রাজনগরে গৃহবধুর সাথে দেবর ও কবিরাজের কান্ড : কবিরাজ গ্রেফতার
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের ইব্রাহীমপুর গ্রামে শ্বাশুড়ির প্ররোচনায় গৃহবধুকে পাগল সাজিয়ে দেবর ও কবিরাজ শারীরিক নির্যাতন করে। কবিরাজি চিকিৎসার নামে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে গৃহবধু রুহেনা বেগম (২২) বাক প্রতিবন্ধী হয়ে অবচেতনভাবে শয্যাশায়ী। পুলিশ মূল আসামী দেবরকে না পেলেও ভন্ড কবিরাজকে গ্রেফতার করেছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটলে নির্যাতিতা মেয়েকে চিকিৎসা সেবা দিতে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল হয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে অসহায় বাবা ব্যস্ত থাকায় ৬ মার্চ অভিযোগটি রাজনগর থানায় করেন।
রাজনগর থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য নয়াগাঁও-এর অসহায় দরিদ্র ফল বিক্রেতা আব্দুল খালিক মেয়ে রুহেনাকে তিন বছর আগে রাজনগরের টেংরা ইউনিয়নের ইব্রাহীমপুর গ্রামের ছাবির মিয়ার প্রবাসী ছেলে বদরুল মিয়ার সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের তিন মাস পর স্বামী প্রবাসে চলে গেলে শ্বাশুড়ি রায়না বেগম নানাভাবে গৃহবধূ রুহেনার উপর অথ্যাচার শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যে গৃহবধূ রুহেনার একটি কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে। শ্বাশুড়ির প্ররোচনায় দেবর সাইদুল মিয়া ভাবীকে অসুস্থ্য সাজিয়ে বাড়িতে গ্রাম্য কবিরাজ জিতু মিয়াকে ডেকে এনে চিকিৎসার নামে গৃহবধুকে ( রুহেনাকে) পাগল আখ্যায়িত করে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১০ টায় কন্যা শিশুকে শ্বাশুড়ি কেড়ে নিয়ে যায়। পরে একটি ঘরে আটকিয়ে দেবর সাইদুল ও কবিরাজ জিতু মিয়া সারা রাত শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ভোর রাতে হাত পা বেধে অবচেতন অবস্থায় গৃহবধূকে (রুহেনাকে) কমলগঞ্জের শ্রীসূর্য গ্রামে বাবার বাড়ির সামনে ফেলে যায়।
বাবা আব্দুল খালিক পরদিন সকালে মেয়েকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে দুই দিন রাখার পর গৃহবধূর অবস্থার কোন উন্নতি না হলে অবশেষে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার(ওসিসি)-এর অধীনে ভর্তি করা হয়। ওসিসির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা গৃহবধূর প্রাথমিক চিকিৎসায় অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অভিযোগটি মামালা আকারে গ্রহনের জন্য রাজনগর থানাকে অনুরোধ করলে রাজনগর থানার কর্তৃপক্ষ ৬ মার্চ রাতে মামলা গ্রহন করে ৭ মার্চ প্রাথমিক তথ্য বিবরণী(এফআরআই) করেন।
গৃহবধুর বাবা আব্দুল খালিক এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শামছুদ্দোহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,১২ মার্চ ভন্ড কবিরাজ জিতু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। আসামী দেবরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আর নির্যতিতা এখন প্রায় বাক প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে। তার সুস্থ্যতার পর বক্তব্য গ্রহন করে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযোগ সম্পর্কে কথা বলার চেষ্টা করেও দেবর সাইদুল ও শ্বাশুড়ি রায়না বেগমকে পাওয়া যায়নি।