মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সুজাত চৌধুরীর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সুনামগঞ্জে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী, সুনামগঞ্জ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, দিরাই ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, লেখক ও কলামিষ্ট, প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা জননেতা সুজাত আহমেদ চৌধুরীর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার। ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে আজীবন সংগ্রামী জননেতা সুজাত চৌধুরী মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।
সুজাত আহমেদ চৌধুরী দিরাই উপজেলার তাড়ল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী পরিবারে ১৯৪৭ সালের ৭ জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। পিতা এলাকার বরেণ্য ব্যক্তিত্ব মামদ চৌধুরী ও মাতা আলতাজান চৌধুরীর ৩ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন ২য়। নিজ জন্মভূমি তাড়ল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। দিরাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৬৭ সালে সুনামগঞ্জ কলেজে ভর্তি হন। কলেজে ভর্তির পর তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের পতাকা হাতে তুলে নেন। যোগ দেন ছাত্রদের প্রিয় সংগঠন ছাত্রলীগে। ৬ দফার আন্দোলনে অংশ নেন। এক সময় তিনি সুনামগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন সুনামগঞ্জ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৬৯ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭০ সালে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেন। সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা সফর করেন এবং বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে আসেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হিসেবে অবদান রেখেছেন। জীবন বাজি রেখে ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ সুনামগঞ্জে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। তিনি হলেন সুনামগঞ্জে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী। স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তাঁর একমাত্র আদর্শ। কেবল রাজনীতি নয় শিক্ষায় তিনি অনন্য অবদান রেখে গেছেন। নিজ গ্রাম তাড়ল উচ্চ বিদ্যালয়, দিরাই ডিগ্রী কলেজের তিনি প্রতিষ্ঠাতা। অনেক ঘাত প্রতিঘাত উপেক্ষা করে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দিরাই ডিগ্রী কলেজ। এছাড়াও দিরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান রয়েছে। শিক্ষাবিদই নয় তিনি লেখক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদপত্রে তিনি নিয়মিত লেখালেখি করতেন। তবে তিনি সম-সাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে বেশি লিখতেন । ‘রাজনীতির তিন যুগ’, ‘শতাব্দীর প্রথম যুদ্ধ’, ‘হৃদয়ে বাংলাদেশ’, ‘বিশ্ব ও বিবিধ প্রসঙ্গ’ সহ তার ১১টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। অপ্রকাশিত রয়েছে বেশ কিছু পান্ডুলিপি।
এদিকে জননেতা সুজাত চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিজ গ্রাম তাড়ল ও দিরাইয়ের বাসভবনে পৃথক কর্মসূচী পালন করা হবে। এছাড়াও তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সুনামগঞ্জ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সিলেটের উদ্যোগে গত ১৮ মার্চ সিলেট নগরীতে একটি স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর ভাতিজা ও দৈনিক সিলেটের ডাক-এর সিনিয়র রিপোর্টার সাংবাদিক কাউসার চৌধুরী তার চাচার রূহের মাগফেরাত কামনায় সকলের নিকট দোয়া কামনা করেছেন। বিজ্ঞপ্তি