বিজিবি-গ্রামবাসীর সংর্ঘষ, গুলিবিদ্ধ ৩
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ পাটগ্রামে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও গ্রামবাসীদের সংঘর্ষে তিন ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কুচলীবাড়ি ইউনিয়নের সমশেরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষকালে বিজিবি ৩ রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। গুলিবিদ্ধ আহতরা হলেন- সমশেরপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২৬), আফজাল হোসেনের ছেলে রতন (২৩) ও পানবাড়ি এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে সফিকুল ইসলাম (২৫)।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যায় পাটগ্রামের একটি গ্রামে তামাক ক্রয় শেষে তা ভ্যানে করে ললিতারহাট এলাকার নিজ গোডাউনে ফিরছিল ব্যবসায়ী জাহেদুল। এসময় পাটগ্রাম ললিতারহাট আঞ্চলিক সড়কের সমশের নগর এলাকায় পৌর বিজিবির একটি টহল দল তামাক ভ্যান আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসে। পরে ওই এলাকা পরিদর্শনে যায় পাটগ্রাম পৌর বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার মকবুল হোসেন। এসময় বিজিবির কাছে ওই তামা গুলো ভারতে যাচ্ছে না বলে দাবি করে গ্রামের সাধারণ মানুষজন। কিন্তু বিজিবির ওই কর্মকর্তা তা মানতে নারাজ বলে স্থানীয়দের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়।
খবর পেয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রফিকুল হকসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি প্রায় সুরহা করে দেন। কিন্তু হঠাৎ করে বিজিবির এক সদস্য ওই এলাকার ইউপি সদসকে মারধর করলে সংঘর্ষ বাধে। এসময় বিজিবি এলাকাবাসীদের ওপর গুলি চালায় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পরে গুলিবদ্ধ তিন ব্যাক্তিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাটগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও কুচলীবাড়ি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল খালেক বলেন, ‘বিষয়টি সমাধনের পরেও বিজিবি গ্রামবাসীদের ওপর গুলি চালায়’।
একই কথা বলেন কুচলীবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান হামিদুল হক। তিনি জানান, ‘বিজিবি সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর গুলি চালালে তিন জন গুরুতর আহত হয়’। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন তিনি।
পাটগ্রাম উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি বিজিবির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে’।
পাটগ্রাম পৌর বিজিবির কমান্ডার মকবুল হোসেন গুলির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এক রাউন্ড গুলি চালানো হয়। বিষয়টি লালমনিরহাট ১৫ বিজিবির অধিনায়ককে অবগত করা হয়েছে’।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবির অধিনয়ক লে. কর্নেল বজলুর রহমান হায়াতী জানান, বিজিবি আত্মরক্ষার স্বার্থে এক রাউন্ড গুলি চালায়। তবে এসময় এক জন গুলিবদ্ধ হয়েছে ও দুজন আহত হয়েছে।