শাহজালাল মসজিদ ম্যানচেস্টারে দারুল কিরাতের সমাপনী উপলক্ষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত
ম্যানচেস্টারের শাহজালাল মসজিদ এবং ইসলামিক সেন্টার এর ব্যবস্থাপনায় গত ২০০৭ ইংরেজী থেকে প্রতি বছর সামার হলিডের সময় বিশেষ কুরআন প্রশিক্ষণ (দারুল কিরাত) কোর্স এর ব্যবস্থা করা হয়। দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট বাংলাদেশ এর অনুমোদন ও সিলেবাস অনুসরণে জামাআতে আউয়াল (প্রথম শ্রেণী) থেকে ফাইনাল ক্লাস জামাআতে ছাদিছ পর্যন্ত শিক্ষা প্রদান করা হয়। ৬ সেমিস্টারের এই বিশেষ কিরাত কোর্স সমাপনীর মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী কিরাতের উপর সর্বোচ্চ ‘ক্বারী’ সনদ লাভ করতে পারে।
শাহজালাল মসজিদে এ বছর দারুল কিরাত কোর্সে প্রায় এক শত শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যাদেরকে বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত শিক্ষা প্রদান ও যথাযথ তত্বাবধানের জন্য এগারো জন অভিজ্ঞ শিক্ষক তাঁদের শ্রম, মেধা ও সময় ব্যয় করেছেন। তাঁরা হলেন মসজিদের ইমাম ও খতীব জনাব মাওলানা খায়রুল হুদা খান, সাবেক ইমাম হযরত মাওলানা সৈয়দ ফজলুর রহমান, জনাব মাওলানা ফখরুল হাসান (রুতবাহ), জনাব মাওলানা তাজ উদ্দিন, জনাব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, হাফিজ জামাল হোসাইন, ক্বারী মাহবুবুল ইসলাম লিয়াকত, ক্বারী হাফিজুর রহমান, ক্বারীয়া আরিফা খান, ক্বারী মুহিব্বুল হাসান তালহা এবং ক্বারী নাহিদ আহমদ।
দারুল কিরাত কোর্সের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষে গত ৫ই সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুর ১ ঘটিকায় শাহজালাল মসজিদের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। মসজিদ কমিটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সুরাবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মসজিদের ইমাম মাওলানা খায়রুল হুদা খানের উপস্থাপনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ম্যানচেস্টারস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কাউন্সিলার জনাব ওহিদুর রহমান বিশ্বাস টিপু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দারুল হাদীস লাতিফিয়া নর্থওয়েস্টের প্রিন্সিপাল হযরত মাওলানা সালমান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী।
হাফিজ জামাল হোসাইনের কিরাত পাঠ ও মসজিদের সেক্রেটারী আলহাজ্ব আবদুল মালিক সওদাগরের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সূচিত আলোচনা সভায় কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্টজনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মসজিদের সাবেক ইমাম হযরত হাফিজ মাওলানা সৈয়দ ফজলুর রহমান, দারুল কিরাতের প্রধান শিক্ষক মাওলানা ফখরুল হাসান রুতবাহ, আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা চৌধুরী এমবিই, মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন চৌধুরী, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা মাহবুবুল ইসলাম লিয়াকত, মসজিদের ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সুরুক মিয়া, সোনালী ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজোর আবদুল হামিদ, সৈয়দ আতাউর রহমান পান্নু, আলহাজ্ব মোহাম্মদ লস্কর, আলহাজ্ব হুমায়ুন কবীর, তাবেদার রসূল বকুল, হাফিজ মোহাম্মদ জাকারিয়া প্রমুখ।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন মসজিদের ট্রাস্টি আলহাজ্ব রইছ আলী, জিএমবিএর ভাইস চেয়ারম্যান শায়েকুল ইসলাম, মসজিদের জয়েন্ট সেক্রেটারী সওগাতুল ইমাম চৌধুরী, ট্রেজারার আলহাজ্ব আবু তাহির, সাবেক ট্রেজারার আলহাজ্ব আবদুল হান্নান, নজরুল ইসলাম তালুকদার, আলহাজ্ব আবুল কালাম, আলহাজ্ব আফিজ আলী, আলহাজ্ব শমসের মিয়া, শাহ জমসেদ আলী প্রমুখ।
বক্তাগণ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কুরআন তিলাওয়াত সর্বোত্তম ইবাদত। তিনি আরও ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়। কুরআনে কারীমের বিশুদ্ধ তিলাওতের জন্য কুরআন এবং হাদীসে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেননা কুরআন তিলাওত শুদ্ধ না হলে ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ নামাজও শুদ্ধ হয়না।
বক্তাগণ সহীহ করে কুরআন শিক্ষা দেওয়ার জন্য মসজিদ কর্তৃপক্ষের এ মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং সকলের সহযোগিতা ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলীর তত্ত্বাবধানে আমাদের কমিউনিটির ছেলে-মেয়েরা আমাদেরই শাহজালাল মসজিদ থেকে বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত শিক্ষা গ্রহণ করে ‘ক্বারী’ সনদ অর্জনে সক্ষম হচ্ছে এর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠান শেষে কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে সার্টিফিকেট, ট্রফি ও মেডেল তুলে দেন অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ। পরিশেষে মরহুম উম্মতে মুহাম্মদী মাগফিরাত কামনা ও বাংলাদেশসহ সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ এবং দারুল কিরাতের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়।