ওসমানী হাসপাতালে মৃত্যুর মিছিল! ২৪ ঘন্টায় ১০ শিশুসহ ৩২ জনের মৃত্যু, চাঞ্চল্য
‘মৃত্যু স্বাভাবিক, সংখ্যা অস্বাভাবিক’ চিকিৎসকদের অবহেলার অভিযোগ ॥ আতঙ্ক ॥ তদন্ত কমিটি গঠন
ছামির মাহমুদ ও ইয়াহইয়া মারুফঃ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক রাতেই পাঁচ নবজাতকসহ ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত ১০ শিশুর মধ্যে ২২ নম্বর ওয়ার্ডেই মারা গেছে নয়টি শিশু। এর মধ্যে একটি তাপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্রেই (ইকোভেটর) চারটি নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। মারা যাওয়া অপর শিশুটি ২১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল। সব মিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৩২ রোগী মারা গেছেন। মারা যাওয়া শিশুদের স্বজনদের অভিযোগ, ‘চিকিৎসকদের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায়’ তাঁদের শিশুরা মারা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বজনদের অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, ‘মৃত্যু স্বাভাবিক, সংখ্যা অস্বাভাবিক। ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ ও অতিরোক্ত রোগীর কারণে এসব শিশুর মৃত্যু হয়েছে, এর জন্য চিকিৎসকরা দায়ী নন।’
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, ১০ শিশুর মৃত্যুর পর গতকাল উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় থাকা অভিভাবকরা তাদের শিশুদের নিয়ে হাসাপতাল ছেড়ে প্রাইভেট ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। গতকাল সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৭১টি শিশুকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছেন স্বজনরা। এঘটনার পর থেকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা শিশুদের স্বজনদের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। ২১ নং ওয়ার্ডের ২৮ টি ও ২২ নং ওয়ার্ড থেকে ৩৩টি ও ২৩ নং ওয়ার্ড থেকে ১০টি শিশুসহ মোট ৭১ জন রোগী হাসপাতাল ছেড়ে যায়।
এসব শিশুর স্বজনদের অভিযোগ নার্স ও চিকিৎসকদের চরম অবহেলা, রোগীর সমস্যার কথা জানালেও শিশুদের দেখতে আসেন না তারা। একারণে অনেক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে চোখের সামনে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে বার বার অস্বাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটবেই। আর আমাদের প্রিয় সন্তানরা চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাবে। তাই ভয়ে এই হাসপাতাল ছেড়ে অন্য প্রাইভেট হাসপাতালে চলে যাচ্ছেন তারা। হাসপাতালে থাকা ঔষধ রোগীদের ঠিকমত দেওয়া হয় না, টাকা দিলে এখানে সব ফ্রি পাওয়া যায় জানান শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা স্বজনরা।
অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর এঘটনা তদন্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছয় সদস্যের একটি ও স্বাস্থ্য মস্ত্রনালয় একজন যুগ্ম-সচিবকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের কমিটিকে তিনদিনের ও মন্ত্রনালয়ের কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আর এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা শিশুদের স্বজনদের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ছয়টার মধ্যে এসব শিশু মারা যায়।
হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, মৃত্যুবরণকারী ১০ শিশুর মধ্যে ৫ জন নবজাতক। এর মধ্যে তিনজনের বয়স ছিল মাত্র একদিন, একজন তিনদিনের আর অপরজন সাতদিনের। বাকি শিশুরা হচ্ছে-সফরাজ তিন বছর, তাজরিয়া সাড়ে তিন বছর, সায়মা দেড় বছর, নাদিরা ছয় মাস এবং মেহেদী আড়াই বছর। তাদের মধ্যে-পোস্ট নাটাল অ্যাটাক (পিএনএ)-এ ৪ জন, নিউনাটাল সেপসিস ১ জন, ব্রঙ্ক নিউমোনিয়ায় ২ জন, ইনটেসটিনাল অবসট্রাকশনে ১ জন, এবং অ্যানিমিয়ায় ২ জন মারা গেছে।
অন্য রোগীদের মধ্যে -স্ট্রোকে ৪ জন, রোড অ্যাক্সিডেন্টে ৪ জন, মিওকার্ডিয়াল ইনফেকশনে ৩ জন, সেপটিসিমিয়ায় ৪ জন, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে একজন, ক্যা-মেটাটেসিস ১ জন, স্পট ডেড ১ জন, এনসেপিলাইটিস-এ একজন, আননোন পয়জনিংয়ে একজন, অ্যাসল্ট একজন, কলপালমোনারি টিবি একজন এবং কিটন বডি ডায়াবেটিসে একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল সরজমিনে হাসপাতালের ওই ২২ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, একটি নবজাতক ইউনিটে প্রায় ৮ থেকে ১০টি তাপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্র (ইকোভেটর) বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। একটি তাপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্রের একটি করে নবজাতক রাখার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। প্রতিটি যন্ত্রে ৩ থেকে চারটি করে নবজাতককে রাখা হয়েছে। এছাড়া এই ইউনিটে সার্বক্ষনিক একজন চিকিৎসক ও নার্স এর নিবির পর্যবেক্ষনে নবজাতকদের রাখার কথা থাকলেও কোনো নার্স ও চিকিৎসককে সেখানে পাওয়া যায়নি। পাশের একটি রোমে বসে ২/৩জন শিক্ষানবীশ চিকিৎসক বসে কেউ গল্প করছে আবার কেউ বা বই পড়ে সময় পাড় করছেন। নবজাতক ইউনিটে সাধারণের প্রবেশ না করার থাকলেও সেখানে শিশুদের স্বজনদেরই জনসমাগম বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
নবজাতক ইউনিটে নিয়ম কেন মানা হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে দায়িত্বরত ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা জানান, ৫৬ শয্যার ওয়ার্ডে বর্তমানে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছে ১৬২টি শিশু। এ অবস্থায় সব নিয়ম মেনে চলা সম্ভব নয়। ২৪ ঘন্টার মধ্যে নবজাতকসহ ১০ শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে ওসমানী হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক প্রভাত রঞ্জন দে বলেন, ‘ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ বেশি রোগি ওয়ার্ডে চিকিৎসকসাধীন। ফলে বাধ্য হয়েই একজনের তাপনিয়ন্ত্রন যন্ত্রে ৪জন নবজাতকে রাখতে হচ্ছে। ফলে একজনের সংক্রমন অন্রজনে দ্রুততার সাথে অন্যজনে সংক্রমিত হয়েও এই শিশুদের মৃত্যু হতে পারে। তিনি বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় শিশুদের জন্য জায়গা কম। এখানে একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা থাকবেই। আর আমরাও সংক্রমনের ঝুঁকিতে থাকবো। তবে আশার কথা হচ্ছে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সরকার একটি শিশু হাসপাতাল করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে শিশু বিভাগের এই সমস্যা থাকবে না।’
এদিকে চিকিৎসকের অবহেলায় ১০শিশুর মৃত্যু হয়েছে এমন খবর টিভি চ্যানেল ও অনলাইন সংবাদ পত্রের মাধ্যমে দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়লে মানুষের মধ্যে এক ধরণের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন হাসপাতালে রোগি নিয়ে আসা অভিভাবকরাও। গতকাল সকাল ১০টায় হাসপাতালে ভিড় জমান সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীরাও। অনাকাঙিখত পরিস্থিতি এড়াতে এমএমপি পুলিশের পক্ষ থেকে হাসপাতাল অভ্যন্তরে ও বাইরে প্রায় এক প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বাড়ানো র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব-৯ এর সদস্যদের টহলও। এক সাথে এতগুলো শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে যান আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা ইউনিসেফের একটি প্রতিনিধিদল। সেখানে তারা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. আবদুস ছবুর মিঞ্রার সাথে বৈঠক করেন। হুলস্তুল শুরু হয় ঢাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েও। একের পর এক ফোনের মাধ্যমে শিশু মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করেন তারা। গতকাল হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকসহ হাসপাতাল এলাকায় অবস্থান কালে এমন পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
মারা যাওয়া শিশুদের স্বজনদের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসা এবং নার্স ও ডাক্তারদের অবহেলার কারণে এঘটনা ঘটেছে। মৃত শিশুদের কয়েকজন স্বজন অভিযোগ করেন, রাত ১০টার পর শিশু ওয়ার্ডে কোন চিকিৎসককে খোঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তারা নার্স, ডাক্তারদের ও ডেকে আনতে পারেননি। ফলে এ কের পর এক শিশু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
মারা যাওয়া এক শিশুর মা নগরীর শেখঘাটের এলাকার সন্ধ্যা রানী জানান- রাত ১০টার পর তার মেয়ে ছটফট শুরু করলে তার বোন ওয়ার্ডে ডাক্তার খোঁজে পাননি। শিশুটিকে দেখে যাওয়ার জন্য নার্সদের পায়ে ধরেন, কিন্তু তাৎক্ষনিক নার্সরা আসেননি। যার ফলে রাতে চিকিৎসক ও নার্স কোন চিকিৎসা সেবা বা ঔষধ না দেয়ায় সকালে আমার বুকের ধন শিশুটি মারা যায়। আমার সন্তানকে যারা অবহেলা করে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই।
মৃত শিশুরা হলো- সিলেটের গোয়াইনঘাটের দেড় বছরের সায়মা, জকিগঞ্জের দশগ্রামের সাতদিনের আকাশ, নগরীর শেখঘাটের নিলুফার নবজাতক মেয়ে, শাহপরানের আসমা ও একই এলাকার সন্ধ্যা রানীর নবজাতক মেয়ে, সুনামগঞ্জ সদরের সাড়ে তিন বছরের তাজরিয়া, আড়াই মাসের মেহেদী, ছাতকের তিন বছরের শিশু সাফরাজ, বিশ্বম্ভরপুরের আটমাসের নাদিরা ও হবিগঞ্জের তিনদিন বয়সের ইয়াসমিন।
এঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, গেল জানুয়ারী মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে এই হাসপাতালে ১৪ জন ও সর্বচ্চো ২৭ জন পর্যন্ত রোগী মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় শিশুসহ ৩২ জন মারা গেছে। কিন্তু শিশুসহ ৩২ জন মারা যাওযায় বিষয়টি অস্বাভাবিক বিবেচনায় তদন্ত করা হবে বলে ও জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. আবদুস ছবুর মিঞা।
এঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার ওসমানী হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ও হাসপাতাল ঘুড়ে দেখা গেছে, ৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে ১৭১৮ জন। শিশু ওয়ার্ডে ৩টি ইউনিটে ৯৭টি শয্যা আছে, কিন্তু ভর্তি আছে ৩২২ শিশু। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত সমস্যায় শিশুদের এখানে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত শিশুদের মধ্যে পাঁচ নবজাতক রয়েছে। গতকাল জন্ম হয়েছিল তাদের। বাকি পাঁচ শিশুর মধ্যে সর্বোচ্চ দু‘বছর বয়সী শিশু রয়েছে। এই পাঁচ শিশুর মধ্যে দুই শিশু গত রোববার থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। অন্য তিন শিশুকে গত সোমবার হাসপাতালে আনা হয়।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা সনামগঞ্জ সদরে কলাইয়া গ্রামের কলছুমা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে গত সোমবার ভর্তি করেছি। অনেক সময় তার অবস্থা খারাপ দেখে নার্স, ডাক্তারদের কাছে গেলে তারা আসেন না। ডাক্তাররা হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এখন যান আমরা আপনাদের চাকর না যখন প্রয়োজন তখন আসব। রোগী মারা গেলে আমাদের কিছু করার নেই। বেশী সমস্যা মনে করলে প্রাইভেট ক্লিনিকে/হাসপাতালে নিয়ে যান। এ অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে আছি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কখন যে কি হয়, অনেকেই চলে যাচ্ছে। আমাদের তো টাকা নাই কই যাব?
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ৪ নম্বর ইউনিটের ১৬ নং বেডে ভর্তি থাকা শিশুর অভিভাবক বলেন, নার্সরা হাসপাতালে থাকা সরকারি ঔষধ রোগীদের ঠিক মত দেন না, টাকা দিলে প্রয়োজনের চেয়ে বেশী ঔষধ দেন নার্সরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ইসমাইল পাটোয়ারীকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি ও স্বাস্থ মন্ত্রনালয় একজন যুগ্নসচিবকে প্রধান করে কেন্দীয় ভাবে আরো একটি তদন্ত কমিটি তিন সদস্যের গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের কমিটিকে তিন দিনের ও মন্ত্রনালয়ের কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ওসমানী হাসপাতালের কমিটিতে মেডিসিন বিভাগের প্রধান ইসমাঈল পাটোয়ারিকে প্রধান করে ওসমানী হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. মনজ্জির আলী ও আবাসিক চিকিৎসক রঞ্জন কুমার রায় ও রয়েছেন। পরে অবশ্য বিকেলে এই তিন সদস্যের তদন্ত দলে আরও তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককের নাম যোগ করে ছয়জনে উন্নিত করা হয়েছে।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুছ ছালাম জানান, ‘১০ শিশুর মধ্যে ৬ জন জন্মই হয়েছে জটিলতায়, ২ জন অপুষ্টিজনিত সংক্রমণে, একজন নিউমেনিয়ায় ও অন্য একজন ঠাণ্ডাজনিত কারণে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। চিকিৎসকের অবহেলা ছিল না দাবি করে তিনি জানান, এ ঘটনা তদন্তে স্থানীয় ভাবে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. ইসমাইল পাটোয়ারীকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি ও কেন্দ্রীয় ভাবে স্বাস্থ মস্ত্রনালয় একজন যুগ্ম-সচিবকে প্রধান করে তিন সদস্যের আরো একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের কমিটিকে তিন দিনের ও মন্ত্রনালয়ের কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটিতে তিনজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ রাখা হয়েছে।
রোগীর স্বজনদের ঔষধ ও নার্স, ডাক্তারদের অবহেলার অভিযোগের প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা এই সব বিষয়গুলো তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে, এবং যারা এই সমস্যার সম্মুখীন হন তারা যেন সাথে সাথে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। আর আগামীতে এই সমস্যা হবে না বলেও আশ্বস্থ করেণ হাসপাতালের এই উপ-পরিচালক।
অন্যদিকে, স্বাস্থ প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ মালিক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হক ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে তাদের উপযুক্ত বিচারের মাধ্যেমে শাস্তি দেওয়ার কথা জানান।