সাংবাদিকের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক, আদালতে নাটকের পর প্রেমিকা সিঁথি কারাগারে
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম মুকুলের পরকীয়া প্রেমিকা মেহেরুন বিনতে ফেরদৌস সিঁথির জামিনে স্বামীর অস্বীকৃতি জানানোর কারণে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার ২ জুলাই ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার দে’র আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন চাইলে বিচারক বলেন, ‘আপনার স্বামী যদি জামিনদার হন, তবে জামিন মঞ্জুর করা হবে।’ এরপর স্বামীকে আনলে তিনি জামিন না চেয়ে উল্টো তাকে কারাগারে পাঠানোর দাবি করেন। এরপর সিঁথিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। সিঁথির স্বামী রাজিউল আমিন বেসরকারি ঢাকা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার।
স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে গাজী টিভির বার্তা সম্পাদক মুকুলকে গ্রেপ্তার করে মিরপুর থানা পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে একদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। বর্তমানে কারাবন্দি মুকুলকে এরইমধ্যে চাকরিচ্যুত করেছে গাজী টিভি।
মামলার পর থেকেই সিঁথি পলাতক ছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার ২ জুলাই সকালের দিকে তিনি পুরান ঢাকার মহানগর হাকিম অমিত কুমার দে’র আদালতে হাজির হন জামিন নিতে। দুপুর ১২টায় জামিন শুনানিতে সিঁথির আইনজীবী গোলাম মোস্তফা খান দাবি করেন, মুকুলের সঙ্গে তার কোনই সম্পর্ক নেই। তার স্বামী রাজিউল আমিনের সঙ্গেই তিনি বসবাস করছেন। মুকুলকে নির্যাতনে প্ররোচনা দেওয়ার সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।
সিঁথির জামিনের বিরোধিতা করেন অ্যাডভোকেট কাজী নজীবউল্লাহ হিরু, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, অ্যাডভোকেট মবিনুল ইসলাম ও সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন জেসি। তাদের পক্ষ থেকে মুকুল ও সিঁথির নিজেদের তোলা অন্তরঙ্গ ‘সেলফি’গুলোর প্রিন্ট কপি আদালতকে দেখানো হয়।
তবে শুনানি শেষে বিচারক শর্ত দিয়ে বলেন, আপনি বলছেন আপনি স্বামীর সঙ্গে থাকেন। ঠিক আছে মেনে নিলাম। এখন যদি আপনি স্বামীকে আদালতে আনতে পারেন, এবং তিনি আপনার জামিনদার হন তবে আপনাকে জামিন দেওয়া হবে।
এরপর সিঁথির পক্ষ থেকে স্বামী রাজিউল আমিন আদালতে উপস্থিত হলে বেলা তিনটায় দুইজনের উপস্থিতিতে শুনানি নেন ঢাকা মহানগর হাকিম অমিত কুমার দে। এসময় রাজিউল স্ত্রীর জামিনদার হতে অস্বীকৃতি জানান।
নিজেদের মধ্যে কথা বলার জন্য দুজনকে কিছুটা সময় দেন বিচারক। কিন্তু রাজিউল রাজি না হওয়ায় বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে সিঁথিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মশিউর রহমান জানান।
মুকুলের স্ত্রী নাজনীন আকতার তন্বী দৈনিক জনকণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। এই দম্পতির এক সন্তান রয়েছে। দুবছর আগে তাদের আরেক সন্তান চন্দ্রমুখী মারা যাওয়ার পর শোকে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন তন্বী।
তন্বীর অভিযোগ, ব্যাংকারের স্ত্রী সিঁথির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর তার উপর নানা নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন মুকুল। প্রথম সন্তান চন্দ্রমুখী অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসার উদ্যোগও মুকুল নেয়নি বলে তার অভিযোগ।
চন্দ্রমুখী মারা যাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য কয়েক মাস হাসপাতালে থাকার সময় মুকুল ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে তন্বীর দাবি।
দুইজনকে চেনেন এমন অনেকেই জানিয়েছেন, মুকুল বনশ্রীর একটি বাসায় সিঁথিকে সঙ্গে নিয়ে লিভ টুগেদারও করতেন।