ঝর্ণারপারে শিশু সাঈদের লাশ উদ্ধার, পুলিশ সদস্যসহ আটক ৩

Sayeedসুরমা টাইমস রিপোর্টঃ নগরীর রায়নগর দর্জিবন্দ থেকে অপহৃত ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর কুমারপাড়া ঝর্ণারপার এলাকার একটি বাসা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আবু সাঈদ নগরীর রায়নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র ও ওই এলাকার দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪নং বাসার মতিন মিয়ার ছেলে।
শিশু আবু সাঈদ অপহরণ ও খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন পুলিশ কনস্টেবল এবাদুল, জেলা ওলামালীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রকিব ও র‌্যাবের সোর্স পরিচয়দানকারী গেদা মিয়া। আটকের পর জনরোষ থেকে বাচতে আসামীদেরকে পুলিশের কাপর পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে শিশুটিকে গ্যাসের চুলার আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয় বলে জানা গেছে। শিশুটির মৃতদেহের অধিকাংশ অংশ পুড়ে গেছে।
Sayeed2সিলেট কোতোয়ালী থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, অপহরণের তিনদিন পর শিশু আবু সাঈদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক পুলিশ সদস্যসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার স্কুল থেকে ফেরার পথে আবু সাঈদ অপহরণের শিকার হয়। এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (নং-৫৬১) করা হয়।
পুলিশ ও সাঈদের স্বজনরা জানান, গত বুধবার সকাল ১১ টার থেকে বেলা সাড়ে ৩টার মধ্যে সাঈদ নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। যার নং-৫৬১।
খবর পেয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) ফয়সল মাহমুদসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে মরদেহ উদ্ধার ও আলামত সংগ্রহ অভিযান তত্ত্বাবধায়ন করছেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির ক্রাইমসীন দলের সদস্যরা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হত্যাকান্ডের আলামত সংগ্রহ করেন।
নিহত শিশুর মামা জয়নাল আবেদীন সুরমা টাইমসকে জানান, সাঈদকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে একজন পুলিশ কনস্টেবল, ওলামালীগের এক নেতা ও কুমারপাড়া এলাকার বাসিন্দা পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত গেদা মিয়াসহ তিনজনকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
সাঈদের মামা জয়নাল আবেদীন আরো জানান, সাঈদ নিখোঁজ হওয়ার পর অপহরণকারীরা তাদেরকাছে ফোনকরে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিলে সাঈদকে ছেড়ে দেয়া হবে বলেও অপহরণকারীরা জানায়। তারা এয়ারপোর্ট এলাকার বিভিন্নস্থানের ঠিকানা দেয়। সারাদিন পুলিশ ওইসব স্থানে অভিযান দিলেও অপহরণকারীরা গতকাল পর্যন্ত সাঈদকে ফিরিয়ে দেয়নি। পরে গতকাল রাতে তিনজনকে আটক করার পর সাঈদের লাশ কুমারপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ওসি আসাদুজ্জামান সুরমা টাইমসকে জানান, রায়নগর থেকে শিশুটি ঝেরঝেরিপাড়ার তার নানার বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় গত বুধবার। এরপর থেকে শিশুটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলনা। প্রথম দিকে সে নিখোঁজ হয়েছে ধারণা করলেও পরে পুলিশ ধারণা করে তাকে অপহরণ করা হয়েছে। একাধিক স্থানে অভিযানও দেয়া হয়। সর্বশেষ গতকাল রাতে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানান ওসি।
এসএমপি পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. রহতউল্লাহ জানান, ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে দু-একদিন আগে হত্যা করা হয়েছে। তবে তদন্ত ছাড়া বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।