ঘাতককে কেড়ে নিলেন আ’লীগ নেতা- ছাতকে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার শশুর ও দেবর আটক
চান মিয়া, ছাতক প্রতিনিধিঃ ছাতকে অপহরণ হত্যা ও গুমের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ১২এপ্রিল মঙ্গলবার উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের বড়কাফন বাদেশ্বরী গ্রাম থেকে সাবিনা বেগম (২৩) নামের এক গৃহবধূর লাশ বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুর পাড় এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে ওই গ্রামের রফিক মিয়ার পুত্র বিলাল আহমদের স্ত্রী। দুই সন্তানের এ জননীর লাশ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শশুর রফিক মিয়া (৫০) ও দেবর কবির মিয়া (২০) কে আটক করেছে পুলিশ। স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী বিলাল আহমদ পালিয়ে যাওয়ার সময় চরমহলা ইউনিয়নের টেটিয়ারচর গ্রামের জনতা তাকে হাতে-নাতে আটক করে জাউয়া তদন্তকেন্দ্রে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে সিরাজ নামের এক আ’লীগ নেতা জনতার হাত থেকে নিহত সাবিনা বেগমের ঘাতক স্বামী বিলাল আহমদকে কেড়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উটেছে। এ ব্যাপারে জাউয়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই কামরুল ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পৌছার আগে সিরাজসহ দু’জন নেতা এসে জনতার হাত থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন বলে তিনি শুনেছেন। জানা যায়, সোমবার রাতের যে কোন সময় সাবিনা বেগম নামের ওই গৃহবধুকে হত্যা করে লাশ বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুর পাড়ে ফেলে দেয়া হয়। সকালে বাড়ির অন্যান্য লোকজনরা পুকুর পাড়ে মহিলার মৃত দেহটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। সকাল ৯টায় জাউয়া তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ এসআই শফিক ও এসআই কামরুল এসে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এদিকে শশুর-শাশুড়ী, জামাতা ও দেবর মিলে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ নিহত সাবিনা বেগমের পিতা-মাতা ও স্বজনদের। সাবিনা একই গ্রামের সামছুদ্দিনের মেয়ে। ২৬এপ্রিল বড়কাফন টুকেরগাঁও গ্রামের পান ব্যবসায়ী আকিক মিয়ার (৩২) লাশ ৫দিন পর ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়। দক্ষিণ বড়কাফন জামে মসজিদ সংলগ্ন ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করে জাউয়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই শফিক। আকিক বড়কাফন টুকেরগাঁও গ্রামের তৈয়ব আলীর পুত্র। জানা গেছে প্রতিদিনের ন্যায় ২১ এপ্রিল সকালে জাউয়াবাজারের তার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গেলে ওইদিন রাতে সে বাড়ি ফেরেনি। সম্ভাব্য সকলস্থানে তার সন্ধান না পেয়ে স্ত্রী সাফিয়া বেগম জাউয়া তদন্ত কেন্দ্রে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ২৪এপ্রিল বিকেলে জাউয়াবাজার নতুন ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে নিখোঁজ ওই ব্যবসায়ীর শার্ট উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার ওইদিন রাতে জাউয়া গ্রামের কবির আহমদ নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। এদিকে ২২মার্চ উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বাতিরকান্দি জামে মসজিদের ইমাম, জামায়াত কর্মী সুয়াইবুর রহমান সুজনসহ ৩জন মিলে ইমন (৬) নামের এক শিশুকে অপহরন করে মুক্তিপন না পেয়ে তাকে নির্মমভাবে খুন করে লাশ গুম করে রাখে। ঘটনার প্রায় ২২দিন পর অপহৃত শিশু ইমনের কঙ্কাল উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ইমন বাতিরকান্দি গ্রামের প্রবাসী জহুর আলীর পুত্র। এ ঘটনায় মূল ঘাতক ইমামসহ ৩জন জেল হাজতে রয়েছেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইমামসহ ঘাতক তিন জনের স্বীকারোক্তিতে বাতিরকান্দি গ্রাম সংলগ্ন হাওরের ৩টি গর্ত থেকে শিশুটির কঙ্কাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ আলোচিত ঘটনাটি ছাতক জুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।