সিলেট রাজপথে ছাত্রদল, পাশে নেই বিএনপি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের দেশব্যাপী টানা অবরোধের পাশাপাশি হরতাল চলছে। সিলেট সহ সারাদেশে চলছে গ্রেফ্তার অভিযান। গ্রেফ্তারে আতঙ্কে সিলেট বিএনপির ২/৩ জন নেতা ছাড়া বাকিরা আত্মগোপনে রয়েছেন । কিন্তু পুলিশের রক্তচক্ষু উপক্ষা করে সিলেট শহরে মিছিল সমাবেশ করে যাচ্ছেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। আন্দোলন করতে গিয়ে ইতিপূর্বে দেড় শত থেকে দু শত নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন। কিন্তু যারা কারাগারে বা পুলিশে নির্যাতনে আহত হয়েছেন, তাদেরকে আইনী বা চিকিৎসা সহ আর্থিক ভাবে বিএনপি কোন ধরনের সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তারা আন্দোলনের খোঁজ খবর বা দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন না। তাই নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। নেতাকর্মীরা আন্দোলন করতে গিয়ে কারাগারে গেলে কেউ পরিবারের টাকা খরচ করে জামিনে বের হয়ে আসছেন। আবার কেউ গ্রুপের বড় ভাইদের টাকা দিয়ে জামিন লাভ করছেন। যারা পরিবারের টাকা খরচ করে বের হয়ে আসছেন তারা পুনরায় পরিবারের চাপে মাঠ নামছেন না।
৪২ দিনের হরতাল অবরোধে অনেকে মাঠে আন্দোলন করতে গিয়ে ২ থেকে ৩ বার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাই এখন যারা কারাগারে বা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের অনেকে খরচ চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন। কর্মীরা অভিযোগ করেন অতিতে বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে অনেক বড় বড় পদধারী নেতা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন । কিন্তু এখন দলের এই ক্রান্তিকালে কাউকে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না।
সংগঠন সুত্রে জানা যায়,বিগত বিএনপি নেতৃত্বধীন ৪ দলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালে যারা বড় বড় পদে থেকে দলকে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তাদের মধ্যে বিএনপির সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসিম হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক ফয়সল আহমদ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান, সাবেক সভাপতি এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জিয়াউল গনি আরফিন জিল্লু সহ অনেকে। অথচ তাদের কাউকে এখন মাঠে এক পলক ও দেখা যাচ্ছে না।
তাছাড়া সিলেটের বিএনপি,যুবদল ও ছাত্রদলের বড় একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সহ অনেক দেশে বসাবাস করছেন। কিন্তু তারাও এখন কোন খোঁজ খবর বা সহযোগিতা করছেন না। অথচ অতীতে তারা এক সময় দলের ক্রান্তী কালে সহযোগিতা করেছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ছাত্রদল, যুবদলের তৃনমূল কর্মী জানান, সিলেট বিএনপিতে কোটিপতির নিচে কোন নেতা নেই। অনেক আইনজীবি এবং হাসপাতাল/ক্লিনিকের মালিকও রয়েছেন। তারা টাকার কুমির হলেও তাদের টাকার প্রতি আমাদের কোন লোভ নেই। তবে মাঠে হামলা মামলার শিকার হয়ে জেলে কিংবা হাসপাতালে গেলে তারা যদি চিকিৎসা এবং আইনি সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিতেন তাহলে সিলেটের রাজপতে দেখিয়ে দিতাম সিলেটে জাতীয়তাবাদি শক্তি কতটুকু মজবুত।
তবে নাম প্রকাশে অনুচ্ছিক যুক্তরাজ্যর সাবেক এক ছাত্রনেতার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা যারা যুক্তরাজ্য বসবাস করছি ,সবাই মিলে ইতিপূর্বে দলের যারা কারাগারে রয়েছেন এবং নির্যাতিত হয়েছেন তাদের জন্য বড় অংকের কিছু টাকা সাবেক এক ছাত্র নেতার মাধ্যমে দেশে পাঠিয়েছি’। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা যায় তৃনমুল নেতাকর্মীদের মাঝে এই টাকা পৌছেনি।
এ ব্যাপারে সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি গরিব মানুষ। তারপরও আমি আমার অবস্থান থেকে যতটুকু পারি ততটুকু করতেছি। তবে আমি মনে করি সবার উচিত তাদেরকে সহযোগিতা করা।