সাকির্ট হাউসে সংঘর্ষ : এমপি এহিয়া’র দুই ভাইসহ আসামী ৪৩

‘এমপি এহিয়ার সুনাম ক্ষুন্ন করতে তার ২ ভাইকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে’

Japa Secretary General2সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেট সার্কিট হাউসে জাতীয় পার্টির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সার্কিট হাউজের নাজির মো. ফজলুল হক বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া’র দুই ভাইকে আসামী করা হয়েছে।
আসামীরা হচ্ছেন মোগলাবাজার থানার চর মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে ফয়জুর রহমান (৩০), সিলেট নগরীর সুবিদবাজার নূরানী ১২৮ নং বাসার বাসিন্দা হাসান আহমদের ছেলে মো. মেহেদী (২৩), জকিগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আয়েছ আলীর ছেলে মো. রায়হান (২০), বিয়ানীবাজার উপজেলার ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আজাদ উদ্দিনের ছেলে জায়েদ আহমদ (২৪), গোয়াইনঘাট উপজেলার বিন্নাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালিকের ছেলে নাছির উদ্দিন (২১), মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত মঈন আলীর ছেলে মো. বিল্লাল আহমদ (৩৫), বিয়ানীবাজার উপজেলার জলডুপ কমলাবাড়ির বাসিন্দা রাশেদ আলীর ছেলে জয়নাল হোসেন (৩২), একই উপজেলার নয়াগ্রামের বাসিন্দা মৃত তোফাজ্জল আলীর ছেলে সামছুদ্দিন রানা (৫৫)।
এদেরকে গতরাতেই আটক করা হয়েছিল। বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
বাকি আসামীরা হলেন- নগরীর ঝেরঝেরীপাড়া এভারগ্রীন ২০ নং বাসার বাসিন্দা আব্দুল হাই’র ছেলে সোহলে আল রাজী (২৮) ও সালমান চৌধুরী সাম্মী (২৫), গোয়াইনঘাট উপজেলার মিত্রিমহল গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে হেলাল (৩০), জাবেদ আহমদ চৌধুরী (২৫) ও আশিক (৩৩)। এছাড়াও আরো ২৫ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
সোহেল আল রাজী ও সালমান চৌধুরী সাম্মী এমপি এহিয়ার ছোট ভাই। সংঘর্ষের সময় সিলেট সার্কিট হাউজ ভাঙচুর করে আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে সিলেট সার্কিট হাউসে হামলা ভাঙচুর ও মামলায় এমপি এহিয়ার পরিবারের সদস্যদের জড়ানোর প্রতিবাদে বিশ্বনাথে মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন জাপার নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বিশ্বনাথ উপজেলা জাপার উদ্যোগে এ মিছিল অনুষ্টিত হয়। মিছিলটি বিশ্বনাথ শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করার পর এবং নেতাকর্মীরা সমাবেশে মিলিত হন।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেন, সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলা জাতীয় পার্টির কান্ডারী ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর সুনাম ক্ষুন্ন করতে একটি চক্রান্তকারী মহল তার ২ ভাইকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে। যারা হামলা করে সার্কিট হাউস ভাঙচুর করেছে বিশ্বনাথ উপজেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম লালুকে হামলা চালিয়ে আহত করেছে তাদেরকে মামলায় আসামি না করে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর দুই ভাইসহ কয়েকজন নেতাকে আসামি করা হয়েছে। যারা এ ঘটনার কিছুই জানেননা। তারা কিভাবে মামলার আসামি হলেন।
নেতাকর্মীরা বলেন অবিলম্বে এ বিতর্কিত মামলা প্রত্যার করে এমপি এহিয়া চৌধুরীর ২ ভাইসহ নেতাকর্মীদের মামলা থেকে অব্যাহতি না দিলে বিশ্বনাথ থেকে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
মিছিলে উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবু-বক্কর সিদ্দিক, যুগ্ম-আহবায়ক সিতাব আলী, এ কে এম দুলাল, জয়নাল আবেদীন, আবুল খয়ের মেম্বার, জাতীয় পার্টি নেতা মনোহর আলী, ফিরোজ মিয়া, নাজিমউদ্দিন, নাসিরউদ্দিন, আজাদ মিয়া, শফিক আহমদ পিয়ার, আবদুল বারী, আনোয়ার হোসেন, তাজউদ্দিন, উম্মর আলী প্রদীপ দেব, রইসুল ইসলাম, কাপ্তান মিয়া, আবদুল মিয়া, শরীফ আহমদ, লায়েছ আহমদ, নজমুল হোসেন, আবদুল কাইয়ুম, আবদুল হক, যুবসংহতি নেতা নাসিরউদ্দিন, এনামুল হক, স্বপন রাজ, আনসার আলী, রফিক মিয়া, ফেরদৌস আহমদ, উপজেলা সেচ্ছাসেবক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম- আহবায়ক মীর খোকন, সেচ্ছাসেবক পার্টি নেতা হেলাল আহমদ, শওকত হোসেন, রুহেল আহমদ, উপজেলা ছাত্রসমাজ নেতা অপূর্ব দাশ অপু, লিক্সন আহমদ, মারুফ আহমদ, উপজেলা তরুণ পার্টির আহবায়ক সুহেল তাজ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার রাতে সিলেট সার্কিট হাউজে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ সিদ্দিকী ও যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে গুলাগুলির ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষকালে সার্কিট হাউসে তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফায়েজ আহমদ জানিয়েছেন, আটককৃতদের মধ্য থেকে ৮জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিরা পথচারী হওয়াতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মামলার বাকি আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।