আলোচনার পরিবেশ তৈরি করুন : খালেদাকে সুরঞ্জিত
এন্টি ট্যারোরিজম আইন বুকসেলফে রাখার জন্য নয়
২০ দলীয় জোটের সহিংসতা দমনে সরকারের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘এন্টি ট্যারোরিজম আইন বুকসেলফে রাখার জন্য নয়।’ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত চলমান রাজনৈতিক বিষয়ে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সুরঞ্জিত বলেন, ‘প্রায় দুই মাস ধরে দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চলছে। এতো বড় সমস্যা প্রশাসনিকভাবে দমন করা যাবে না। স্থিরভাবে করতে হবে। নাশকতা ও সহিংসতা বন্ধে এন্টি ট্যারোরিজম একটি আইন প্রয়নয়ণ করা হয়েছে। এই আইনটি বুকসেলফে রাখার জন্য নয়। যদি এই আইনেই সন্ত্রাস ও সহিংসতা দমন করতে হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এতোদিন কেন স্পষ্ট বক্তব্য দেয়নি? নাশকতা ও সহিংসতা বন্ধ করতে হলে এই আইনেই বিচার ও চার্জশিট দিতে হবে। কোথাও যদি পরিবর্তন করতে হয়, তা কোনো রকম দ্বিধা দ্বন্দ্ব ছাড়াই করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত যখনই যেখানে যারা ধরা পড়েছে তারা হয়, জামায়াত-শিবির না হয় ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মী। এদের মধ্যে কেউ প্রশাসনের হাতে অথবা জনগণের হাতে পেট্রোলবোমাসহ ধরা পড়েছে। কোনো বিচলিত না হয়ে এন্টি ট্যারোরিজম আইনেই তাদের বিচার করতে হবে।’
সুরঞ্জিত বলেন, ‘দেশের চলমান সহিংসতা দমনে শুধু প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। এ জন্য আমরা গণমিছিলের ডাক দিয়েছি।’ এর মাধ্যমেই সারাদেশের জনগণ জেগে উঠবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টারি মানবাধিকরা উপ-কমিটিসহ সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেছেন সন্ত্রাস, নাশকতা বন্ধ করতে হবে। সন্ত্রাস ও নাশকতা দিয়ে নিময়তান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন হয় না।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশে সুবার্তা নিয়ে এসেছেন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই প্রবীন নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতবর্ষের সীমান্ত, তিস্তা ও ছিটমহল চুক্তি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে হলেও মমতা ব্যানার্জির একটা বিরাট ভূমিকা রয়েছে। আমরা তার সহযোগিতা ও সহমর্মিতা কামনা করি। আশা করি তার সহযোগিতা ও সহমর্মিতায় সীমান্ত, তিস্তা ও ছিটমহল চুক্তির সমাধান হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে সুরঞ্জিত বলেন, ‘নির্বাচন চান? কিন্তু আমরা তো নির্বাচনের বিরুদ্ধে নই। সংবিধানে লেখা রয়েছে নির্বাচন কখন হবে। তারপরও আলোচনা চান। তাও হবে। তবে পেট্রোলবোমা মেরে গণতান্ত্রিক দাবি আদায় করা যাবে না। জোর করে কখনো গণতান্ত্রিক দাবি আদায় করা যায় না। সন্ত্রাস, নাশকতা, সহিংসতা ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। তার জন্য অবশ্যই বিরোধী দলকে সকল সহিংস কর্মকাণ্ড বন্ধ করে আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এছাড়াও পেট্রোলবোমায় যেসব মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন ফৌজদারি আইনে তার দায়ভার নিতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি ড. খন্দকার এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন কৃষক লীগের অর্থ সম্পাদক নাজির মিয়া, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ।