠন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট। আজ রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটির ৩১ বছর পূর্ণ হচ্ছে।
গৌরবোজ্জ্বল এ দিনটি উদযাপনের জন্য বিকেল ৪টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বের হয়ে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। নানা রঙে-নানা ঢঙে সজ্জিত শোভাযাত্রাটি সিলেটের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে উপস্থিত হন সিলেটের সকল নাট্য সংগঠনের নাট্যকর্মী, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের কার্যকরী কমিটির সকল নেতৃবৃন্দ, প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সিলেটের সকল সংস্কৃতিককর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা।
মিলনমেলা শেষে বাদ্যযন্ত্র সহকারে লোকজ গানে, নানা রঙে ও অলংকরণে সুসজ্জিত একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারো শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।
মিলনমেলায় বক্তারা বলেন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সকল বৈরিতা কাটিয়ে নাট্য আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সাথে বেগবান করছে নাট্য আন্দোলনকে।
তারা বলেন, নাট্য আন্দোলনই সমাজ পরিবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। অথচ সিলেটে নাট্যকর্মীদের জন্যে কোন স্থায়ী মহড়াকক্ষ নেই। এছাড়াও কোন নাট্যশালা না থাকায় ব্যহত হচ্ছে নাট্যচর্চা।
মিলনমেলায় বক্তারা সিলেটের নাট্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ স্থায়ী মহড়াকক্ষ ও নাট্যশালা নির্মাণের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার নাট্য আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সহ-সভাপতি খোয়াজ রহিম সবুজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত’র সঞ্চালনায় র্যালি পূর্ববর্তী মিলনমেলায় বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ইউনিট কমান্ডার ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদের প্রাক্তন পরিচালক ভবতোষ রায় বর্মন রানা, প্রাক্তন প্রধান পরিচালক ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী ও বর্তমান পরিচালক নিরঞ্জন দে যাদু।
সভাপতির বক্তব্যে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সহ-সভাপতি খোয়াজ রহিম সবুজ, স্থানীয় নাট্যদলগুলোকে নিয়ে নাট্য উৎসব আয়োজন ছাড়াও দুই বাংলার নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজনের চূড়ান্ত সময়সূচি অচিরেই ঘোষণা করা হবে বলে জানান।
মিলনমেলায় উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদের প্রাক্তন পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সহ-সভাপতি মোকাদ্দেস বাবুল, কবি পুলীন রায়, নাট্য পরিষদের প্রাক্তন সদস্য বেলাল আহমেদ, নাট্য পরিষদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শামসুল বাসিত শেরো, আফজাল হোসেন, হীরক দেব, সিলেট জেলা কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাসগুপ্ত, গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু।
এছাড়াও সম্মিলিত নাট্য পরিষদের প্রাক্তন ও বর্তমান সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিরাজ উদ্দিন শিরুল, ধ্রুবজ্যোতি দে, লিটন চৌধুরী, সাইফুর রহমান চৌধুরী সুমন, ইসমাইল হোসেন তাফাদার, রকিবুল হাসান রুমান।
মিলনমেলায় সম্মিলিত নাট্য পরিষদের অন্তর্ভুক্ত সদস্য সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ ও নাট্যকর্মীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন থিয়েটার পজিট্রন, থিয়েটারওয়ালা, মোহনা সাংস্কৃতিক সংগঠন-এমসি কলেজ, থিয়েটার মুরারীচাঁদ, কৃষ্ণচুড়া-সিকৃবি, থিয়েটার উদ্দাম, মেট্রোপলিটন থিয়েটার, দেশ থিয়েটার, নাট্যরঙ্গ সিলেট-সহ সিলেটের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নাট্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা।