সংসদ এখন গান-বাজনার আসর : খালেদা
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে সংসদ থেকে ছিটকে পড়া খালেদা জিয়া আইনসভার বর্তমান কার্যক্রমের তীব্র সমালোচনা করেছেন। “আজ জাতীয় সংসদে কোনো আলোচনা হয় না, এটা গান-বাজনার আসর হয়ে গেছে,” বলেছেন তিনি। মঙ্গলবার ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাব মিলনায়তনে জোট শরিক লেবার পার্টির ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্যে একথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। বিএনপিবিহীন দশম সংসদ অকার্যকর হয়ে পড়েছে দাবি করে নবম সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, “সংসদে এখন বিরোধী দল বলে কিছু নেই। এই সংসদে বির্তক করার কোনো এজেন্ডা থাকে না।”
সব দলের অংশ গ্রহণে নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে, যাতে কোনো রকম কারচুপি ও বাধা-বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে খালেদা বলেন, “এই নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে ভালো নির্বাচন আশা করা যায় না। এটা একটা অপদার্থ ও অকার্যকর নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সত্য কথা বলার সাহস রাখেন না।”
‘ষড়যন্ত্র’ করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর পর নানাভাবে তাদের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
“গণতন্ত্রহীন দেশ চলছে। মানুষের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার বলে কিছু নেই। কেউ সত্য কথা বললে, এই সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদ কিংবা সমালোচনা করলে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।”
প্রশাসনে দলীয়করণের অভিযোগ তুলে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “কিছু কিছু আছে যারা এই সরকারের অতিরিক্ত প্রশ্রয় পেয়ে সব কিছু ছাড়িয়ে গেছে। তারা আইনেরও ধার ধারে না, বিচারেরও পরোয়া করে না। তারা বিচারের ঊর্ধ্বে- এমন একটা হাবভাব হয়ে গেছে।”
সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে বিরোধী দল দমনে ব্যবহারের অভিযোগও করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
“বর্তমান সীমান্ত রক্ষী বাহিনী শুধু নিজের দেশের মানুষের ওপর গুলি চালাতে পারে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি তারা এদেশের জনগণের ওপরই ব্যবহার করছে। অথচ দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য কিছুই করা হচ্ছে না।”
বিজিবি সদস্য আব্দুর রাজ্জাককে অপহরণের দিকে ইঙ্গিত করে খালেদা বলেন, “বর্তমান সীমান্ত রক্ষী বাহিনী মিয়ানমারের সঙ্গে পারে না। এখন তাদের ধরে নিয়ে যায়। দেশের সম্মান আর কোথায় রইল? সরকার এই বাহিনীকে শেষ করে দিয়েছে।”
বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সবাইকে সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বানও জানান তিনি।
ইফতার অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে এক টেবিলে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ছাড়াও ছিলেন এলডিপির অলি আহমদ, জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতে ইসলামীর আমীনুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিশের মুহাম্মদ ইসহাক, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মূর্তজা, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, বিজেপির সালাহউদ্দিন মতিন প্রকাশ, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামা ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, কল্যাণ পার্টির এমএম আমিনুর রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, মাহবুবউদ্দিন খোকন, মসিউর রহমান, আসাদুজ্জামান রিপন, নিতাই রায় চৌধুরী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিবুর রহমান হাবিব, তৈমুর আলম খন্দকার, আবেদ রাজা, গফুর ভুঁইয়া, এবিএম আশরাফউদ্দিন নিজান, নিলোফার চৌধুরী মনি, শিরিন সুলতানা, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান।
২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে রিদওয়ান উল্লাহ শাহিদী, খন্দকার লুৎফর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, সাহাদাত হোসেন সেলিম, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, শামীম বিন সাঈদী, ফরিদ উদ্দিন, লোকমান হাকিম, ইমদাদুল হক, ফারুক রহমান, মাহমুদ খান ছিলেন ইফতার অনুষ্ঠানে।
অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক সদরুল আমিন, ড. সুকোমল বড়ুয়া, সাবেক সচিব জাফর আহমেদ চৌধুরী ইফতারে উপস্থিত ছিলেন।