বালাগঞ্জের বুরুঙ্গা গণহত্যা দিবস আজ
শাহ মো. হেলাল, বালাগঞ্জঃ বালাগঞ্জের বুরুঙ্গা গণহত্যা দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ২৬শে মে স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগীতায় পাকবাহিনী শান্তি কার্ড দেওয়ার কথা বলে ডেকে এনে অর্ধশতাধিক নিরীহ মানুষকে গুলি করে এবং আগুনে পোড়িয়ে হত্যা করে গণকবর দেয়। এ ভয়াল স্মৃতি স্মরণ করে এখনও আৎকে ওঠেন শহিদদের স্বজনেরা।
জানাযায়, ১৯৭১ সালের ২৬ মে সকাল ১০টা হঠাৎ পাক-সেনাবাহিনী ৪টি গাড়ী করে বুরুঙ্গায় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পৌঁছালে দেশিও দোসররা চারদিক থেকে তাঁদের মুনিবদেও গিরে ফেলে। তখন স্থানীয় রাজাকার ও পাকবাহিনী শান্তি কমিটি গঠন ও শান্তি কার্ড নেওয়ার আহবান করে। তাদের আহবানে এলাকাবাসী প্রথমে সাড়া না দিলে জীবনের আগাম নিশ্চয়তার অঙ্গিকার করা হয়। আবার অনেককে জোর করে ধরে সবাইকে জড়ো করে বুরুঙ্গায় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। উপস্থিত হিন্দু মুসলিম দু’সম্প্রদায়ের লোকদের দু’লাইনে পৃথক করে নরপিসাসরা দড়িঁ দিয়ে বাঁধতে শুরু করে। প্রাণ ভয়ে কয়েকজন ভয়ে পালাতে থাকেন তখন পাক-খুনি সরদার ফায়ার করার নির্দেশ দেয়। মুহুতেই মাঠিতে লুঠিয়ে পড়লো অগনিত জনতা। আগ্নেয়াস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হলেন, এডভোকেট রাম রঞ্জন ভট্রাচার্য, শিক্ষক সমরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, ছাত্র নিত্য রঞ্জন চক্রবর্তী ও তাঁর পিতা নিকুঞ্জ বিহারী চক্রবর্তীসহ ৭২জন মতানতরে ৭৮জন নিরীহ মানুষ। আর আহত হয়ে বেঁচে যান বুরুঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্রীনিবাস চক্রতর্বী, জিতেন্দ্র কুমার শুকবৈদ্য, কামিনী মালাকার ও গুপেন্দ্র দেব। মৃত্যুর মুখ থেকে পালিয়ে বাঁচতে সমর্থ হন বুরুঙ্গায় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রীতি রঞ্জন চৌধুরী, বেদেন্দ্র চন্দ্র দেব, রামু মালাকারসহ কয়েকজন লোক। তখন হানাদারবাহিনীর মধ্যে মুসলিমদের হত্যা নিয়ে মতপার্থক্য সৃষ্টি হলে মুসলমান বাসিন্দারা রক্ষা পান। তারপর স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগীতায় শুরু হয় নারী নির্যাতন, লুটপাঠ ও অগ্নিসংযোগ। অন্যদিকে রক্তের বন্যা ও নিহতদের স্বজনদের চোখের জলে যেন বাসতে থাকে লাশ আর লাশ। অবশেষে লাশ গুলোর গণকবর দেয়া হলে এখানেই তাঁরা চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন। আর এ ভয়াল স্মৃতির করা স্মরণ করে এখনও শহিদদের স্বজনেরা আৎকে ওঠেন।