বাংলাদেশ জাতিসংঘের মডেল সদস্য
মিশনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ উপমহাসচিব
নিউইয়র্ক থেকে এনা: ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় (নিউইয়র্ক সময়) জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপনের সূচনা করেন। এ সময় স্থায়ী মিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন। এ সময় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন এবং বর্তমান সরকারের উদ্যোগে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে দেশের অগ্রযাত্রার ওপর নির্মিত ভিডিও প্রদর্শিত হয়।
বিকেলে স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মোমেন ও সেলিনা মোমেন মিশনে এক অভ্যর্থনার আয়োজন করেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের উপমহাসচিব জেন এলিয়াসন। তিনি কেক কেটে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় উপমহাসচিব জেন এলিয়াসন বলেন, বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন জাতিসংঘের মডেল সদস।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি, কূটনীতিক, জাতিসংঘের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, যুক্তরাষ্ট্র ও নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, মহাজোটের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, মিডিয়া প্রতিনিধি, স্থানীয় বাঙালি কমিউনিটি ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যগণ অভ্যর্থনায় অংশ নেন।
অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসৃত সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয় – এই নীতি অনুসরণ করছে। বাংলাদেশ এখন জাতিসংঘের সক্রিয় সদস্য। সর্বাধিক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। গত ছয় বছর অর্থনীতিতে গড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে সামাজিক খাতগুলোতেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আয়-বৈষম্য হ্রাস পেয়েছে। দারিদ্র্যের হার ১৯৯১ সালের ৫৯ শতাংশ থেকে ২৪ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ২০১৯ সালের মধ্যে দেশ অতিদারিদ্র্যমুক্ত হবে। বাংলাদেশ এখন চাল রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জিত হয়েছে।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন, অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধভাবে সোনার বাংলা গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছে। জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাথে অংশীদারিত্বকে সুদৃঢ় করে এ লক্ষ্য অর্জনে দেশ সফল হবে বলে তিনি দৃঢ় আশা ব্যাক্ত করেন।
এদিকে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়েছে বাংলাদেশ কন্স্যুলেটে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, বাংলাদেশ সোসাইটি, জালালাবাদ এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।