অবরোধ চলবে, শনিবার বিক্ষোভ : আরো কঠোর কর্মসূচির হুমকি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ অবরোধের মধ্যেই আসছে শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। শনিবার বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ এক বিবৃতি পাঠিয়ে নতুন এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
এতে বলা হয়, শনিবার দেশের প্রতিটি থানা, উপজেলা, পৌরসভা ও জেলা সদরে এবং সকল মহানগরের প্রতি ওয়ার্ডে ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল’ অনুষ্ঠিত হবে।
এই জোটের যেসব দাবি-দাওয়া রয়েছে তা মেনে না নেয়া হলে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অবরোধের সঙ্গে হরতালসহ আরো কঠোর কর্মসূচিরও হুমকি দেয়া হয়েছে বিবৃতিতে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনসহ বেশ কিছু দাবিতে গত ৬ জানুয়ারি থেকে অবরোধ চালিয়ে আসছে বিএনপি জোট। অবরোধের ফাঁকে ফাঁকে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদের হরতালও। এসব কর্মসূচির মধ্যে চলেছে নাশকতার ঘটনাও। বেড়েছে ‘বন্দুকযুদ্ধও’। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া নাশকতায় এ পর্যন্ত অন্তত ৭০ জন মানুষ মারা গেছেন। নাশকতা দমনে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তা নাশকতা খুব একটা কমাতে পারেনি। অন্যদিকে দু’পক্ষের মধ্যে সংলাপের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন বলেছেন, ‘গতকাল জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ঔদ্ধত্য ভঙ্গিতে ঘোষণা দিয়েছেন যে, প্রয়োজনে বিএনপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা ইতোপূর্বে অনেকবার দিয়েছে। আওয়ামী মন্ত্রী-নেতারা এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা প্রধানমন্ত্রীর সুরে সুর মিলিয়ে আরো ঔদ্ধত্য, অসংযত ও লাগামহীন আচরণে লিপ্ত। এ জাতীয় বাক্যবাণ জোয়ারের লক্ষণ নয়, ক্ষমতার ভাটার টান, গলার জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার নিষ্ফল ব্যাকুলতামাত্র।’
আওয়ামী লীগ প্রতিনিয়ত বিএনপিকে জঙ্গী ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করার বিরামহীন অপচেষ্টা ও অপপ্রচার চালিয়েই যাচ্ছে অভিযোগ করে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে প্রতিদিন সুপরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তদের দিয়ে সহিংসতা ও পেট্রোলবোমার নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে বিরোধী দলের ওপর তার দায় চাপিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভুতি আদায়ের নিষ্ফল প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘গতরাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে রাতের খাবার ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে সরকারী পেটোয়া পুলিশ বাহিনীর লোকেরা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং কার্যালয়ে অবস্থানরত সকলেই এখনও অভুক্ত অবস্থায় আছেন। ভাতে মারার আর পানিতে মারার নীতি অবলম্বন করে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে, টেলিফোন, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট ক্যাবলসহ সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে শেখ হাসিনা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিষ্ঠুর কায়দায় হত্যার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। জলকামান, বালির ট্রাক, মরিচের স্প্রেসহ সকল ঘৃণ্য কায়দায় নির্যাতন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে দেশনেত্রীকে একচুলও সরাতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বর ও হীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আওয়ামী সরকার সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সম্মানকে ভূলুন্ঠিত করছে।’
সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই উল্লেখ করে বিবৃতিতে সরকারের উদ্দেশে বলা হয়,‘সময় থাকতে গণদাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন, অন্যথায় জনতার রোষাণল থেকে কেউ আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না।’
নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা
বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে চলমান হরতাল-অবরোধ চলাকালে পেট্রোলবোমা হামলায় ও বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাতও কামনা করেছেন সালাহ উদ্দিন।